শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন

দেশে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪

নতুন অর্থবছরে দেশের পর্যটন খাতকে আরো সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে রংপুর, চাঁদপুর ও কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওর, নিঝুম দ্বীপ, সুন্দরবনের শরণখোলা ও পাহাড়পুরের সোমপুর মহাবিহারে পর্যটক সুবিধা এবং পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ট্যুরিজম কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা জানান।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি এবং দেশী-বিদেশী পর্যটকের ক্রমবর্ধমান চাহিদার ভিত্তিতে দেশে ইকো-ট্যুরিজম, হেরিটেজ ট্যুরিজম এবং বিজনেস ও মাইস (এমআইসিই) ট্যুরিজম বিকাশের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন,  ইনানী, হিমছড়ি, রামুর বৌদ্ধ বিহারসহ পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে কক্সবাজারে। এরই মধ্যে রেললাইন চালু হয়েছে। ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ২৫টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সুফল মিলছে। এসব প্রকল্প সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি ও পর্যটন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ‘পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি কক্সবাজারকে সিঙ্গাপুর, হংকংসহ দ্বীপভিত্তিক অর্থনৈতিক হাবের আদলে গড়ে তোলার জন্য সরকার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। আধুনিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও রেল সংযোগ, অর্থনৈতিক অঞ্চল, বৈদ্যুতিক হাব নির্মাণের পাশাপাশি কক্সবাজারে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম দ্বীপভিত্তিক পর্যটন পার্ক।

এছাড়া কক্সবাজারে বিমানবন্দর, ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেরিন ড্রাইভ সড়ক, গভীর সমুদ্রবন্দর, সাবরাং পর্যটন পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ ২৫টি মেগা প্রকল্পসহ ৭৭টি বাস্তবায়ন কাজ চলছে।  এসব প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি, যা এক বছরে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত মোট অর্থের দেড় গুণ। এবারের বাজেটে কক্সবাজারকে নিয়ে বরাদ্দ হওয়ায় আরো অনেক কিছু বাস্তবায়ন হবে।’

জানা গেছে, বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে সাবরাং, নাফ ও সোনাদিয়ায় ইকো ট্যুরিজম করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ সমুদ্রনগরীতে প্রতি বছর ৬০-৭০ লাখ পর্যটক বেড়াতে গেলেও বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা কম। তাই এবার বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে টেকনাফের সাবরাং, নাফ ও মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপ সাজানো হচ্ছে। ১৯৬২ সালে যখন কাশিমা বন্দর নির্মাণ শুরু হয় তখন এলাকাটি ছিল ধানখেত। বন্দর নির্মাণের পর এটি ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হয়। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরও এ ধরনের বাণিজ্যের কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে সরকারের নতুন পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মো. রেজাউল ইসলাম মিলন। তিনি বলেন, ‘রংপুর বিভাগে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন সুবিধা বাড়ালে দেশী-বিদেশী পর্যটকের সংখ্যাও বাড়বে। এতে হোটেল ব্যবসা উন্নত হবে। আরো অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। এককথায় স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।’

নর্থ বেঙ্গল ট্রাভেলার্স ক্লাব পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতির সদস্য মেরিনা লাভলী  বলেন, ‘রংপুরের শতরঞ্জি ইতিমধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। যদি রংপুরে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়, তাহলে শতরঞ্জির খ্যাতি আরো ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া বেনারসি পল্লীতে আরো কর্মচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি হাঁড়িভাঙ্গা আমকে ঘিরে ব্যাপক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এখানকার অনেক কর্মী বিশেষ করে নারীরা অল্প টাকায় পরিবার রেখে দেশের দূর-দূরান্তে শ্রম বিক্রি করছেন। তখন তারা এখানেই তাদের কাঙ্ক্ষিত কাজ খুঁজে পাবেন।’

পর্যটন সংগঠক লায়ন মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়ার মিলনস্থল চাঁদপুর। পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে চাঁদপুরে। নদীর পাশঘেঁষে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠলে স্বল্প খরচে অনেক বেশি বিনোদনের সুযোগ পাওয়া যাবে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা যদি এখনে বিনিয়োগ করেন, তাহলে স্থানটি বিশ্বের কাছে নতুনভাবে পরিচিতি পাবে।’

নদী গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী রেজাউল করিম বলেন, ‘চাঁদপুরে আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। আরো কিছু পরীক্ষা করতে হবে।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com