শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন
Uncategorized

ডেসটিনি হলমার্ক যুবকের সম্পদ চলে গেছে অন্যদের দখলে

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২১

ডেসটিনি, হলমার্ক, ইউনিপে, যুবক ইস্যুর সমাধান হওয়ার আগেই সামনে এসেছে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, কিউকমের প্রতারণার মতো ইস্যু। দেশের আর্থিক খাতের জালিয়াতি-প্রতারণা থামছেই না। উপরন্তু সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাতেও শুরু হয়েছে জালিয়াতি আর প্রতারণা। জনসাধারণকে লোভের ফাঁদে ফেলে লুটে নিচ্ছে শত শত কোটি টাকা। আবার এই জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে জেলও খাটছেন এসব কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা। কেউ কেউ আবার পলাতকও রয়েছেন। এরমধ্যে তাদের কোম্পানির মালিকানায় থাকা হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবশালীরা তা দখল করে নিচ্ছেন। কোথাও কোথাও গোপনে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব কোম্পানির সম্পত্তি। নিয়ন্ত্রক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ঢিলেঢালা মনিটরিংয়ের কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া এবং আইনি জটিলতার কারণে এসব জালিয়াতি ও প্রতারণার সুরাহা হয় না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা বলছেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাব, প্রভাবশালী মালিকপক্ষ এবং আইনি জটিলতার কারণে এসব সমস্যার সমাধান হয় না বছরের পর বছর। অথচ গ্রাহকরা সবকিছু হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার আন্তরিক হলে এ সমস্যার সমাধান করা যেত আরও আগে। কেননা গ্রাহকদের পাওনার চেয়ে যুবকের সম্পদের পরিমাণ বেশি। আবার যুবকের কর্তাব্যক্তিরাও অধিক প্রভাবশালী। এ জন্য কেউই ধরা পড়েনি। গত জুনে সাতজনকে আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবুও কেউ ধরা পড়েনি। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি ঝুলে থাকায় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পলাতক কর্তারা কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছেন। অথচ এসব সম্পদ ক্রয়-বিক্রয় বা হাতবদলের বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডেসটিনি ও যুবকের বিষয়গুলো এখন বিচারাধীন। আর হলমার্কের বিষয়ও সোনালী ব্যাংকের ইস্যু। এটি নিয়েও মামলা চলছে। সম্ভাব্য দায়ীরা জেলে আছেন। তবে এসব ইস্যুর সমাধান হওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার বলে তিনি মনে করেন। তার মতে, এখানে সবার আগে সরকারের সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন এবং আইনি জটিলতাগুলো দূর করা জরুরি।

ডেসটিনি : জানা গেছে, অর্থপাচার ও জনসাধারণের অর্থ আত্মসাতের মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে আছেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার পর বেশির ভাগ সম্পত্তির দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা পুলিশ বিভাগকে। গত এক দশকে এর কোনো সমাধান হয়নি। গ্রাহকরা কোনো অর্থ ফেরত পাননি। আবার মামলাগুলোরও কোনো সুরাহা হয়নি। তবে এরই মধ্যে ডেসটিনির মালিকানায় দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদ বেহাত হয়েছে। এক যুগ আগে বন্ধ হওয়া ডেসটিনি গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বেহাত হতে চলেছে। এরমধ্যে ডেসটিনির ঢাকাসহ সাতটি বিভাগীয় শহরে অব্যবহৃত থাকা জমি, গাড়ি, ফ্ল্যাটগুলোর বেশির ভাগই পুলিশের হেফাজতে। যা মূলত তারাই ভোগদখল করছেন। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে থাকা আনন্দ সিনেমা হলটিও তাদের হেফজতে রয়েছে। আবার অনেক বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, সম্পদ প্রভাবশালী মহলের দখলেও চলে গেছে। এ ছাড়া চার তারকা হোটেল, কোল্ডস্টোরেজ, পাটকল ও ফুড ইন্ডাস্ট্রি অবহেলায় পড়ে আছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এসব সম্পদের বাইরে জব্দ থাকা ডেসটিনি গ্রুপের ৫৩৩ ব্যাংক হিসাবে পড়ে আছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। কক্সবাজারসহ দেশের পার্বত্য অঞ্চলে ডেসটিনির ট্রি প্লান্টেশন প্রকল্পের সম্পদও বেহাত হতে চলেছে। তবে ডেসটিনির দ্বিতীয় সারির কর্তাব্যক্তিদের দখলেও রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ। এরমধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে থাকায় ডেসটিনির বিভিন্ন জমি ও প্লট গ্রুপটির দ্বিতীয় সারির কর্তাদের দখলে রয়েছে। এসব সম্পদে মূলত সাধারণ গ্রাহকদের বিনিয়োগ রয়েছে। অথচ সাধারণ গ্রাহকরা বছরের পর বছর ঘুরছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আইনের দ্বারে দ্বারে। প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালে দুদকের করা মামলায় ঘুরপাক খাচ্ছে ডেসটিনির কার্যক্রম। এ অবস্থায় প্রায় ৪৫ লাখ বিনিয়োগকারীর ভাগ্যে কী ঘটবে, তা এখন অনিশ্চিত। ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসটিনির ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে দুদক। ২০১৪ সালের ৪ মে মাসে দাখিল করা অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় ৫১ জনকে। ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ৯৬ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। সেই মামলা এখনো আদালতে বিচারাধীন। ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা রয়েছেন জামিনে।

