শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন

দিনে ১০ হাজার করে অবৈধ প্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রে

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে চলতি সপ্তায় দিনে গড়ে ১০ হাজার করে অবৈধ প্রবেশ ঘটছে। যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। কোভিড প্যানডেমিকের সময়ে আরোপ করা সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর হুরহুর করে ঢুকে পড়ছেন এই অভিবাসন প্রত্যাশীরা। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১১ টা ৫৯ মিনিটে সীমান্তে নেওয়া নীতি ‘টাইটেল ৪২’র সময়সীমা অতিক্রান্ত হয়। তার আগে থেকেই অংসখ্য অভিবাসন প্রত্যাশীর প্রবেশ শুরু হয়। তবে এসব সত্বেও বাইডেন প্রশাসন বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেয় টাইটেল ৪২- সীমান্ত কৌশল তুলে নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে হাজার হাজার মানুষ মেক্সিকোর রিও গ্রান্ডে থেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ব্রাউনসভিলে নয়তো অন্য কোথাও ঢুকে পড়ছে। সীমান্ত দেয়াল থেকে ৮০০ কিলোমিটার বন্ধুর পথ পারি দিয়ে তারা এসে পৌঁছাছে প্রবেশ দ্বারে।

বর্ডার প্যাট্রোল ও প্রসেসিং সেন্টারের কর্মকর্তারা এত মানুষের ঢল সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। অনেককেই তারা আদালতে হাজিরার সময় ও স্থান নির্ধারণ করে দিতে পারছেন না। ফলে কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের নির্দেশনা ছাড়াই মানুষগুলো মিশে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের জনসাধারণে।

এদিকে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে ফ্লোরিডার এটর্নি জেনারেলের আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি কেন্দ্রীয় আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার দিনের পরের দিকে সীমান্তে এই প্রবেশ বন্ধের কথা বলেছেন।

এতে বাইডেন প্রশাসনের ওপর কিছুটা চাপ বেড়েছে। যদিও প্রশাসনের একজন উর্ধতন বারবারই বলছেন তারা এই চাপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এবং তাদের কাছে সীমান্ত কৌশল রয়েছে যা সীমান্তে অবৈধ প্রবেশ কমাবে।

“আগামী দিনগুলোতে আসন্ন এই চ্যালেঞ্জের ব্যাপারে আমাদের কড়া নজর রয়েছে এবং আমরা তা মোকাবেলায় প্রস্তুত,” হোয়াইট হাউসে বৃহস্পতিবার বলছিলেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী আলজান্দ্রো মায়োরকাস।

“গত প্রায় দুই বছর ধরে আমরা এই সময় ও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি, আমাদের পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ চলছে, এবং তাতে ফল পাওয়া যাবে,” বলেন মায়োকাস।

গত তিন বছর ধরে সীমান্তে নিয়োজিত এজেন্টরা প্যানডেমিকের সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া বিশেষ নীতি মেনে আসছিলেন। এতে সীমান্ত পথে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছিলো। টাইটেল ৪২ নামে ওই বিশেষ নীতি এবার বদলে নতুন জরুরি নীতি প্রয়োগ করছে বাইডেন প্রশাসন। এতে সীমান্ত শীথিল করা হচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষ যাতে অ্যাসাইলাম চাওয়া অবৈধপ্রবেশকারীতের ফেরত পাঠাতে পারে এবং অনেকেই যাতে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে ঢোকার জন্য আবেদন করতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

এল পাসোতে হাজার হাজার অভিবাসী দুটি প্রধান গেটে জড়ো হচ্ছেন। ৪০ ও ৪২ নম্বর দেওয়া এই দুই প্রবেশ দ্বারের মধ্যে দুরত্ব ২ মাইল। দুই গেটের ওয়েটিং রুমে হাজার হাজার মানুষ অপেক্ষমান।

“আমাদের একটাই চাওয়া, আমরা সীমান্তের ওপারে যেতে হবে,” বলছিলেন ৪০ নং প্রবেশ দ্বারে অপেক্ষমান একজন। মাসাধিক কাল ধরে কয়েকটি দেশ পারি দিয়ে এই সীমান্তে অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।

তারা দুই ভাই সেখানে রয়েছেন। তাদের গলা বসে গেছে, চোখগুলো রক্তলাল হয়ে উঠেছে। ধুলাময় চারিদিক আর সূর্যের খরতাপে বিপর্যস্ত জীবন তাদের। বলছিলেন, এখানে সবকিছুই খুব ধীরগতিতে চলছে। এজেন্টরা একেকবার গেট খুলে ১০ থেকে ১৫ জন করে ভিতরে নিচ্ছেন এবং তাদের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করছে। কিন্তু যতক্ষণে ১০ জনের কাজ এগুচ্ছে ততক্ষণে এখানে এসে নতুন জড়ো হচ্ছে আরও ১০০ জন।

নতুন নীতির কারণেই এক সপ্তাহ ধরে সীমান্তে প্রবেশ রেকর্ড সংখ্যায় বেড়েছে। এদিকে যেহেতু কাগজপত্র না নিয়েই অনেকে ঢুকে পড়ছেন, তাদের আশঙ্কা শিগগিরই আবার তাদের ফেরত পাঠানো হবে।

তবে গত বুধবার বর্ডার প্যাট্রোল প্রধানের দফতর থেকে জারিকৃত একটি নোটিশে বলা হয়েছে অধিক ভীড় জমে যাওয়া প্রবেশদ্বারগুলোতে “প্যারোল উইথ কন্ডিশন” শর্তে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে এবং নির্দেশ থাকছে ৬০ দিনের মধ্যে তারা তাদের গন্তব্যের নগরীগুলোতে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করবে।

এভাবে গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৮,৭৫০ জনকে ছাড় দিয়েছে বর্ডার প্যাট্রোল। এই সংখ্যা ২০১৯ সালে এই সঙ্কট শুরু হওয়ার আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com