শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

ধর্ষণ মামলা : বিয়ে না করে আড়াই বছর একসঙ্গে ছিলেন লায়লা-মামুন

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪

প্রিন্স মামুন ও লায়লা সামাজিক মাধ্যম টিকটকের আলোচিত নাম। ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যমে বিনোদনভিত্তিক কন্টেন্ট বানিয়ে বরাবরই আলোচনায় ছিলেন তারা। দুজনের অসম প্রেম নিয়েও আলোচনা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু হঠাৎই ঘটে ছন্দপতন। মদ্যপানে যেতে বাধা দেওয়ায় লায়লাকে মারধরের অভিযোগ উঠে প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে।

২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি প্রিন্স মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে লায়লার বাসায় গিয়ে বসবাস করতে থাকেন। বিয়ে না হলেও ওইদিন থেকে মামুন ও লায়লা থাকতেন একই রুমে। জানা যায়, লায়লাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক গড়েন মামুন। লায়লা বিয়ের বিষয়ে বললে মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বাসা থেকে চলে যান।

মামুন আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিকবার আমার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে।- লায়লা

এ ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে রোববার (৯ জুন) প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন লায়লা। আদালত মামলার এজহার গ্রহণ করে ৩ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারেই উঠে আসে ঘটনার বিস্তারিত।

অভিযোগে লায়লা উল্লেখ করেন, মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার গত তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মত নিজস্ব কোনো বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে আমার বাসায় থাকার অনুমতি দিই।

বিয়ের আগেই এক রুমে থাকতেন লায়লা-মামুন
২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। ওইদিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিকবার আমার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করতো। আমি মামুনকে একাধিকবার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন আমার শয়ন কক্ষে আগের মতো আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীসময়ে আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।

আমি উপায় না পেয়ে মামুনের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার বিষয়ে বললে তারাও আমার কথায় কর্ণপাত না করে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করে।- লায়লা

গত ১৫ মার্চ মামুন আমাকে বিয়ে করবে না মর্মে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আমার বাসা থেকে চলে যায়। এরপর আমি লোকমুখে জানতে পারি মামুন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে। তখন আমি একাধিকবার তার বাসায় গেলে সে আমাকে বিয়ে করবে না মর্মে চরমভাবে অপমান করে এবং তার বাসার দরজা থেকে আমাকে বের করে দেয়। আমি উপায় না পেয়ে মামুনের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনার বিষয়ে বললে তারাও আমার কথায় কর্ণপাত না করে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করে।

এদিকে, লায়লাকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে গত ৩ জুন প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ৪ জুন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে মামুন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।

মদ্যপান করে গভীর রাতে বাসা ফিরতেন প্রিন্স মামুন
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই বায়োজিদ বোস্তামী গত ৩১ জানুয়ারি মামুনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলার বাদী লায়লা আখতার ফরহাদ (২৮) আসামি আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের (২০) হবু স্ত্রী। আসামি হেলাল (২৫) ও জুবায়ের (২৪) প্রিন্স মামুনের বন্ধু।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com