জানা গেছে, ডেসটিনি গ্রুপের ৩৪টি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত মূলধন ৪ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। ২০০০ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরুর পর ২০১২ সালের মে পর্যন্ত ডেসটিনি-২০০০, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি (ডিএমসিএসএল) ও ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনের (ডিটিপিএল) আয় ৫ হাজার ১২১ কোটি টাকা। এই অর্থ থেকে কমিশন ব্যয় ১ হাজার ৪৫৬ কোটি, ট্যাক্স ও ভ্যাট পরিশোধ খাতে ৪১০ কোটি টাকা, পণ্য ক্রয়ে ৪২৫ কোটি টাকা, লভ্যাংশ ও সুদ পরিশোধে ২৬৪ কোটি, ২০০ অফিসের প্রশাসনিক ব্যয় ৪৩৭ কোটি, বৃক্ষরোপণে বিনিয়োগ ২২৩ কোটি, সম্পদ ক্রয় ও বিনিয়োগ খাতে ১৮৯০ কোটিসহ ব্যয় হয়েছে ৫১০৫ কোটি টাকা। ডেসটিনি গ্রুপের এই তিনটি কোম্পানির জমির পরিমাণ ৯৬৮ একর, ঢাকা শহরে অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে ৭৪ হাজার ৫৮ বর্গফুট। এ ছাড়া বাণিজ্যিক অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে ২৪ হাজার ৫৪৭ বর্গফুট। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডেসটিনি গ্রুপের মোট সম্পদের বর্তমান মূল্য ৯ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ডেসটিনির ৫৮টি ফ্ল্যাটের মধ্যে অন্তত ৩০টিই বেদখল। ডেসটিনির নামে ঢাকায় যেসব সম্পদ রয়েছে তার রিসিভার হিসেবে কাজ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এর বাইরে জেলা পর্যায়ের সম্পদগুলোও আংশিকভাবে দেখাশোনা করছেন জেলা পুলিশ সুপার। ঢাকাসহ অন্যান্য জায়গার তিনটি সিনেমা হল, অর্ধশতাধিক ফ্ল্যাট ও অর্ধশত গাড়ির মালিকানা এখন পুলিশের। তবে ডিএমপি বলছে, তারা শুধু রিসিভার। ফ্ল্যাটের ভাড়া ও সিনেমা হলের আয় সবই জমা হচ্ছে ব্যাংক হিসাবে। ঢাকার বাইরে অন্তত দেশের ২২টি জেলায় ডেসটিনির বিভিন্ন ধরনের সম্পদ রয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। এসব সম্পদ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পরিচালকের নামে রয়েছে। তবে গ্রুপভুক্ত ৩৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ডেসটিনি-২০০০, ডেসটিনি মাল্টিপারপাস ও ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনের নামেই বেশির ভাগ সম্পদ। অভিযোগ রয়েছে, ডেসটিনির নামে থাকা রাজধানীর বাইরের সম্পদ পুরোপুরি রক্ষণাবেক্ষণ করছে না পুলিশ। বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডিএমপির কোনো নির্দেশনা নেই তাদের কাছে। ফলে সম্পদগুলোও অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

হলমার্ক : সোনালী ব্যাংক থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ। জামিনে আছেন হলমার্ক চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম। এদিকে হলমার্কেরও বহু সম্পদ ইতিমধ্যে বেদখল হয়ে গেছে।

