শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১১ অপরাহ্ন

জার্মানিতে বাড়ছে অভিবাসী কর্মী

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ মে, ২০২৩

শ্রমঘাটতি পূরণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোর দক্ষ কর্মীদের কাছে টানতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি। ফলে দেশটির শ্রমবাজারে বেড়েই চলেছে অভিবাসী কর্মীদের সংখ্যা।

সেন্ট্রাল রেজিস্টার অব ফরেইনার্স বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছর তিন লাখ ৫১ হাজার মানুষকে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতির সঙ্গে কাজ করার অধিকার দিয়েছে জার্মানি।

সংখ্যাটি গেলো বছরের চেয়ে ৫৬ হাজার বেশি। জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, ২০২২ সালের তুলনায় এই সংখ্যাটি অন্তত ১৯ ভাগ বেড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে আসা অভিবাসী কর্মীদের সংখ্যা যে শুধু গত বছরের তুলনায় বেড়েছে তা নয়। ২০১০ সাল থেকে এই সংখ্যাটি ক্রমশ বড় হচ্ছে।

এ বছর বিদেশি কর্মী হিসেবে নিবন্ধিত মানুষের দুই তৃতীয়াংশই পুরুষ। এর মধ্যে অ্যাকাডেমিক পেশাদারদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ৮৯ হাজার। তাদের সবারই ব্লু কার্ড রয়েছে।

তাদের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি ভারতের নাগরিক। অন্তত ২৬ হাজার ভারতীয় অ্যাকাডেমিক পেশাদার হিসেবে চলতি বছর এসেছেন জার্মানিতে। তারপর আছে তুরস্ক এবং রাশিয়ান বংশোদ্ভূতরা।

কোনো পরিসংখ্যান দেওয়া না হলেও জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিস জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাহীন দক্ষ কর্মীদের সংখ্যাও বেশ বেড়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে কর্মী সংকটে ভুগছে জার্মানি। সংকট মোকাবিলায় বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী আকর্ষণে অভিবাসন আইন পরিবর্তনেরও পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির সরকার। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা নতুন খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের মন্ত্রিসভা। জার্মান পার্লামেন্টের দুই কক্ষে পাস হলে আইনটি কার্যকর হবে।

এই আইনের আওতায়, প্রতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে ৬০ হাজার কর্মী নেবে জার্মানি।

গত কয়েক বছর ধরে প্রয়োজনীয় কর্মীর অভাবে ভুগছে জার্মানি। জন্মহার কমে যাওয়ায় অবসরে যাওয়া বয়স্কদের শূন্যস্থান পূরণে যথেষ্ট সংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠী নেই দেশটিতে।

গত বছর জনবল ঘাটতির প্রভাবে রেল ও বিমানের সময়সূচিতেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছিলো। ব্যবসায়ীদের সংগঠন জার্মান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এক জরিপে প্রায় ৫৬ শতাংশ কোম্পানি কর্মী ঘাটতি থাকার কথা জানিয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২২ সালের শেষে শূন্যপদ ছিল প্রায় ২০ লাখ, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ শ্রম বাজারে ৭০ লাখ কর্মী ঘাটতি থাকবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্লু কার্ড পেতে হলে, আবেদনকারীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি থাকতে হবে। সঙ্গে প্রয়োজন হবে একটি চাকরি, যা তার শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ন্যূনতম বেতনের নিশ্চয়তা দেবে।

দক্ষ কর্মীদের জন্য জার্মানি আগে থেকেই ‘ব্লু কার্ড’ দিয়ে আসছে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে জার্মানি ও ইউরোপে বসবাস ও চাকরির অনুমতি পেয়ে থাকেন তারা। নতুন আইনে সেটি পাওয়া আরো সহজ হবে। কারো ডিপ্লোমা সনদ ও চাকরির চুক্তিপত্র থাকলে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নে চার বছর পর্যন্ত থাকার এই অনুমতি পাবেন।

এক্ষেত্রে ন্যূনতম বার্ষিক আয়ের যে শর্ত ছিল তার পরিমাণ আগের চেয়ে কমানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি না থাকলেও প্রাসঙ্গিক চাকরির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা ব্লু কার্ড পাবেন।

শুধু কর্মী নন, নতুন নিয়মে তাদের পরিবারও জার্মানিতে সহজে আসা ও স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাবেন। বিদেশে অর্জিত কারিগরি ডিগ্রি জার্মানিতে স্বীকৃত না হলেও অভিবাসীরা চাকরি করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা থাকতে হবে।

এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কারিগরি সনদ দেখানো সাপেক্ষে চাকরি খোঁজার জন্য এক বছর পর্যন্ত জার্মানিতে থাকার অনুমতি পাওয়া যাবে।

সূত্র: ইনফো মাইগ্রেন্টস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com