নুহাশ পল্লী

নুহাশ পল্লী ঢাকার অদুরে গাজীপুরে অবস্থিত একটি বাগানবাড়ী। কার্যত: এটি এটি নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। নুহাশ পল্লীতে ঢুকে মাঠ ধরে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই হাতের বাঁ-পাশে শেফালি গাছের ছায়ায় নামাজের ঘর। এর পাশেই তিনটি পুরনো লিচুগাছ নিয়ে একটি ছোট্ট বাগান। লিচু বাগানের উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান। ওই লিচুবাগের ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।

অবস্থান

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হোতাপাড়া বাজার। সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে পিরুজালী গ্রাম। ওই গ্রামেই ১৫ বছর আগে ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে নুহাশ পল্লী তৈরি করেন হুমায়ুন আহমেদ।

নুহাশ পল্লীর ইতিহাসঃ

রাজধানীর অদূরে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে এক দুর্গম এলাকায় প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ নুহাশ পল্লী গড়ে তুলেছেন। সেখানকার নানা স্থাপনা আর অসংখ্য ফলজ, বনজ গাছের পাশাপাশি তিনি বানিয়েছেন ঔষধি গাছের বাগান। সব মিলিয়ে মনের মতো করেই ছেলের নামে রাখা নুহাশ পল্লীকে এক স্বপ্নজগত করে তুলেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তাই আড়াইশ প্রজাতির সবুজ গাছের সেই নন্দন কাননে বারবারই ছুটে গেছেন তিনি। নুহাশ পল্লীতেই হুমায়ূন আহমেদ গড়ে তুলেছেন স্যুটিং স্পট, দিঘি আর তিনটি সুদৃশ্য বাংলো। একটিতে থাকতেন আর বাকি দুটি ছিল তার শৈল্পিক চিন্তাধারার আরেক রূপ। শানবাঁধানো ঘাটের দিঘির দিকে মুখ করে বানানো বাংলোর নাম দিয়েছেন ‘ভূত বিলাস’। দুর্লভসব ঔষধি গাছ নিয়ে যে বাগান তৈরি করা হয়েছে তার পেছনেই রূপকথার মৎস্যকন্যা আর রাক্ষস। আরো রয়েছে পদ্মপুকুর, অর্গানিক ফর্মে ডিজাইন করা অ্যাবড়োথেবড়ো সুইমিং পুল।

নুহাশ পল্লী ও হুমায়ূনঃ

কিংবদন্তী কথাসাহিত্যক হুমায়ুন আহমেদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নুহাশ পল্লী প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকার ধানমণ্ডিতে তার বাসস্থান হলেও তিনি সুযোগ পেলই নুহাশ পল্লীতে চলে আসতেন সময় কাটাতে। কখনো আসতেন সপরিবারে, কখনো আসতেন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে রাতভর আড্ডা দিতে। প্রতি বছর ১লা বৈশাখে নুহাশ পল্লীতে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হতো।

কিভাবে যাবেন:
আকর্ষণীয় নুহাশ পল্লী দেখতে হলে গুলিস্তান থেকে প্রভাতী-বনশ্রী ইত্যাদি বাসে করে গাজীপুরের হোতাপাড়া বাজারে জেতে হবে। সেখান থেকে ছোট টেম্পোতে করে নুহাশ পল্লীতে যাওয়া যায়। এছাড়া নিজস্ব গাড়িতে করেও নুহাশ পল্লীতে যাওয়া যায়।

সাধারণত এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নুহাশ পল্লী দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন খোলা থাকে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত মূলত পিকনিকের জন্য ভাড়া দেয়া হয় এ পল্লী। পিকনিকের জন্য গুনতে হবে ৫০ হাজার টাকা। তবে সরকারি ছুটির দিনে ৬০ হাজার টাকা গুনতে হয়। নুহাশ পল্লীতে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি টিকেট লাগে ২০০ টাকা করে।

  • যোগাযোগের নম্বর: ০১৯১১৯২০৬৬৬
  • ওয়েবসাইটঃ www.vromonbilash.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: