সিরামিকের তৈরি বিড়ালের মূর্তি মানেকি নেকো জাপানে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। শিল্পবস্তু হিসেবে আজকাল বিদেশীরাও এর কদর করছেন।
দেশটির আইচি প্রদেশের সিরামিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চুগাই টোয়েনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নতুন পর্যটন আকর্ষণও। জাপানের একাধিক শিল্পীর সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি মানেকি নেকো সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। দর্শনার্থীদের সিরামিক বিড়াল রঙ করার সুযোগও দিচ্ছে তারা।
প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান সেতো শহরে, যা সিরামিক সংস্কৃতির জন্য পরিচিত এবং মানেকি নেকোর অন্যতম প্রধান উৎপাদনকারী হিসেবে খ্যাত। ঐতিহ্যগত মানেকি নেকো থাবা তুলে বসে থাকা একটি বিড়াল—এ ভঙ্গির মাধ্যমে ক্রেতা বা সৌভাগ্য আহ্বান করা হয়।
চুগাই টোয়েন ঐতিহ্যবাহী ডিজাইনের পাশাপাশি নতুন ধরনের মানেকি নেকো তৈরি করছে। ১৯৫২ সালে এর প্রতিষ্ঠা, তবে কভিড মহামারীর সময় স্যুভেনিরের চাহিদা কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ধাক্কা খায়। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এখন বার্ষিক বিক্রির আকার প্রায় ১০০ কোটি ইয়েন বা ৬৯ লাখ ডলার।
প্রতিষ্ঠানটির আয়ের প্রায় অর্ধেক আসে চীনা রাশিচক্রে বর্ণিত ১২টি প্রাণীকেন্দ্রিক সামগ্রী বাবদ। মানেকি নেকো এ ব্যবসায় নতুন আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে বার্ষিক বিক্রি ১৫০ কোটি ইয়েনে উন্নীত করতে চায় চুগাই টোয়েন।
নতুন ডিজাইনের মানেকি নেকো তৈরিতে প্রতিষ্ঠানটি বাইরের বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে কাজ করছে। ২০১৬ সালে জাপানের বড় ফ্যাশন ব্র্যান্ড বিমসের সঙ্গে রঙিন মানেকি নেকো তৈরি শুরু করে। ২০২৩ সাল থেকে মিরোকোমাচিকো ও নাতসুমি তেরাওকার মতো খ্যাতিমান শিল্পীদের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়িয়েছে।
২০২৩ সালে চুগাই টোয়েন সদর দপ্তরের কাছে ‘স্টুডিও৮৯৪’ নামে একটি কেন্দ্র চালু করে। এখানে গ্যালারি ও ক্যাফেসহ প্রদর্শনী কেন্দ্র রয়েছে। গ্যালারিতে অংশীদারদের সঙ্গে তৈরি মানেকি নেকোর সংগ্রহ প্রদর্শিত হয়। দর্শনার্থীরা এখানে সাদা সিরামিক বিড়াল নিজেরা রঙও করতে পারেন। এর জন্য দেড় হাজার ইয়েন থেকে খরচের শুরু, যার মধ্যে পাশের একটি জাদুঘরে প্রবেশমূল্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানেকি নেকোর নাম এখন বিদেশেও পরিচিত। বর্তমানে চীন ও সিঙ্গাপুরে সিরামিক পণ্য রফতানি করছে চুগাই টোয়েন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও চোখ রাখছে।