চলুন যাই মায়াদ্বীপে

আজ থেকে প্রায় শত বছর আগে মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা অপূর্ব এক দ্বীপের নাম মায়াদ্বীপ। ঈশা খাঁ যেখানে একসময় বাংলার রাজধানী স্থাপন করেছিলেন, সেখান থেকে নদীপথে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মায়াদ্বীপ। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে চমৎকার এ দ্বীপ নুনেরটেক নামে বেশ পরিচিত।

মেঘনার জলে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করা যায় এই দ্বীপে। এ ছাড়া প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখার অনুভূতি পাওয়া যায় এই দ্বীপে। আর তাই প্রকৃতির টানে দূরদূরান্ত থেকে বহু পর্যটক ছুটে আসেন এই দ্বীপে। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, বর্ষাকালে দ্বীপটির অস্তিত্ব থাকে পানির নিচে। তখন শুধু দ্বীপটির খানিক অংশ ভেসে থাকে মেঘনার বুকে। যদিও শুকনো মৌসুমে দ্বীপটি আবারও জেগে ওঠে, আবার পিছু ডাকে হারিয়ে যাওয়া সেই পর্যটকদের। এককথায় বলতে গেলে মেঘনার বুকে জেগে ওঠা অবিশ্বাস্য এক চরাঞ্চল মায়াদ্বীপ। প্রকৃতিপ্রেমিকদের কাছে দ্বীপটিকে এক আদর্শ জায়গা বলা চলে। কেননা, সবুজের সঙ্গে প্রকৃতির মিতালি দ্বীপটিকে দিয়েছে বিশেষ রূপ।

মায়াদ্বীপ যাওয়ার উপায়

মায়াদ্বীপ মূলত নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত। এটি সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক গ্রামে অবস্থিত। রাজধানী থেকে মায়াদ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রথমে যেতে হবে গুলিস্তান। তারপর সেখান থেকে দোয়েল, স্বদেশ অথবা বোরাকের এসি কিংবা নন-এসি বাসে উঠে চলে যান মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা। এ ক্ষেত্রে বাসে জনপ্রতি ভাড়া গুনতে হবে ৩৫ থেকে ৫০ টাকার মতো। তারপর মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা থেকে যেকোনো অটোরিকশা নিয়ে চলে যান বারদী বৈদ্যেরবাজারে। এখানে একটা কথা বলে রাখি, কেউ যদি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যেতে চান, তাহলে যেতে পারেন। কেননা, এখানকার যাতায়াতব্যবস্থা ভালো। তারপর বারদী বৈদ্যেরবাজারে এসে মেঘনা নদীর ঘাটে চলে যান। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুসারে ঘণ্টা চুক্তিতে (২০০ টাকা) কিংবা দিন চুক্তিতে (১২০০ টাকা) একটি নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে যাত্রা করুন মায়াদ্বীপের উদ্দেশে। এ ক্ষেত্রে মায়াদ্বীপ পৌঁছাতে সময় লাগবে ২০-২৫ মিনিটের মতো।

কিছু কার্যকর টিপস

মায়াদ্বীপে সময় কাটানোর ইচ্ছে থাকলে কিছু শুকনো খাবার সঙ্গে নিয়ে নিন। আর হ্যাঁ, অবশ্যই বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে নেবেন। কারণ, দ্বীপে কোনো প্রকার খাবার পাবেন না। তবে মায়াদ্বীপে আসার আগে বারদী বৈদ্যেরবাজারেই আনুষঙ্গিক সবকিছু পেয়ে যাবেন। মায়াদ্বীপ ভ্রমণে কয়েকজন একত্রে যাওয়াটাই উত্তম।

যা করবেন না

১. অপরিচিতদের দেওয়া যেকোনো খাবার পরিহার করুন।

২. কোনোভাবেই নদীর পানি পান করবেন না।

৩. পরিবেশ রক্ষার্থে দ্বীপে ও নদীর পানিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন। সম্ভব হলে অন্যকেও এ বিষয়ে সচেতন করুন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সর্বদা এগিয়ে আসুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: