1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
দেশের দর্শনীয় কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র
শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৩৬ অপরাহ্ন
Uncategorized

দেশের দর্শনীয় কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০২১

প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সৌন্দর্য দেখতে প্রয়োজন ভ্রমণের। অপরূপ সৌন্দর্য এই দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রতিবছর ভিড় জমিয়ে থাকেন। প্রাচীন স্থাপনা, সমুদ্র-কত, পাহাড়- পর্বতে, নদীতে নৌকা ভ্রমণ, সবুজের মাঝে জ্যোৎস্নার খেলা, এমনকি মেঘের রাজ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো চোখ জুড়ানো পর্যটন স্থান রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক দেশের শীর্ষ পর্যটনকেন্দ্রগুলো সম্পর্কে-

সুন্দরবন: “ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমিরের রাজত্ব”- এই প্রবাদটি শুনলেই আসবে সুন্দরবনের নাম।বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনও এই সুন্দরবন। সুন্দরবনে বেড়াতে যাওয়ার মৌসুম শুরু হয় অক্টোবরে, যা এপ্রিল পর্যন্ত জমজমাট থাকে। যদিও সারাবছরই সেখানে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সুন্দরবনে ভ্রমণ অন্যকোনো পর্যটনের চেয়ে ভিন্ন ও অনন্য। বনবিভাগের অনুমতিসাপেক্ষে এখানে ভ্রমণে যেতে হয় তাদের আদেশ-নিষেধ মেনে।

কক্সবাজার: নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের নাম কক্সবাজার।অপরূপ সুন্দর বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত এই কক্সবাজার। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পর্যটক এই জায়গাটিতে ঘুরতে আসে। একইসাথে হিমছড়ি, ইনানীর মত সৌন্দর্য তো মন ছুঁয়ে যাবেই।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ: বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অংশে একটি ছোট দ্বীপ সেন্টমার্টিন। গত পাঁচ বছরে দর্শক জনসংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।জাহাজ ভ্রমণ এবং নীল জলরাশির মধ্যে হারিয়ে যেতে মন চাইবে বার বার। নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মধ্যে ঘোরার মতো নিখুঁত জলবায়ু পাবেন।

লালবাগ কেল্লা: লালবাগ দুর্গের নির্মাণ মুঘল সুবেদার সম্রাট আওরঙ্গজেবের ছেলে মোহাম্মদ আজম শাহ ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে শুরু করেছিলেন। এটা ১৭ শতকের মোঘল আমলের জটিল ও অসম্পূর্ণ একটি দুর্গ। যা বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত।এই দুর্গের স্থাপত্য অনেক পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয়।

নীলগিরি: বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের এ পর্যটন কেন্দ্রটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট উঁচ্চতায় অবস্থিত।এখান থেকে মেঘ ছুঁতে পারেন পর্যটকরা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত এ পর্যটন কেন্দ্রটিতে কয়েকটি রিসোর্টও আছে।

ষাট গম্বুজ মসজিদ: ষাট গম্বুজ মসজিদ নামে পরিচিত ষাট গম্বুজ মসজিদ, এটি বৃহত্তম মসজিদ এক এবং সুলতানি আমলে নির্মিত হয়।মসজিদটির নির্মাণ ১৪৪২ সালে শুরু করে এবং এটি ১৪৫৯ সালে সম্পূর্ণ হয়। মসজিদটি সাধারণত নামাজের জন্য ব্যবহার করা হয় এছাড়াও মাদ্রাসা ও সমাবেশ হলের জন্য ব্যবহার করা হয়।

ভাসমান বাজার: দক্ষিণের জেলা শহর ঝালকাঠী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলি গ্রামের কৃত্তিপাশা খালের শতবর্ষের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ভাসমান বাজার। প্রায় সারা বছরই এ হাট বসলেও পেয়ারা ও আমড়ার মৌসুমে প্রায় তিন মাস জমজমাট থাকে।সপ্তাহের প্রতিদিনই বসে ভাসমান এ হাট। ঝালকাঠী থেকে ছোট ছোট খালে ঘুরে এ সব এলাকার মানুষের বিচিত্র জীবনযাত্রাও দেখা যায়।

আলুটিলা: খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মূল শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট আরবারী পাহাড়ে আলুটিলা গুহা অবস্থিত। এই গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল। কোন প্রকার সূর্যের আলো প্রবেশ করে না বলে মশাল নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। সুড়ঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল এবং পাথুরে ও এর তলদেশে একটি ঝর্ণা প্রবহমান। গুহাটির এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হতে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত: পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামে অবস্থিত। এটা পর্যটকদের জন্য বেশ জনপ্রিয় স্পট।বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীর মানুষরা শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে এখানে ঘুরতে যান।

কাপ্তাই লেক: পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে প্রায় ১৭৬০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই লেক রাঙ্গামাটির অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য।কাপ্তাই লেকের ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। এছাড়া কাপ্তাই লেকের অন্যতম আকর্ষণ নৌকা ভ্রমণ।

জাফলং: জাফলং ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত।সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় এই জাফলং অবস্থিত। ঢাকা থেকে স্থানটির দূরত্ব প্রায় ২৯৭ কিলোমিটার আর সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার। জাফলং এ রয়েছে ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতু। এছাড়া পাহাড়ি ঝরনার স্বচ্ছ পানি ও পাথর তো রয়েছেই!

