করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরার পর থেকেই চীন তাদের সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করতে শুরু করে। সম্প্রতি এই কড়াকড়ি শর্তসাপেক্ষে কিছুটা শিথিল হলেও এখনও বিপুল সংখ্যক বিদেশী চীনে ফিরতে পারছে না। এর মধ্যে একটা বড় অংশ হচ্ছে চীনে অধ্যয়নরত বিদেশি ছাত্রছাত্রী।
সম্প্রতি বেশকিছু মিডিয়ার খবরে দেখা গেছে যে গুয়াংজু কর্তৃপক্ষ বিদেশ থেকে আগতদের জন্য ২৫৭৮০০বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে ৫০০০ কক্ষ বিশিষ্ট একটি অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করার প্রস্তুতি গ্রহন করেছে যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হবে। কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রটি গুয়াংজুর বাইয়ুন শহরে নির্মিত হবে যা বাইয়ুন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছাকাছি।
এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটিতে থাকবে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্বলিত চিকিৎসা সরঞ্জাম যা কোভিড -১৯ দ্বারা সৃষ্ট রোগের বিষয়ে আরও সঠিক ও নিখুঁত তথ্য দিতে পারবে। এছাড়া এয়ারপোর্ট থেকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাতায়াতে বাহিরের লোকজনের সাথে সংস্পর্শ প্রতিরোধে থাকবে মানুষবিহীন প্রযুক্তি।
চীনের অন্যতম ব্যস্ত প্রদেশের নাম গুয়াংডং, যার রাজধানী গুয়াংজু। আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের কাছে এটি কেনাকাটা স্বর্গ নামে পরিচিত। চীনের আগত যাত্রীদের এক বিশাল অংশ গুয়াংজু হয়ে চীনে প্রবেশ করে। গত ২১ মে গুয়াংজুতে ৭৫ বছর বয়সী মহিলার শরীরে ধরে পড়ে অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস ‘ডেল্টা কোভিড ১১। যিনি একটি রেস্তোরার পরিদর্শক ছিলেন। এর পর পর-ই ৮ জুন পর্যন্ত ১৮ মিলিয়ন জনগণকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে গুয়াংজু কর্তৃপক্ষ।
চীনের প্রখ্যাত মহামারী বিশেষজ্ঞ ডাঃ ঝংনানশান বলেন গুয়াংজুতে ডেল্টা কোভিড যাতে মহামারী আকার ধারন করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখছে গুয়াংজু কর্তৃপক্ষ। আর তার জন্য আশেপাশের এলাকায় গুলোতে দ্রুত লকডউন চালু করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন গুয়াংজুতে যে সমস্ত আবাসিক হোটেল গুলো রয়েছে তা ডেল্টা কোভিড ১১ আর SARS(Severe Acute Respiratory Syndrome) এর জন্য উপযুক্ত নয়।
হয়তো এসব কারনেই গুয়াংজু কর্তৃপক্ষ উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় আরও ভালভাবে কোভিড -১৯ নিয়ন্ত্রন করতে চাইছে। অস্থায়ী এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার সফলতা পেলে, এই মডেল চীনের অন্যান্য শহরেও প্রয়োগ করা হতে পারে যা বিদেশীদের চীনে আসার প্রক্রিয়াকে আরও সহজতর করতে পারে।
চীনের সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছে। অনেকেই বলছেন “কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধে এটা খুবই ভাল প্রস্তুতি”।