দাতা সংস্থাগুলোর কাছে সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলার তথা ৬৫০ কোটি ডলার চায় বাংলাদেশ। এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
দাতা সংস্থাগুলো হলো—আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল , বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রিজার্ভ বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এই অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদনের সময় বাংলাদেশকে মুদ্রানীতি কঠোর করতে এবং বিনিময় হার নমনীয় রাখতে বলেছিল। আহসান এইচ মনসুর বলছেন, আইএমএফের কাছ থেকে আরও বাড়তি ৩ বিলিয়ন ডলারের জন্য সংস্থাটির সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এ ছাড়া, বিশ্ব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির কাছে ১ বিলিয়ন ডলার করে মোট ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চাইছে বাংলাদেশ। আগস্টের শুরুর দিকে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট এবং কারফিউও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ওপর চাপ ফেলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত পরিচ্ছন্ন করা তাঁর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় পরিকল্পিত ডাকাতি হয়েছে, যা ব্যাংকগুলোর বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। সেই সঙ্গে শেয়ারবাজার ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে জড়িত কিছু গোষ্ঠীর ঋণখেলাপির কারণে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলো থেকে হঠাৎ মানুষের টাকা তুলে নেওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, এই খেলাপি ঋণ’গুলো আসলে রীতিমতো ব্যাংক ডাকাতি। তারা টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুর, দুবাই, লন্ডনসহ আরও কিছু জায়গায় পাচার করেছে। তাই আমাদের প্রথম প্রচেষ্টা হবে, বিষয়টি নিয়ে কাজ করা এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করা। এটি করার পাশাপাশি আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে হবে।