বর্তমান সময়ে চীন পৃথিবীর দ্রুত অগ্রসরমান দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে। চীনারা মনে করে তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং রাস্ট্রীয় উন্নয়নের জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই; যে কারণে তারা শিক্ষার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করছে। চীনে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমান বৈশ্বিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি এবং বিশেষত শিল্পায়নের সবগুলো ক্ষেত্রকে বিবেচনায় এনে কোর্স প্রনয়ন করা হয়। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে চীনের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপক সংখ্যক বিদেশী শিক্ষার্থীকে আকর্ষন করছে। বাংলাদেশ থেকেও প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র/ছাত্রী উচ্চ শিক্ষার্থে চীনা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে গমণ করছে। চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের করণীয় সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হলো:
প্রথমত করণীয়
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অসংখ্য প্রোগ্রাম অফার করে থাকে। তাই একজন আগ্রহী শিক্ষার্থীর প্রথম কাজ হবে ইন্টারনেটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের প্রোগ্রামগুলো সম্পর্কে জেনে নিয়ে তার পছন্দের প্রোগ্রামগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরী করা। অতঃপর তাকে চীনের সবচেয়ে ভাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খোঁজ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যত বেশী সংখ্যক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায় ততোই ভালো, কারণ এতে একজন শিক্ষার্থীর সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আবেদন পত্র
আবেদনপত্রের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে তার পছন্দকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে। শিক্ষার্থী ইচ্ছা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় ই-মেইল করে আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তার ঠিকানায় পাঠানোর অনুরোধ করতে পারে। আবেদন ফরম অত্যন্ত যত্নের সাথে পূরণ করতে হবে এবং ঘষামাজা করা চলবে না। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ই আবেদনপত্র Process করার জন্য একটি নির্ধারিত ফি নিয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে এই ফি ৩৮০ ইউয়ান থেকে ৭৭০ ইউয়ান পর্যন্ত হয়ে থাকে। আবেদন ফি অগ্রিম পরিশোধ করে তার রশিদটি আবেদন ফরমের ডকুমেন্টের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হয়।
যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন
চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবেদনপত্রের সাথে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র চেয়ে থাকে যেন তারা এসব ডকুমেন্ট থেকে আপনার যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে। আবেদনপত্রের সাথে যেসব কাগজপত্র পাঠাতে হয় সেগুলোর নিচে উল্লেখ করা হলো:
কোন কোন পর্যায়ে চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায়?
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৪ বছরের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম চালু আছে। এই প্রোগ্রাম সাধারণ শিক্ষা বা কারিগরী শিক্ষা হতে পারে। এই ৪ বৎসরের অধ্যয়ন শেষে আপনি ব্যাচেলর ডিগ্রী পাবেন কিনা তা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি হয়েছেন এবং কোন কোর্সে ভর্তি হয়েছেন তার উপর। মনের রাখা প্রয়োজন ভালো মানের চীনা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হওয়া অত্যন্ত কঠিন ও প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ।
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট
চীনের বেশ কিছু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাচেলর পর্যায়ে সফল শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স ও পি এইচডি ডিগ্রী অফার করে থাকে। মাস্টার্সের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে ৩ বৎসর অধ্যয়ন করতে হয় এবং পিএইচডি’র জন্য মাস্টার্সের পর আরো ৩ বছর অধ্যয়ন করতে হয়।
জনপ্রিয় বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীর কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় শীর্ষস্থানীয় ১০ টি বিষয় এবং এসব বিষয় যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে ভালো পড়ানো হয় সেগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
বিষয়ের নাম |
বিশ্ববিদ্যায়লের নাম |
ক্লিনিক্যাল মেডিসিন |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক্স এন্ড ট্রেড |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
বিজনেস অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড লিটারেচার |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
স্থাপত্য বিদ্যা |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
চাইনিজ ট্রেইনিং |
|
|
|
|
|
|
|
|
চীনের ষ্টুডেন্ট ভিসা
বিদেশে পড়াশুনা করার জন্য ষ্টুডেন্ট ভিসা প্রাপ্তি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। চীনের ক্ষেত্রেও এটা ব্যতিক্রম নয়। বিদেশীদেরকে চীন সরকার যে বিভিন্ন ধরনের ভিসা প্রদান করে থাকে তার মধ্যে এক্স (X) ক্যাটাগরীর ভিসা বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা হিসাবে দেয়া হয়। যে কোন ছাত্র-ছাত্রী যারা ৬ মাস বা তদুর্ধ্ব সময়ের জন্য চীনে পড়াশোনা করতে যাবেন তাদের জন্য তাদের নিকটস্থ চায়না অ্যাম্বাসী থেকে (X) ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
আপনি চীনে পৌছাবার আনুমানিক তারিখের ১ মাস পূর্বে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। কাউন্সেলর অফিস থেকে আপনাকে ভিসার আবেদন ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে বলা হবে যেসব কাগজপত্র আপনার যোগ্যতা প্রমান করবে। আবেদন ফরম অবশ্যই যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। ঘষামাজা করা যাবে না। প্রার্থীর বয়স ১৮ বছরের কম হলে তার পিতা/মাতা তার পক্ষে স্বাক্ষর করতে পারেন। আবেদন ফর্ম অবশ্যই সশরীরে প্রার্থীর নিজ দেশের চীনা অ্যাম্বেসী অথবা নিকটস্থ কনস্যুলেট জেনারেলের অফিসে জমা দিতে হবে। কোনভাবেই ডাকযোগে আবেদনপত্র জমা নেয়া হবে না। প্রার্থী কোন কারণে অসমর্থ হলে তার পক্ষে অন্য কেউ সশরীরে গিয়ে জমা দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
এভাবে একজন শিক্ষার্থী উপরোক্ত প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করে ভালো মানের কোন চীনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য নির্বাচিত হতে পারেন।
আরো তথ্যের জন্য
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য বাংলাদেশের কনসালটেন্সী ফার্মগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
এ ধরনের কয়েকটি মান সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা নিম্নে দেয়া হলো:
প্রতিষ্ঠানের |
ঠিকানা |
ফোন নং |
LUMINOUS | বাড়ী: ৪৬, সড়ক: ৯/এ (৩য় তলা), ধানমন্ডি, ঢাকা- ১২০৯ | ০১৮১৯-২৪১৬৯৬, ০১১৯০৩৪৬১৪৯ |
SANGEN Intl (Pvt) Ltd. | ৩৩, কাদের আর্কেট, মিরপুর রোড (৫ম তলা), সায়েন্স ল্যাবরেটরী, ঢাকা- ১২০৫ | ০১৯১৩-৫৪২৭৬৯ |
The Study Linkers | ২য় তলা, ১৪/এ/২, সলিমুল্লাহ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা- ১২০৭ | ০১৯৪৪-৭৭৭৬০০-৩
|