সাজেক ভ্যালি: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮০০ ফুট উচ্চতায় সাজেক ভ্যালিকে বলা হয় ‘রাঙ্গামাটির ছাদ।ভৌগোলিক অবস্থান রাঙামাটিতে হলেও যাতায়াতের সহজ পথ খাগড়াছড়ি হয়ে। সাজেকের আশপাশের গ্রামগুলোতে লুসাই, পাংখোয়া এবং ত্রিপুরা আদিবাসীদের বসবাস। কমলা চাষের জন্য বিখ্যাত সাজেকে কফিও চাষ করা হয়।

শ্রীমঙ্গল: শ্রীমঙ্গলকে চা-এর রাজধানী বলা হয়। দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে শ্রীমঙ্গল অবস্থিত। এর আয়তন ৪২৫.১৫ বর্গকিলোমিটার।শ্রীমঙ্গলে মোট চা বাগানের সংখ্যা ৪০টি। শ্রীমঙ্গলে দর্শনীয় স্থান গুলো হল বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ চা বোর্ড প্রকল্প বাস্তবায়ন ইউনিট, ৪০ টি চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও নির্মাই শিববাড়ী। এছাড়া রাবার বাগান এ ভ্রমণের সুযোগও যোগ করতে পারেন।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত: পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার লতাচাপলি ইউনিয়নে কুয়াকাটা অবস্থিত। এটি দেশের দক্ষিণ-শ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত। এই সৈকতের বিশেষত্ব হচ্ছে পর্যটকরা একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখতে পান। যা বিশে^র আর কোথায় দেখা যায় না। এছাড়া ঝাঁউবন, লাল কাকড়ার  চর, রাখাইন পল্লীও ঘুড়ে দেখতে পারবেন।  ঢাকা থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সড়কপথে দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার। আর বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার।

পানাম নগর: নারায়ণগঞ্জ জেলার, সোনারগাঁতে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর এর নাম পানাম নগর। যা পানাম সিটি নামেও পরিচিত। সোনারগাঁয়ের ২০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই পানাম নগরী। এটা হারানো নগরী হিসাবেও সুপরিচিত।পানাম নগরের আশেপাশে দর্শনীয় স্থান গুলো হল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদি মসজিদ, বড় নগর ও খাস নগর।

শালবন বৌদ্ধ বিহার: শালবন বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার লালমাই-য়নামতি প্রতœস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনাগুলোর একটি এই বৌদ্ধ বিহার । এটি ১২শ প্রতœতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। প্রাচীন সভ্যতার না জানা অনেক তথ্য মিলবে সেখানে।

চন্দ্রনাথ পাহাড়: সীতাকুন্ড বাজার থেকে ৪ কি.মি. পূর্বে চন্দ্রনাথ পাহাড় অবস্থিত।আপনি পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সায় চড়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যেতে পারেন। কিন্তু পায়ে হেঁটে ভ্রমণের মজাই আলাদা, কারণ চন্দ্রনাথ পাহাড় শ্রেণীভূক্ত ছোট পাহাড়গুলো ব্যাসকুন্ড থেকে শুরু হয়েছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাবার পথে হিন্দুদের কিছু ধর্মীয় স্থাপনাও চোখে পড়বে। এখানে কিছু নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষও বসবাস করে, যারা ত্রিপুরা নামে পরিচিত এবং এখানে তাদের কিছু গ্রামও আছে।

পানতুমাই: বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম হচ্ছে ‘পানতুমাই’।নয়নাভিরাম, নান্দনিক, অপূর্ব, হৃদয়স্পর্শী সবগুলো শব্দই এই নামের সঙ্গে লাগালেও এর সৌন্দর্য়েও বিশ্লেষণ শেষ হবে না। দেশেই যে এত চমৎকার একটি গ্রাম আছে তা অনেকেরই অজানা। রূপের শহর, রূপের নগরী বলে অনেক শহরেরই খেতাব আছে । কিন্তু বাংলাদেশের মতো ছোট একটি দেশের ছোট্ট একটি অনিন্দ্য সুন্দর গ্রামের কোনো খেতাব নেই। ছিমছাম, ছবির মতো সুন্দর সিলেটের এই গ্রামটির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বিশাল ‘বড়হিল’ ঝর্ণা।

বিছনাকান্দি: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষা বিছনাকান্দি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।পাথর বিছানো বিস্তীর্ণ প্রান্তরের উপরে বয়ে চলা মেঘালয়ের পাহাড়ী ঝরনাধারা বিছনাকান্দির মূল আকর্ষণ।

সোনারগাঁও: প্রাচীন সুবর্ণগ্রাম থেকেই সোনারগাঁও নামের উদ্ভব।বঙ্গ অঞ্চলে মুসলমানদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হবার পর থেকে ১৬১০ সালে ঢাকা নগরের অভ্যুদয়ের আগ পর্যন্ত সোনারগাঁও ছিল দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গের প্রশাসনিক কেন্দ্র। সোনারগাঁও এলাকার প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শনগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল খাসনগর দীঘি, দুলালপুরের নীলকুঠি, গোয়ালদি শাহী মসজিদ, আমিনপুর মঠ, দামোদরদি মঠ, পানাম নগরের আবাসিক ভবন, বড় সরদার বাড়ি প্রভৃতি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com