বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন
Uncategorized

চলো যাই দার্জিলিং ঘুরে আসি

  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ জুন, ২০২১

দার্জিলিং যাওয়ার পথে চা-বাগান আর মহিলাদের চা পাতা তোলার দৃশ্য দেখতে পাবেন। পাহাড়ি পথের একটা মজা হল মেঘ-রোদ্দুরের খেলা। ওপর থেকে মেঘলা দেখা গেলেও নীচে সোনালি রোদ্দুরে ঝলমল সবুজ তৃণভূমী। পাহাড়ের মাঝে রডোডেনড্রোনের লাল চাদর বিছানো। দার্জিলিং এর প্রকৃতিক দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।

পথের পাশে ভেজ মেমো খেতে ভূলবেন না। হাল্কা আদা আর পিয়াজের গন্ধ মাখা বাধাকপি দেওয়া এমন মেমো শুধুমাত্র দার্জিলিং এই পাওয়া যায়। দার্জিলিং এ ঝকঝকে রোদে কাঞ্চনজঙ্খা দেখার যেমন রোমাঞ্চ আছে, তেমনি আবার মেঘের সঙ্গে বসবাস একমাত্র দার্জিলিং এই সম্ভব।

নিউজলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে সময় লাগে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। হোটেলে চেক ইন করে লাঞ্চ সেরে বেরিয়ে পড়ুন শহর দেখতে।আপনি বাঙালি খাবার যেমন ডাল, ভাত, মাছ চিকেনে অভ্যস্থহলে সব হোটেলেই এই ব্যবস্থা আছে। তবে হোটেলে লাঞ্চের ব্যবস্থা থাকলেও শীতের দুপুরে গ্লেনারিজ রেস্টুরেন্টের হাতছানি পেক্ষা করা প্রায় অসম্ভব। এখানে খেতে বসে বাইরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। সঙ্গে সুগন্ধি দার্জিলিং চা। শুধুচায়ের জন্যই বারবার আপনাকে দার্জিলিং আসতে মন চাইবে।

দার্জিলিং শহরটা তেমন বড় নয়। তাই পায়ে হেটে ঘুরে বেড়াতে বেশ ভালোই লাগে। দার্জিলিং এ সবচেয়ে ভাল লাগে মেঘ ও রোদের খেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের কাঞ্জনজঙ্ঘা দেখার ব্যকুলতা। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী বেড়ানোর জন্য ভাল সময়। ম্যালের কাছেই সামান্য উচু অবজারভেটরি হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার ভাল ভিউ পাবেন।

ঘুরতে ঘুরতে দেখে নিন রাজভবন, হিমালায়ন মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, পদ্মজা নাইডু জিওলোজিকাল পার্ক। এখানে রেড পান্ডা সহ হিমালয়ের নানা প্রাণীর দেখা পাওয়া যায়। ম্যাল থেকে নামতে শুরু করলেই নানা ধরনের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। ঢাকা দেওয়া পর্সেলিনের চায়ের কাপ থেকে শুরু করে সোয়েটার, ছাতা, ব্যাগ কম্বল ও আরও কত কি। তবে
দরদাম করে নিতে হবে।

টাইগার হিলে সূর্যোদ্বয় দেখার জন্য বেরোতে হবে খুব ভোরে। হোটেলে বলে রাখলে গাড়ীর ব্যবস্থা করে দেবে। দর্জিলিং গেলে টয়ট্রেনে জয় রাইড মিস করবেন না। ঘুম মনাষ্ট্রিও বাতাসিয়া লুপ দেখতে ভালই লাগবে। এছাড়া দেখতে পারেন রক গার্ডেন, গঙ্গামায়া পার্ক, প্রিন্স প্যাগোডা, লয়েডস্ বোটনিক্যাল গার্ডেন। নির্জন পথ বেয়ে চলতে চলতে চোখে পড়বে লাল রডোডেনড্রনে ঢেকে আছে বাড়ি, ঘর, পথ, রেলিং।

ম্যালে সব সময় পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। এখানে ঘোড়ার পিঠে চড়ে ছবি তুলতে পারেন, ম্যালের ওপারেই বহুবছরের ঐতিহ্যময় নাথমলস এর চায়ের দোকান। কেনাকাটা থাকলে সেরে নিতে পারেন এখান থেকে, বাশের ট্রে, হাতে বোনা টেবিল ম্যাট, বিভিন্ন প্রকার আচার আর খাটি মধু। ম্যালের কাছেই গান্ধী রোডে কুংগা রেস্তোরাতে খাবারের স্বাদ নিতেই পারেন। নুডুলস দেওয়া ভাগথুক কিংবা থ্যাংথুক স্যুপের টেষ্ট নিতে ভুলবেন না।

সময় থাকলে ল্যাডেন লা রোডে হেডেন হল যেতে পারেন। বহু বছরের পুরোনো এই প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের সোস্যাল প্রজেক্ট। প্যারামেডিকেল ট্রেনিং মাদার অ্যান্ড চাইল্ড প্রোগ্রাম, গার্ল, চাইল্ড স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ও আরো নানা ধরনের সমাজ কল্যানমূলক কাজ করে চলেছেন এরা। এইসব মেয়েদের তৈরি মালা, ব্যাগ ও আরও নানা ধরনের জিনিস কিনতে পারেন এখান থেকে। হেডেন হল থেকে আর একটু এগোলেই দারুন এক কিউরিও শপ। একবার ঢুকলে কিছু না কিনে বেরিয়ে আসা মুসকিল। তিব্বতি শু কিনতে পারেন এখান থেকে।

শ্যাভেন্টার্সে ব্রেকফাষ্ট করতে ভুলবেন না। ম্যাল থেকে একটু দূরে নিভৃতে যদি নিজের মতো করে থাকতে চান তাহলে রিভলভার এ থাকতে পারেন। একেবারে নিশ্চিন্তে যদি বিশ্রাম করতে চান বা গান শুনতে চান বা বই পড়তে চান তাহলে যেতে পারেন বিটলস থিমড লজ অ্যান্ড রেস্তোরায়।

ফ্লাইটে গেলে বাগডোরা হয়ে সেখান থেকে গাড়িতে দার্জিলিং যেতে পারেন। বাগডোরা থেকে দার্জিলিং ৯৪ কি.মি.।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com