স্পাইসি হার্ব স্যুপ, বেসিল-স্টার ফ্রায়েড মিট, ডেজার্ট, কুকিজ এবং নানা ধরনের শরবত- লাঞ্চ বা ডিনার হিসেবে খারাপ অপশন নয়। আর কিছুদিন পর থাইল্যান্ডে গেলে এই খাবারগুলি খেয়ে আপনার তাক লেগে যেতে পারে। তবে স্বাদের জন্য নয়, তাক লাগতে পারে রান্নার উপকরণের নাম শুনলে। সুস্বাদু এই খাবারগুলি তৈরি হবে গাঁজা দিয়ে। না, ছাপার ভুল নয়। ঠিকই পড়েছেন। চলতি ভাষায় একে গাঁজা (marijuana)বলে। সাধু ভাষায় বলে গঞ্জিকা। ভোলেবাবার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রসাদ এটি। আর এই গাঁজা মেশানো খাবারের টানেই নাকি থাইল্যান্ডের পর্যটনের সংখ্যা হবে আকাশছোঁয়া। বিশ্বাস সেদেশের সরকারের।
তাই সরকারি উদ্যোগে সেখানে শুরু হতে চলেছে গাঁজার তৈরি খাবারের প্রশিক্ষণকেন্দ্র। অবশ্য শুধু খাবারই নয়, সেখানে গেলে মিলবে গাঁজার দিয়ে তৈরি ভেষজ প্রসাধন সামগ্রীও। সম্প্রতি একথা ঘোষণা করেছে দক্ষিণ এশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন দেশের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা মন্ত্রক।
পর্যটনে গাঁজার আসন্ন সাফল্য নিয়ে প্রায় একশো শতাংশ নিশ্চিত থাইল্যান্ড সরকার। তবে এই গাঁজাকে যদি “এক টানেতে যেমন তেমন” ভেবে বসেন তাহলে কিন্তু মশায় ভুল করবেন। এগুলি আসলে মেডিক্যাল মারিজুয়ানা (marijuana)। ২০১৯ সালে এই মেডিক্যাল মারিজুয়ানা বা ঔষধি গাঁজাকে আইনি অনুমোদন দিয়েছে থাইল্যান্ড সরকার। তারপরেই বস্ত্র, ভেষজ প্রসাধনী এবং খাদ্যসামগ্রী তৈরিতে এর ব্যবহার নিয়ে সেদেশে শুরু হয় তোরজোর। এশিয়া মহাদেশে এমন নজির থাইল্যান্ডেই প্রথম। সেসময় সরকারের আশা ছিল যে, ঔষধি গাঁজার তৈরি খাবার এবং প্রসাধনীর টানেই সেদেশে পর্যটকরা ভিড় জমাবেন। কিন্তু বাধ সাধল কোভিড ১৯।
তবে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে গাঁজার টোপ দেওয়াটা কি আদৌ ঠিক ? এই প্রশ্নটা যাঁদের মনে উঠছে তাঁদের উদ্দেশ্যে বলার, যে দেশে পর্যটক টানতে যৌন ব্যবসাকে সরকারি অনুমোদন দেওয়া হয় সেদেশে তো গাঁজা একেবারে তুচ্ছ জিনিস। নিজেদের পর্যটন ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থান ও স্মৃতি, অ্যাডভেঞ্চার, স্থানীয় শিল্প-সংস্কৃতির মতো গতানুগতিক পথের ধারধারে না দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনক্ষেত্র থাইল্যান্ড। যৌন ব্যবসার মতো সেখানে মাদক সেবনও করা যায় খোলাখুলি। খোলা আকাশের নীচে ভাড়া করা ‘সাময়িক সঙ্গী’কে সঙ্গে নিয়ে সুরা পানের স্বর্গরাজ্যে এই দেশ।
কম খরচে বিদেশ ভ্রমণের অপশন হিসেবে এমনিতেই থাইল্যান্ডের জুড়ি মেলা ভার। তার উপর রক ক্লাইম্বিং, প্যারাগ্লাইডিং, আন্ডার ওয়াটার ডাইভিং, রেক ডাইভিং-এর আদর্শ স্থান এটি। যৌনব্যবসা আইনসিদ্ধ হওয়ায় ইচ্ছে করলেই এখানে সস্তায় সঙ্গী ভাড়াও পাওয়া যায়। দেশের রাজধানী ব্যাংককেই যৌনকর্মীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। গোটা দেশে তাঁদের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। আর এর টানেই যে সারা বছর ধরে এখানে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে তা বলাবাহুল্য।