শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ন

থাইল্যান্ডে রমরমা মেডিকেল ট্যুরিজম, নজরে বাংলাদেশও

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪

মেডিকেল ট্যুরিজম বা চিকিৎসা পর্যটনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বড় নাম থাইল্যান্ড। দেশটি আশা করছে, বিশ্বব্যাপী যেহেতু মেডিকেল ট্যুরিজম বাড়ছে, তাই এই খাত থেকে থাইল্যান্ডেরও লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে। দেশটির বিখ্যাত বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে থাই মেডিকেল ট্যুরিজমের প্রবৃদ্ধি হবে অন্তত ৪৩ শতাংশ। ফলে থাই মেডিকেল ট্যুরিজম খাতের আর্থিক আকার দাঁড়াবে ১৬ বিলিয়ন ডলার।

বামরুনগ্রাদ ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালের সহপ্রধান নির্বাহী ডা. নিপাত কুলাবকাও বলেন, অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা পর্যটনের বাজার বার্ষিক ২০ শতাংশ হারে বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে ২০৩২ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এই খাতের আকার দাঁড়াবে ২৮৪ বিলিয়ন ডলার।

থাইল্যান্ডের স্টক এক্সচেঞ্জ আয়োজিত ‘থাইল্যান্ড ফোকাস-২০২৪’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ডা. নিপাত বলেন, ‘করোনা মহামারির পর থেকে থাইল্যান্ডে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রোগী আসা কমে গেছে।’ তিনি বলেন, চিকিৎসা পর্যটনে থাইল্যান্ডের সুবিধার মধ্যে বিশ্বমানের নিরাপত্তা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অন্যতম। কারণ, ৬২টি থাই হাসপাতাল যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট কমিশন ইন্টারন্যাশনাল দ্বারা প্রত্যয়িত।

বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের এই চিকিৎসক আরও বলেন, এ ছাড়া থাইল্যান্ডে চিকিৎসার পাশাপাশি পর্যটনের জন্য পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক পর্যটন স্পট আছে। এর বাইরে, স্বল্প খরচে সব সেবা পাওয়া, কম খরচে উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তি এবং রোগীর যত্নের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করা হয় এখানে। রোগীদের মধ্যে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা তৈরিতে থাই আতিথেয়তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ডা. নিপাত উল্লেখ করেন, থাইল্যান্ডে চিকিৎসার দর্শন হলো, আগে প্রতিরোধ করা। অর্থাৎ রোগ যেন শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে, তার আগেই সেটি শনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ডাক্তারদের নির্ভুলভাবে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে সাহায্য করে, যা রোগীদের উপকৃত করে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়—উভয়ের অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে একটি ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ডা. নিপাত আরও বলেন, বামরুনগ্রাদ হাসপাতাল ক্যানসার, মস্তিষ্ক বা হৃৎপিণ্ডের সার্জারির মতো গুরুতর অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে ভ্রমণকারী রোগীদের সেবা দিতে বেশি আগ্রহী।

থাইল্যান্ডে বিদেশি যত রোগী যায়, তার অর্ধেক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর। বাকিরা আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। এর বাইরে ইথিওপিয়া ও কেনিয়া থেকেও বেশ কিছু রোগী প্রতিবছর থাইল্যান্ডে আসে। ডা. নিপাত বলেন, বামরুনগ্রাদ মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ ও চীন থেকে থাইল্যান্ডে যাওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন। কারণ, এসব দেশ থেকে থাইল্যান্ড খুবই কাছে।

ডা. নিপাত বলেন, ‘থাইল্যান্ডের চিকিৎসা পর্যটন ও স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত পরিষেবা উভয়ই শীর্ষস্থানীয়। চিকিৎসা খাত থাইল্যান্ডের আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। থাই আতিথেয়তার ঐতিহ্য কাজে লাগিয়ে সরকারের সহযোগিতা ও সহায়তায় শিল্পটিকে আরও বিকশিত করার যথেষ্ট সুযোগ আছে।’

থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষের ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের ডেপুটি গভর্নর সিরিপাকর্ন চেওসামুত বলেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে চিকিৎসা পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বাজার, বিশেষ করে সৌদি আরবের পর্যটকেরা জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর মধ্যপ্রাচ্য থেকে থাইল্যান্ডে ফ্লাইট বেড়েছে এবং আগামী বছরও তা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ১২টি এয়ারলাইনসের মোট ২ শতাধিক ফ্লাইট থাইল্যান্ডে অবতরণ করে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com