সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৪ অপরাহ্ন

ট্রানজিট দিচ্ছে না ভারত

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রাফিক ইন ট্রানজিট চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ভারতের ওপর দিয়ে নেপাল ও ভুটানে বিনা বাধায় পণ্য আনা-নেওয়া করতে পারবে। কিন্তু চুক্তি থাকার পরও ভারতের আপত্তির কারণে বাংলাদেশ এই সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। নেপাল ও ভুটানে সরাসরি পণ্য পাঠাতে পারছে না, আনতেও পারছে না। কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে বিষয়টি তোলা হয়। প্রতিপক্ষ থেকে গতানুগতিক আশ্বাসই দেওয়া হয়।

নেপাল তার সব আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সমুদ্রপথে মোংলা বন্দর দিয়ে করতে চায়। তাদেরকে দীর্ঘ প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার ঘুরে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া ও কলকাতা বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া করতে হয়। এতে জ্বালানি বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়, সময়ও লাগে অনেক। সময়ক্ষেপণের পাশাপাশি ব্যাপক অর্থও ব্যয় হয়। মোংলা থেকে রেলে সিঙ্গাবাদ সীমান্ত পর্যন্ত পণ্য পরিবহন করা যায়। কিন্তু সিঙ্গাবাদ থেকে নেপাল পর্যন্ত পণ্য পরিবহন সম্ভব হচ্ছে না ভারতীয় রেলওয়ে রেল ওয়াগন ও মালবাহী ট্রেন দিচ্ছে না বলে। ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ নেপালের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়েছে, তাদের পর্যাপ্ত লোকোমোটিভ ও ওয়াগন নেই।

সড়কপথে বাংলাবান্ধা হতে ভারতীয় ২১ কিলোমিটার এলাকা অতিক্রম করলেই নেপালের কাঁকরভিটা সীমান্ত। বিনা বাধায় সরাসরি পণ্য পরিবহনের অবাধ সুবিধা দিচ্ছে না ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। সীমান্তে পণ্যবাহী বাংলাদেশি ট্রাক থেকে পণ্য খালাস করে ভারতীয় ট্রাকে উঠিয়ে নেপাল সীমান্ত পর্যন্ত পরিবহন করা হয়। দীর্ঘ দিনের পুরোনো এ ব্যবস্থা এখনো বহাল রাখায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাংলাদেশ ও নেপালের ব্যবসায়ীরা ও ভোক্তা সাধারণ। ভুটানের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হচ্ছে। ১৯৭৬ সালে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে নেপালে এবং নেপাল থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নেপালে পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি অন্য দেশ থেকে নেপালের আমদানি করা পণ্য বাংলাদেশ এবং ভারতের ২১ কিলোমিটার ভূখণ্ড দিয়ে নেপালে পরিবহনের সুবিধা রয়েছে। কিন্তু সরাসরি পণ্য পরিবহনের সুযোগ না দিয়ে ভারতীয় ট্রাকে পণ্য পরিবহন করতে হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উভয় পক্ষই।

অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর ও ভারতের সিঙ্গাপুর পর্যন্ত রেলপথে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট-সুবিধা রয়েছে। রহনপুর থেকে নেপালের পণ্য নিয়ে মালগাড়ি ছেড়ে যায়। ভারতের সিঙ্গাবাদ সীমান্তে বাংলাদেশি মালবাহী রেলের ওয়াগন থেকে মাল খালাস করে ভারতীয় মালবাহী ট্রেনের ওয়াগনে রাখতে হয়। ভারতীয় মালবাহী ট্রেনে নেপালে পণ্য পরিবহনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় মালবাহী ট্রেন না পাওয়ায় কদিন ধরে পণ্য ফেলে রাখতে হয়। দিনের পর দিন পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের মালবাহী ট্রেন খালাসের অপেক্ষায় থাকে। এতে বাংলাদেশ রেলওয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ থেকে নেপাল প্রচুর পরিমাণে সার আমদানি করে থাকে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাদের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে নেপাল ও বাংলাদেশ বিষয়টি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছে। কিন্তু দুই বছরেও এর সুরাহা হয়নি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com