ড্রামের ওপর নির্মিত ভাসমান সেতু এখন বিনোদন স্পট

মধুমতি নদীর বাঁওড়ের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু বছরের পর বছর চলে গেলেও সে দাবি পূরণ হয়নি। ফলে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষ নিজেদের অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের সেই সেতু।

প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর সেতুটি উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়ন ছাড়াও আশপাশের ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের ভোগান্তি দূর করেছে। শুধু তাই নয়, ভাসমান সে সেতুটি দেখতে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, যশোর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ জেলা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার শত-শত মানুষ এসে ভিড় জমায় সেতু দেখতে।

পৌনে ৯ হাজার ফুট লম্বা ও ১২ ফুট চওড়া সেতুটি গ্রামের মানুষ নিজ উদ্যোগে তৈরি করেছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।

jagonews24

এলাকাবাসী জানায়, এখানে পারাপারের জন্য মাত্র একটি খেয়া নৌকা ছিল। এ ঘাট পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন হাজার-হাজার মানুষ। এতে তাদের অর্থ ও সময় নষ্ট হতো। এ ভাসমান সেতু নির্মাণ হওয়ায় আমাদের আর অপেক্ষা করতে হয় না, সময় নষ্ট হয় না।

তিনি আরও জানান, এ সেতু নির্মাণে ২৫০ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৮৫২টি প্লাস্টিকের ড্রাম ও ৬০ স্টিল পাত ব্যবহার করা হয়েছে। এটি নির্মাণ করছেন যশোরের বিশ্বাস ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। এ সেতুর ওপর দিয়ে চার টন ক্ষমতাসম্পন্ন ছোট আকারের যান চলাচল করতে পারে।

jagonews24

ইমাম হাসান শিপন আরও জানান, এ সেতুর নকশা করেছেন টিটা এলাকার বাসিন্দা মুকুল খান। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। সেতুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল- এ সেতুর মাঝামাঝি ১২ ফুট চওড়া ও ছয় ফুট উঁচু রাখা হয়েছে। যাতে করে সেতুর নিচ দিয়ে বাঁওড়ে যেতে নৌকা চলাচলে কোনো অসুবিধা না হয়। ওই এলাকায় ভাসমান সেতু নির্মাণে খুশি এলাকাবাসী, তাদের আর খেয়া নৌকার জন্য সময় নষ্ট হয় না।

আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, এলাকাবাসীর ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি ভাসমান সেতুটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সেতুটি ঘিরে আশপাশে গড়ে উঠেছে দোকান-পাঠ, ভাসমান ফুড কর্ণারসহ নানা ধরনের খাবারের দোকান।

আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. সাইফুর রহমান সাইফার বলেন, সেতুটি আমাদের আলফাডাঙ্গা উপজেলাকে ভিন্নভাবে পরিচিতি এনে দিয়েছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এ সেতু দেখতে আসেন। এটি একটি বিনোদনের স্পট হিসেবে পরিণত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: