পর্যটন বিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ‘ট্যুর বাংলা.নেট’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে। সম্প্রতি এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘ট্যুর বাংলা.নেট’ ম্যাগাজিন এর প্রধান সম্পাদক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো: জহিরুল হক ভূঞা এই অনলাইন ম্যাগাজিনের পরীক্ষামূলক প্রচার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ম্যাগাজিন ‘ট্যুর বাংলা.নেট’ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অন লাইন ম্যাগাজিন হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করবে। এতে পর্যটন বিষয়ক লেখা এবং তথ্য বেশি থাকলেও অন্যান্য খাতের কার্যক্রমও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে। ম্যাগাজিন ‘ট্যুর বাংলা.নেট’ পর্যটন বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা ‘‘কাছে এসো’’ একটি সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। উল্লেখ্য, ‘কাছে এসো’ দেশের একটি ব্যতিক্রমধর্মী সংস্থা,যা প্রবীণদের অবসর সময় আনন্দময় করে তোলার জন্য কাজ করে চলেছে। সমাজের সিনিয়র সিটিজেন অর্থাৎ যাদের বয়স ৬০ বছর বা তারও বেশি এমন ব্যক্তিদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণ করাই ‘কাছে এসো’র মূল উদ্দেশ্য। আমাদের সমাজে প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ নানাভাবে উপেক্ষিত এবং অবহেলিত হচ্ছে। অবসর গ্রহণের পর একজন প্রবীণ ব্যক্তি সমাজে এবং পরিবারে যেমন কোনো মর্যাদা লাভ করেন না। বরং তারা উপেক্ষিত এবং লাঞ্ছিত হয়ে থাকেন। অথচ আমরা ভুলে যাই আজকের যে সভ্যতার সুফল আমরা ভোগ করছি তা এই প্রবীণদের হাতেই তৈরি। বাঁশের চেয়ে কঞ্চি কখনোই বড় হতে পারে না। তেমনি প্রবীণদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়। এই বোধ থেকেই প্রবীণদের জন্য বিনোদনমূলক কিছু করার উদ্দেশ্যে গঠিত হয় ‘কাছে এসো।’
এই সংগঠনের নাম নিয়ে কারো কারো মাঝে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলা প্রয়োজন। এখানে ‘কাছে এসো’ বলতে প্রকৃতির কাছে যাওয়াকে বুঝানো হয়েছে। বাংলাদেশের চির সবুজ প্রকৃতি মায়ের মমতা নিয়ে পর্যটকদের আহ্বান করছে। আমাদের মাঝে ভ্রমণের নেশা খুবই কম। এ ছাড়া আমরা পর্যটন বলতে দেশের বাইরে বেড়াতে যাওয়াকেই বুঝে থাকি। কিন্তু আমাদের এই সুন্দর দেশে কত কিছু যে দেখার আছে তা আমরা ভাবতেও চাই না। বিদ্যা বা জ্ঞানার্জনের নানা উপায় আছে। যেমন,কারো নিকট থেকে শুনে বিদ্যা অর্জন করা যায়। আবার বই পড়ে জ্ঞানার্জন করা যায়। জ্ঞানার্জনের সবচেয়ে কার্যকর এবং উত্তম পন্থা হচ্ছে উদ্দিষ্ট বস্তুকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করা। এই সরাসরি প্রত্যক্ষ করার বিষয়টি পর্যটনের মাধ্যমেই সম্ভব। ইসলাম ধর্মে জ্ঞানার্জনের উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। হযরত জিবরাইল(আ:)এর মাধ্যমে হেরা পর্বতের গুহায় নবী করিম(স:) এর নিকট আল্লাহ্ প্রথম যে বাণী প্রেরণ করেছিলেন তা ছিল ‘পড়ুন আপনার রবের নামে যিনি সৃজন করেছেন।’ মহান আল্লাহ তায়ালা তার অপূর্ব সৃষ্টি বান্দাকে দেখার তাগিত দিয়েছেন। একজন মুসাফিরের জন্য ফরজ নামাজ কছর(সংক্ষিপ্তকরণ) করা হয়েছে। অন্য কোনো কারণে ফরজ নামাজ কছর করা হয় নি। ‘কাছে এসো’র উদ্দেশ্য হলো প্রবীণদের জন্য পর্যটন সুবিধা সৃষ্টি করা। ইতোমধ্যেই ‘কাছে এসো’ ভ্রমণ পিপাসুদের মাঝে আগ্রহের সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছে। ধর্ম-পেশা নির্বিশেষে যে কেউ এই সংগঠনের সদস্য হতে পারেন। সদস্য হবার জন্য কোনো চাঁদা দিতে হয় না। প্রতিটি ভ্রমণ কর্মসূচির আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হয়। যারা আগ্রহ প্রকাশ করেন তারা নির্ধারিত দিনে ভ্রমণে যাবার জন্য গমন করতে পারেন। আমাদের আরো একটি লক্ষ্য হচ্ছে তুলনামূলক স্বল্প ব্যয়ে ভ্রমণ কর্মসূচি আয়োজন করা। আমরা কয়েক জন প্রবীণ ব্যক্তি যখন কোনো এলাকায় পর্যটনে গমন করি তখন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের মাঝে এক ধরনের আগ্রহ তৈরি হয়। তারা আমাদের সঙ্গে পরিচিত হন। নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন। ভ্রমণকালিন সময়ে আমরা স্থানীয়দের নিকট থেকে নানাভাবে সহায়তা পেয়ে থাকি। বর্তমানে এই সংগঠনের জাতীয় পর্যায়ের দায়িত্ব পালন করছেন সভাপতি-প্রফেসর মো: জহুরুল হক ভূঞা,সাধারণ সম্পাদক-এম এ খালেক এবং কোষাধ্যক্ষ সাহিত্যিক কাজি এনায়ের হোসেন। এছাড়া আরো ৪জন আছেন নির্বাহী সদস্য হিসেবে।
বেসরকারি পর্যটন বিষয়ক সংস্থা ‘কাছে এসো’ দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করে প্রবীণ মানেই সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। প্রবীণেরও অনেক কিছু করার আছে। বিশেষ করে তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা তরুণদের হৃদ্ধ করতে পারে। ‘কাছে এসো’র উদ্যোগে দেশের সবগুলো জেলা ভ্রমণের এক বিশাল কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় আমরা দেশের প্রত্যেকটি জেলা শহর ভ্রমণ করবো। সেখানে এর রাত করে অবস্থান করবো এবং সবচেয়ে বড় মসজিদে নামাজ আদায় করবো। অবশ্য খুব কাছের জেলা হলে দিনে দিনেও আমরা ফিরে আসি। এই কার্যক্রমের আওতায় ইতেমধ্যেই দেশের ১৬টি জেলা সফর করা হয়েছে। কোনো জেলা শহর ভ্রমণ করার সময় আমাদের উদ্দেশ্য থাকে সবচেয়ে কম খরচে কিভাবে ভ্রমণ সম্পন্ন করা যায়। যেহেতু আমরা কয়েকজন একই সঙ্গে ভ্রমণে যাই তাই খরচ আনুপাতিক হারে কম হয়। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। আমরা শেরপুরের গজনী ভ্রমণে যাই ৪জন। রাতের অবস্থান থেকে সকাল বেলা একটি অটো রিক্সা যোগে গজনী অবকাশ কেন্দ্রে গেলাম। অটো ভাড়া দিতে হলো ৬০০ টাকা। আমরা যদি একজন ভ্রমণে যেতাম তাহলে একাই ৬০০ টাকার ব্যয়ভার বহন করতে হতো। দু’জন গেলে ব্যয় হতো জনপ্রতি ৩০০ টাকা করে। যেহেতু ৪ জন গিয়েছিলাম তাই জনপ্রতি ব্যয় হলো ১৫০ টাকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এভাবে ভ্রমণ ব্যয় কমে আসে। এ ছাড়া কয়েকজন মিলে কোথাও গেলে নিরাপত্তার বিষয়টিও অধিকতর সুরক্ষিত থাকে। প্রত্যেক প্রবীণ ব্যক্তির মনে অনেক গল্প লুকিয়ে আছে। ভ্রমণে গেলে সেই গল্পের ঝাঁপি তারা খুলে বসেন। একজন প্রবীনের মাঝেও যে কত রসবোধ থাকতে পারে তা ভ্রমণে না গেলে অনুধাবন করা যায় না। প্রতিটি জেলা শহর ভ্রমণকারে আমরা এমন কিছু মানুষের সাক্ষাৎ পাই যারা নানাভাবে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন। যেমন,বিরিশিরি ভ্রমণকালে আমরা তারা মিয়া নামে একজন ব্যাটারি চালিত রিক্সা চালকের সন্ধান পাই যিনি তার প্রতিদিনে রোজগারে অর্ধাংশ জমিয়ে রেখে তা দিয়ে এলাকার গরীর শিশুদের স্কুলের বই খাতা কিনে দেন। রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ভ্যালি দেখতে গিয়ে আমরা স্বপন ত্রিপুরা নামে একজন খৃষ্টান ধর্ম যাযকের সন্ধান পাই। তিনি আমাদের নানাভাবে আপ্যায়ন করেন। বান্দরবান ভ্রমণকালে একজন হোটেল ব্যবসায়ির সাক্ষাৎ পেলাম যিনি তার চমৎকার ব্যবহার দিয়ে আমাদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। তিনি আমাদের বিশেষভাবে আপ্যায়ন করেন। তিনি ফিরে আসার সময় বললেন,আপনারা এই বয়সে দেশের ৬৪টি জেলা ভ্রমণের যে উদ্যোগ নিয়েছেন সে জন্য আপনাদের পুরস্কৃত করা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি ভ্রমণকালেই নানা ধরনের আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। ভ্রমণ মানেই কষ্ট। কিন্তু আমাদের ভ্রমণকালে কখনোই তা কষ্টদায়ক বলে মনে হয় নি। প্রতিটি ভ্রমণকালেই আমাদের মধ্য থেকে একজনকে টিম লিডার নির্বাচন করা হয়। ভ্রমণকালিন সমস্ত ব্যয় তার হাত দিয়েই সম্পাদিত হয়। পরবর্তীতে ব্যয়িত অর্থ সমানুপাতিক হারে সবার মধ্যে বণ্টিত হয়। ব্যয়িত অর্থের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়। চাইলে যে কোনো ভ্রমণার্থী ব্যয়ের খতিয়ান দেখতে পারেন।
বাংলাদেশ একটি বৈচিত্রময় দেশ। এর প্রত্যেকটি জেলার কৃষ্টি-কালচারের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। কিছু দিন আগে আমরা টাংগাইলের গোপালপুর ভ্রমণে গেলাম। সেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। স্থানীয় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করছেন। ঝিনাই নদীর তীতে নির্মিতব্য এই মসজিদ দেখতে প্রতিদিনই প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে।
অনেকই হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, ‘কাছে এসো’র মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা শহর ভ্রমণের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তার সঙ্গে অন লাইন ম্যাগাজিন ‘ট্যুর বাংলা.নেট’ প্রকাশের সম্পর্ক কি? ‘কাছে এসো’র সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন তাদের অধিকাংশই লেখা-লেখির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং অন্যান প্রতিকায় নিয়মিত লিখে থাকেন। কিন্তু এতে মনের চাহিদা সেখাভে পূরণ হচ্ছিল না। তাই আমরা একটি নিজস্ব ম্যাগাজিন প্রকাশের প্রয়োজন অনুভব করি। সেই অনুভূতির বহি:প্রকাশই ম্যাগাজিন ‘ট্যুর বাংলা.নেট’। বর্তমান সময় হচ্ছে মিডিয়ার যুগ। মিডিয়া যে কোনো ভালো কাজে সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। মিডিয়ার কল্যাণে অনেক সাধারণ বিষয়ও ব্যাপকভাবে জনসমক্ষে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে। আবার মিডিয়ার সাহচর্য না পেলে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও লোক চক্ষুর আড়ালে থেকে যায়। আমাদের দেশের মানুষের মাঝে পর্যটন সম্পর্কে আগ্রহের অভাব লক্ষ্য করা যায়। যদিও ইদানিং ব্যক্তি খাতে প্রতিষ্ঠিত ট্যুর অপারেটরদের কল্যাণে পর্যটন সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের একজন খ্যাতিমান অধ্যাপকের একটি বিব্রতকর অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করতে চাই। বেশ কয়েক দশক আগে সেই অধ্যাপক মহোদয় একটি ছোট প্রতিনিধি দল নিয়ে তৎকালিন পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। প্রতিনিধি দল মন্ত্রী মহোদয়কে পর্যটন শিল্প বিকাশের প্রয়োজনীয়তার কথা বুঝানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে সেই মন্ত্রী মহোদয় কিছুটা তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন,যে দেশের মানুষ ঠিক মতো খাবার খেতে পারে না সেই দেশে পর্যটন শিল্পের মতো বিলাসিতার কি প্রয়োজন? এই হচ্ছে আমাদের দেশের এক শ্রেণির কর্তা ব্যক্তির মনোভাব পর্যটন শিল্প সম্পর্কে। অথচ মন্ত্রী মহোদয় এটা জানেন না যে,পর্যটন শিল্প এখন আর কোনো বিলাসিতা নয়। বরং এই শিল্প মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। পর্যটন হচ্ছে বিশে^র সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারি একক খাত। বিশে^র এমন অনেক দেশ আছে যাদের জাতীয় আয়ের একটি বিরাট অংশই আসে পর্যটন শিল্প হতে। যেমন প্রতিবেশি দেশ নেপালের জাতীয় আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশই আসে পর্যটন শিল্প থেকে। পর্যটন এমনই এক অর্থনৈতিক খাত যেখানে নতুন করে কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে হয় না। আল্লাহ্র সৃষ্টি উপকরণকে পরিচর্যা এবং রূপান্তরে মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করা যায়। একটি দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য যে সব উপকরণ থাকা দরকার তার প্রায় সবই আমাদের দেশে আছে। কাজেই এখানে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে,পর্যটন বিষয়ক বেসরকারি সংগঠন ‘কাছে এসো’র কাজ কি? এই সংগঠনের সদস্যগণ কি নিছক আনন্দের জন্য দেশের বিভন্ন স্থান ঘুরে বেড়ান নাকি, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্যও আছে? কয়েক দিন আগে আমার এক শুভাকাঙ্খি বললেন,আপনারা শুধু শুধু দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়িয়ে অর্থের অপচয় করছেন। বরং এই টাকা যদি কোনো দরিদ্র মানুষকে সহায়তার জন্য দিতেন তাহলে সেটাই হতো বুদ্ধিমানের কাজ। তার মতো একজন সচেতন ব্যক্তির নিকট থেকে এমন মন্তব্য শুনে আমি বিস্মিত হই। দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, ‘কাছে এসো’র সদস্যগণ দেশের বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ালেও তাদের এই বেড়ানোটা উদ্দেশ্যবিহীন নয়। আমরা ভ্রমণকালে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করি। সড়ক দুর্ঘটনা কিভাবে রোধ করা যায়। কিভাবে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করা যায়। ধূমপানের ক্ষতিকর দিক তাদের নিকট তুলে ধরার চেষ্টা করি। অর্থাৎ সামাজিক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাই। এতে অনেকেই তাৎক্ষণিকভাবে উদ্বুদ্ধ হয়। তারা আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। বিশ^বিখ্যাত পর্যটক মরোক্কোর ইবনে বতুতা তার জীবনের প্রায় অর্ধেকটাই দেশ ভ্রমণে কাটিয়েছেন। তার এই কষ্টকর জার্নি কি শুধুই সময় এবং অর্থের অপচয়? ইবনে বতুতার ভ্রমণ কাহিনী পড়ে এখনো আমরা সেই সময়ের বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার কথা জানতে পারি। রাজা আসে রাজা যায়,‘ক’জন তার খবর পায়?’ কিন্তু ইবনে বতুতা কিংবা চীনের বিখ্যাত পরিব্রাজক ফাহিয়েন এবং হিউয়েন সাঙ এর নাম চির দিন স্মৃতির পাতায় অম্লান হয়ে থাকবে। আমরা চাই দেশে একটি বিজ্ঞান মনস্ক পর্যটক শ্রেণি গড়ে উঠুক। আমাদের দেশের মানুষ এমনিতে অত্যন্ত অতিথি পরায়ণ। কিন্তু পর্যটকদের প্রতি তারা কেনো যেনো এখনো তেমন একটা উদার মনোভাব দেখাতে পারছে না। তারা পর্যটক দেখলেই যে কোনো পণ্যের মূল্য কয়েক গুন বাড়িয়ে বলেন। তাদের সঙ্গে প্রায়শই দুর্র্ব্যবহার করেন। এই মনোভাব পরিবর্তনযোগ্য। আমাদের বুঝতে হবে একজন পর্যটক স্থানীয়দের শত্রু নন। বরং তারা স্থানীয়দের পরম বন্ধু।
যারা পর্যটন শিল্পের বিকাশে কাজ করতে চান তারা আমাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন।