অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাসেম্বলী সদস্য মিসেস জেনিফার রাজকুমার, স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান স্টিভেন রাগা, ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিষ্টার মোহাম্মাদ মেহেদি হাসান, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনস্যুলেটর ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান ও নিউইয়র্ক সিটির মেয়র অফিসের সাউথ এশিয়ান কমিউনিটি লিয়াজোন ফর কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের পরিচালক প্যাট্রিসিয়া রঘুনন্দন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সহ সভাপতি রুম্মান বখর্ত বিরতীজ।
প্যাট্রিসিয়া রঘুনন্দন বলেন, মাইনোরিটি এবং উইমেন উদ্যোক্তাগণের জন্যে সিটি অফিসে অনেক সুযোগ-সুবিধা আর বিপুল বরাদ্দও রয়েছে। তার সদ্ব্যবহার করতে আজকের এ অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম।
ইউএসবিসিসিআই’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ লিটন আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সেতু বন্ধন রচনা করা ও পিছিয়ে পরা বাংলাদেশী নারী সমাজকে ব্যবসায়িক নেতৃত্বে এগিয়ে নিতে ইউএসবিসিসিআই নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলনটি একটি গতিশীল প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে যা, নতুন প্রতিভা, সফল উদ্যোক্তা এবং শিল্পের অভিজ্ঞদের একত্রিত করে। এর লক্ষ্য ইন্টারেক্টিভ প্রশিক্ষণ এবং মূল্যবান তথ্য প্রদান করা, ব্যক্তিদের তাদের কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করা। অংশগ্রহণকারীদের সহকর্মী পেশাদারদের সাথে সংযোগ করার অনন্য সুযোগ রয়েছে, তাদের পেশাদার বৃদ্ধির সাথে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় জড়িত। অর্ধ-দিনের শীর্ষ সম্মেলনটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শদাতা, বন্ধু, ক্লায়েন্ট বা কর্মচারীদের খুঁজে পেতে একটি সম্পর্ক হিসাবে কাজ করে।
লিটন আহমেদ নারী উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তাদের জন্য, আমার বার্তাটি সহজ: তুমি এটা করতে পারবে। নিজের ওপর এবং আপনার ব্যবসার ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। মহিলাদের উৎসাহিত করার জন্য আত্মবিশ্বাস তৈরি করা এবং ব্যবসায়িক দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন। এসএমই খাতের একটা বড় অংশ নারী উদ্যোক্তা। নারী উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের সহায়তায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে ইউএসবিসিসিআই। তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি।
নানা প্রতিকূলতা সত্বেও বহুজাতিক আমেরিকান সমাজে উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাতি অর্জনকারীদের মধ্য থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এস জে ইনোভেশনের কো-ফাউন্ডার সাহেরা চৌধুরী, তানজিয়া চৌধুরী, সহকারি প্রধান, ব্রঙ্কস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি একাডেমি, মিসেস জুন্নাতুল রুমা, অ্যাটর্নি অ্যাট ল, রুমা জুন্নাতুল পিএলএলসি, ডা. সায়েরা হক এমডি, রিতা চৌধুরী, ফ্রেন্সচাইস ডমিনোস পিৎজা’র প্রেসিডেন্ট মিলি ভূঁইয়া, প্রিসিলা নিউইয়র্ক ইনক’র প্রতিষ্ঠাতা ফাতেমা নাজনীন প্রিসিলা প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংস্থাটির পরিচালক শেখ ফরহাদ। তাকে সহযোগীতা করেন ইউএসবিসিসিআই উমেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন রুমা আহমেদ।
বক্তারা আশা প্রকাশ করেন বলেন, আগামীতে বাংলাদেশী-আমেরিকান নারী উদ্যোক্তারা অর্থনৈতিক নেতৃত্বে আরো বেশী ভূমিকা আসবে এবং বাংলাদেশ ও আমেরিকা উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে যারা ব্যবসায়িক ল্যান্ডস্কেপে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এমন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী উদ্যোক্তাকে চলতি বছর ‘নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০২৩’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন: মিসেস ইভানা আক্তার (বিউটি বাই ইভানা), মিসেস রোজা আহমেদ, প্রতিষ্ঠাতা, রোজার ব্রাইডাল মেকওভারের, মিসেস ডা. ফাতেমা রহমান (চেয়ারম্যান, বেঙ্গা ফ্যাশন লিমিটেড), মিসেস তাসনিমা মান্নান সুনিয়া (পরিচালক, সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেস কর্পোরেশন), মিসেস নাজমুন নুর এশা (সিইও, জাট ইউনাইটেড কর্পোরেশন), মিসেস ত্রিনিয়া হাসান (ব্যক্তিগত সঙ্গীত শিল্পী), মিসেস শামীমা হক (সিইও, ফয়রোজ ক্যাফে অ্যান্ড লাউঞ্জ), মিসেস তাসমিয়া এ. চৌধুরী (রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, মেগা হোমস রিয়েলটি ইনকর্পোরেটেড), মিসেস সানজানা আহমেদ, (প্রেসিডেন্ট, বাফেলো টি চ্যাট ইনক), ডা. সায়েরা হক এমডি (হক মেডিকেল অফিস, পিসি), মিসেস জুন্নাতুল নুমা (জুরিস ডক্টর অ্যান্ড অ্যাটর্নি অ্যাট ল, রুমা জুন্নাতুল পিএলএলসি), মিসেস সাদিয়া আফরিন (প্রেসিডেন্ট এবং সিইও, ইরা কনসালটিং সার্ভিসেস ইউএসএ এলএলসি), মিসেস সুলতানা রহমান (রিয়েলটর, প্রস্থান রিয়েলটি প্রাইম), নূরা মেহেদী (চীফ এডিটর, দ্যা চার্জ)।
ইউএসবিসিসিআই উইমেনস এন্টারপ্রেনিউর সামিট এবং অ্যাওয়ার্ডস বিতরণ-২০২৩ এর একটি সুস্পষ্ট মিশন হলো- নারী উদ্যোক্তাদের আরো ভালো করতে এবং তাদের প্রচেষ্টায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে অনুপ্রাণিত করা। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল অ্যাডভোকেসি, ব্যবসায়িক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক সচেতনতা, নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট এবং সদস্যদের সরাসরি পরিষেবা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উদ্দীপিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাত্রার মান উন্নত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আমেরিকান ব্যবসার মধ্যে নেতৃত্ব প্রদান এবং সম্পর্ক জোরদার করা।
সমাপনী বক্তব্যে সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপার্সন এস শেকিল চৌধুরী বলেন, প্রবাসী নারী উদ্যোক্তারাও দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করছেন, দেশীয় পণ্যের সমাহার ঘটিয়ে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন প্রবাসী নারীরা। এজন্য তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।