ট্রাম্পের মতে, এ ধরনের ভিসা থেকে প্রাপ্ত অর্থ করের পাশাপাশি জাতীয় ঋণ কম কমাতে সহায়তা করবে। অ্যামেরিকার বিশেষায়িত খাতে বিদেশি কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য এইচ-১বি ভিসার বার্ষিক আবেদন ফি বাড়িয়ে শুক্রবার এক লাখ ডলার নির্ধারণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ভিসাটির সুফলভোগীদের বড় অংশ ভারতীয়। ফলে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে দেশটির ওপর। একই দিনে নির্বাহী আদেশে সইয়ের মাধ্যমে নতুন তিন ভিসা—গোল্ড কার্ড, প্লাটিনাম কার্ড ও করপোরেট গোল্ড কার্ডকে বিশ্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এ ভিসার লক্ষ্য সম্পদশালী ব্যক্তি ও করপোরেশনগুলোকে সরাসরি অ্যামেরিকায় বসবাসের পথ করে দেওয়া। গালফ নিউজ জানায়, ভিসার নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদানে সক্ষম ব্যক্তিদের (যেমন: উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী) দেওয়া হবে তিন ধরনের কার্ড। এমন পদক্ষেপ প্রচলিত ভিসা ক্যাটাগরি (যেগুলোর ভিত্তি কর্মসংস্থান কিংবা পারিবারিক সম্পর্ক) থেকে উল্লেখযোগ্য বাঁকবদল।
ট্রাম্পের মতে, এ ধরনের ভিসা থেকে প্রাপ্ত অর্থ করের পাশাপাশি জাতীয় ঋণ কম কমাতে সহায়তা করবে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রবর্তিত তিন ধরনের কার্ডের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হলো টিবিএনের পাঠকদের জন্য।
গোল্ড কার্ড
দ্রুততার সঙ্গে অ্যামেরিকার নাগরিকত্ব পেতে চাওয়া লোকজনের জন্য ভিসা কর্মসূচির নাম গোল্ড কার্ড। বিদ্যমান ইবি-১ ও ইবি-২ ভিসার জায়গা নেবে এ কার্ড। উল্লেখিত দুটি ভিসা দেওয়া হয় অসাধারণ যোগ্যতাসম্পন্ন বিদেশিদের।
কারা যোগ্য
অ্যামেরিকার সরকারে উল্লেখযোগ্য আর্থিক ভূমিকা রাখতে সক্ষম যেকোনো দেশের নাগরিকরা এ ভিসা পেতে পারেন।
আবেদনের নিয়ম
প্রথমে প্রক্রিয়াগত ফি হিসেবে প্রায় ১৫ হাজার ডলার দিতে হবে, যা অফেরতযোগ্য। পরবর্তী সময়ে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-ডিএইচএস ও স্টেইট ডিপার্টমেন্টের কঠিন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। অনুমোদনের পর ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সকে এককালীন ‘উপহার’ হিসেবে ১ মিলিয়ন তথা ১০ লাখ ডলার দিতে হবে।
সুবিধা
বৈধভাবে অ্যামেরিকায় বসবাসের অনুমতি পাওয়ার (গ্রিন কার্ড) পাশাপাশি নাগরিকত্বের পথ তৈরি হওয়া। এ প্রক্রিয়া দ্রুততর এবং অভিবাসনের অন্য পথের চেয়ে অনেক বেশি সুবিন্যস্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্লাটিনাম কার্ড
অতি ধনীদের জন্য ভিসা কর্মসূচি হলো প্লাটিনাম কার্ড।
যোগ্য কারা
যেকোনো দেশের অতি সম্পদশালী ব্যক্তি।
আবেদনের নিয়ম
অ্যামেরিকা সরকারকে ‘উপহার’ হিসেবে পাঁচ মিলিয়ন তথা ৫০ লাখ ডলার প্রদান।
সুবিধা
কার্ডধারীরা অ্যামেরিকার বাইরের আয়ের জন্য করের আওতামুক্ত থেকে বছরে ২৭০ দিন দেশটিতে বসবাস করতে পারবেন। কর অব্যাহতির এ সুবিধা নেই অন্য ভিসা ক্যাটাগরিতে।
করপোরেট গোল্ড কার্ড
বিদেশি কর্মীদের স্পন্সর করতে চাওয়া কোম্পানিগুলোকে লক্ষ্য করে এ ভিসা প্রণয়ন করা হয়েছে।
যোগ্য কারা
কর্মীদের জন্য বসবাসের সুবিধা চাওয়া করপোরেশনগুলো।
আবেদনের নিয়ম
স্পন্সর করা হবে, এমন কর্মীপ্রতি এককালীন দুই মিলিয়ন বা ২০ লাখ ডলার প্রদান।
সুবিধা
কর্মী স্পন্সরকারী কোম্পানি ছেড়ে গেলেও পুনরায় যাচাই এবং সামান্য কিছু ট্রান্সফার ফি প্রদান সাপেক্ষে দুই মিলিয়ন ডলারের সুবিধা নতুন কোনো কর্মীর কাছে স্থানান্তরযোগ্য। এ সুবিধার ফলে কোম্পানিগুলো তাদের বিনিয়োগের আর্থিক মূল্য ধরে রাখার সুযোগ পাবে। কর্মীদের স্বল্পকালীন নিয়োগের ক্ষেত্রেও মিলবে এমন সুবিধা।