জানা গেছে, সাভারের হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর রোডের তেঁতুলঝোড়া ব্রিজ। এর আশপাশেই প্রায় ১৩৭ একর জায়গাজুড়ে বহুল আলোচিত হলমার্ক গ্রুপের বিভিন্ন কারখানার অবস্থান। কিন্তু আট বছরের ব্যবধানে কারখানা এলাকায় ভুতুড়ে পরিবেশ। কারখানার ভঙ্গুর অবকাঠামো ছাড়া লুটপাট হয়ে গেছে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার মেশিনারিজ। ২০১২ সালের বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা হলমার্কের বিরুদ্ধে ৩৮টি মামলা বিচারাধীন। জামিনে বেরিয়ে কারখানাগুলো পুনরায় চালু করে প্রতি মাসে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জেসমিন ইসলাম। সেটা কাগুজেই রয়ে গেছে। তিনি অবশ্য সব কারখানা চালুও করতে পারেননি। এদিকে এর মধ্যে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রীকে, ২০১৬ সালে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে, ২০১৭ সালে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে এবং ২০১৯ সালে অর্থমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদনে ডেসটিনি জানায়, ৫০০ কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতিসহ ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, কারখানা এলাকার প্রভাবশালীরা যে যার ইচ্ছামতো হলমার্কের যন্ত্রপাতি ও মালামাল খুলে নিয়ে বিক্রি করে ফেলছেন। জমি আর পরিত্যক্ত ভবন ছাড়া তেমন কোনো মেশিনারিজ এখন আর নেই। কারখানাগুলোর বহু এলাকা এখন গোচারণভূমি।

এদিকে সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে হলমার্কের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা হয়েছিল ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এসব মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেওয়া হয় এক বছর পর ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। এর পর আট বছর পেরিয়ে গেলেও একটি মামলার রায়ও হয়নি। বিচারকাজ স্থবির হয়ে আছে।

বিক্রি হয়ে যাচ্ছে যুবকের সম্পত্তিও : কথা ছিল যুবকের মালিকানায় থাকা সম্পদগুলো বিক্রি করে গ্রাহকদের পাওনা ফিরিয়ে দেবে সরকার। যুবক কমিশন এমন সুপারিশও করেছিল প্রায় ১০ বছর আগে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সম্প্রতি অতি গোপনে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে যুব কর্মসংস্থান সোসাইটির (যুবক) সম্পত্তি। তা ছাড়া গ্রাহকের টাকায় কেনা সংস্থাটির ৪০টি বড় ধরনের সম্পত্তির কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ৫৩/১ রহমত মঞ্জিল পল্টনে চারতলা বাড়িটিতে যুবকের কার্যালয় ছিল। যা যুবকের কেনা সম্পদ। সম্প্রতি এই বাড়িটি গোপনে বিক্রি হয়েছে। সাধারণ গ্রাহকদের অভিযোগ, বাড়িটি যুবকের মালিকরাই গোপনে বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা জায়গাজমিও বিক্রি করছেন পলাতক থাকা যুবকের কর্তাব্যক্তিরা। সরকারের দায়ের করা এক মামলায় সাতজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে গত জুনে। কিন্তু গ্রেফতার হয়নি কেউই। জানা গেছে, যুবকের প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। আর যুবকের কাছে গ্রাহকদের পাওনা ৩ হাজার কোটি টাকারও কম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থবিভাগের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাই আর্থিক খাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা সমস্যা থাকবে না। হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আর যুবক ইস্যুটিও বেশ পুরনো। এ বিষয়টির সমাধান হওয়া খুব জরুরি বলে তিনি মনে করেন। যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটির হিসাবে সারা দেশে ৬ হাজার ১২৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে। এরমধ্যে জমির পরিমাণ ৩ হাজার একর। এ ছাড়া আবাসন, বৃক্ষ, বনায়নসহ মোট প্রকল্প ১৮টি। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে অন্তত ১৮টি বহুতল বাড়িও রয়েছে। আর যুবকের কাছে গ্রাহকদের পাওনা মাত্র ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তাই মনে করা হয় যে, সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহকদের পাওনা ফিরিয়ে দেওয়া খুব সহজ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনের তথ্যমতে, সারা দেশে যুবকের জমি রয়েছে ২ হাজার ২০০ একর। ১৮টি বাড়ি ও ১৮টি প্রকল্প; যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার কোটি টাকার মতো। এসব সম্পদের বেশির ভাগই এখন বেদখল হয়ে গেছে কিংবা গোপনে বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা। এর আগে এমএলএম কোম্পানি খুলে প্রতারণা করে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ইউনিপে নামক আরেকটি হায় হায় কোম্পানি। অতি সম্প্রতি ই-কমার্সের নামে জনসাধারণকে অধিক লোভের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে ই-ভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, কিউকমসহ আরও কয়েকটি ই-কমার্স কোম্পানির মালিক। প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে এসব কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মালিকদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com