চীনে কি পার্ট-টাইম চাকুরীর সুযোগ আছে?

চীনে পড়তে ইচ্ছুক ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে প্রায়ই একটা প্রশ্ন শোনা যায় যে, পড়াশুনা অবস্থায় খন্ডকালীন বা পার্ট টাইম চাকুরী করার সুযোগ কতটুকু? সংক্ষেপে বলতে গেলে চীনে বিদেশি ছাত্র ছাত্রীদের পার্ট টাইম চাকুরী করা বেআইনী। যার কারনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি ছাত্র ছাত্রীদের পার্ট টাইম চাকুরীতে নিয়োগ দিতে আপত্তি জানিয়ে থাকে। আইন ভঙ্গ করলে প্রতিষ্ঠানকে গুনতে হয় বিপুল অংকের জরিমানা।

বাস্তবতা কি বলে?

বিদেশি ছাত্র ছাত্রীদের পার্ট টাইম চাকুরী বা ইন্টার্নশীপ করার কড়া বিধিনিষেধ থাকলেও বাস্তবতা ভিন্ন, ছাত্র ছাত্রীরা অনুমতির তোয়াক্কা না করে হরহামেশায় নানাবিধ পার্ট টাইম চাকুরী বা ইন্টার্নশীপে নিয়োজিত হচ্ছেন। কেউ কেউ অভিজ্ঞতা অর্জনের তাগিদে আবার কেউ বাড়তি সচ্ছলতার আশায় এই ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে প্রশাসনেরও কিছুটা শিথিল মনোভাব লক্ষ্য করা যায়, যে কারনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছাত্র ছাত্রীরা পুলিশি ঝামেলা থেকে পার পেয়ে যায়।

তারপরেও আইনের উপস্থিতি জানান দিতে পুলিশ অনেক সময় ঝটিকা অভিযান চালিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ছাত্র ছাত্রীদের বেশ বিপাকে পরে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এসব ক্ষেত্রে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে মোটা অংকের জরিমানা থেকে শুরু করে স্থায়ীভাবে চীন থেকে বহিষ্কারও করা হয়ে থাকে

কি ধরনের কাজের সুযোগ মেলে?

আইনের কড়াকড়ির মধ্যেও চীনে খন্ডকালীন চাকুরী বা ইন্টার্নশীপের সুযোগ নেহাত কম নয়। উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে –

  • ইংরেজি পড়ানো
  • দোভাষী হিসেবে কাজ করা
  • টিভি অনুষ্ঠান, নাটক, সিনেমায় পার্শ্বচরিত্র বা দর্শক হিসেবে কাজ করা
  • ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে মধ্যস্থতা করা
  • সফটওয়্যার, ভিডিওগেম টেস্ট করা
  • অনলাইন মার্কেটিং, ব্লগিং, আইটি হেল্পডেস্ক

এতসব সুযোগের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ জুড়েই থাকে ইংরেজি পড়ানোর কাজ, আর সাধারণত এই কাজে যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি তারাই বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে।

জনপ্রিয় ওয়েবসাইট thebeijinger.com -এ পার্ট টাইম জবের কিছু বিজ্ঞাপন

কড়া আইনের মাঝে আশার আলো

আসলে গত কয়েক বছর আগেও এ আইনের কড়া প্রয়োগ লক্ষ্য করা গেছে, তবে সাম্প্রতিক বছর গুলোতে এই আইন কিছুটা শিথিল করার খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। নতুন এই নিয়মে বলা হচ্ছে, ক্ষেত্র বিশেষে পার্ট টাইম চাকুরী অথবা ইন্টার্নশীপ করা যাবে, এর জন্য প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে নিকটস্থ এক্সিট-এন্ট্রি অফিসে পার্ট টাইম চাকুরী বা ইন্টার্নশীপের সকল তথ্য উল্লেখ করে আবেদনের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হবে। এই অনুমতি ছাড়া ছাত্র ছাত্রীদের পার্ট টাইম চাকুরী বা ইন্টার্নশীপ বেআইনী বলে বিবেচিত হবে।

ইন্টার্নশীপ করার অনুমতিসহ ছাত্র ভিসা / রেসিডেন্স পারমিট

শেষকথা

ছাত্রজীবনে একটু সচ্ছল থাকতে কে না চায়, কেউ পরিবারের উপর থেকে চাপ কমানোর জন্য, আবার কেউ অভিজ্ঞতা অর্জনের উদ্দেশ্যে পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে টুকটাক কাজ চালিয়ে যেতে চান। কিন্তু চীনে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশুনা নিয়ে খুব বেশি ব্যাস্ত থাকতে হয়, সকাল সন্ধ্যা ক্লাস, হোমওয়ার্ক, ল্যাব, এসাইনমেন্ট এর পর বাড়তি কাজের ফুসরত খুব কমই মেলে। এর পরেও যদি কাজের সুযোগ পাওয়া যায় সেটা যেন কম ঝুকিপূর্ন ও আইনসিদ্ধ হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জিজ্ঞেস করুন । এছাড়া নিচে মন্তব্য করার সুযোগতো রয়েছেই 🙂

আমাদের ফেসবুক গ্রুপ : Bangladesh Community in China

তথ্যসূত্র: www.ebeijing.gov.cn/Study/StudyFAQ/t1117725.htm

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: