এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত থাইল্যান্ড। দেশটি কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, মালয়েশিয়ার সঙ্গে সংলগ্ন। থাইল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে রয়েছে থাইল্যান্ড সাগর, পশ্চিম দক্ষিণ সীমান্তে আন্দামান সাগর। দেশটির উপকূলরেখার দৈর্ঘ্য ২৭০৫ কিলোমিটার। আয়তন ৫ লাখ ১৩ হাজার ১শ ১৫ বর্গকিলোমিটার। পুরো দেশটি সমতলভূমি বলা যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে সমতল এবং উপত্যকার পরিমাণ পুরো আয়তনের ৫০ শতাংশেরও বেশি। ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর কারণে কিছু কিছু পর্বত অঞ্চল ছাড়া সব অঞ্চলের তাপমাত্রা অনেক বেশি। গড় তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
থাইল্যান্ডের জনসংখ্যা ৬ কোটি ৭৪ লাখ। দেশটিতে ৩০টিও বেশি জাতির মানুষ আছে। থাই জাতির লোক মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশেরও বেশি। ৯৪ শতাংশ লোক বৌদ্ধধর্মের অনুসারী। থাই ভাষা দেশটির জাতীয় ভাষা। থাইল্যান্ডকে মধ্য, দক্ষিণ, পূর্ব, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভাগ করা হয়। পুরো দেশে ৭৬টি প্রদেশ আছে। রাজধানী ব্যাংকক। মুদ্রা থাই বাথ।
থাইল্যান্ডের দেখার মতো বেশ কিছু জায়গা রয়েছে।
রাজধানী ব্যাংকক: গ্র্যান্ড প্রাসাদ, ইরাওয়ান( Erawan), ভাসমান বাজার (Floating market) ঘুরে দেখার মতো স্থান। বৌদ্ধধর্মের পবিত্র উপভোগ করতে পারেন।
ছিয়াং মাই: হাতির পিঠে চড়ে বনাঞ্চল অতিক্রম করা যায়। পুরনো সিটিতে দেখতে পারে। গোলাপি ফুলের সুগন্ধে আপনি বিভোর হয়ে যাবেন।
ফুকে দ্বীপ: সার্ফিং, স্নোরকেলিং (snorkeling), সূর্যালোকে সমুদ্রসৈকতে বিশ্রাম নিতে অসাধারণ লাগবে।
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল: পপি ফুল অপরাধীদের স্বর্গ। তবে এতে বৈশিষ্ট্যময় সাংস্কৃতিক দৃশ্যের কারণে অনেক ভ্রমণ করতে পারেন।
পারচিনবুরি (Prachinbur): সেখানে রয়েছে বিশাল বড় বড় গাছ। এসব গাছ দেখার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
পার্থিয়া: তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পরিবেশনা, হাতি ও সমুদ্রসৈকতের জন্য বিখ্যাত। এখানে থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বৈশিষ্ট্যময় কিছু উপাদান রয়েছে।
হুয়া হিন: নীল আকাশ পরিচ্ছন্ন সমুদ্র, হালকা হাওয়ায় গল্ফ খেলা দারুণ জমে এখানে।
সুমেই দ্বীপ: হালকা টেউয়ের সাথে প্রজাপতি ওড়ে। দারুণ সে দৃশ্য।
হাতি থাইল্যান্ডের প্রতীক এবং থাই জনসাধারণ হাতি নিয়ে গৌরব বোধ করেন। হাতি থাইল্যান্ডের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ধর্ম, অর্থনীতিসহ নানা খাতে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। থাই জনসাধারণ হাতি নিয়ে গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেন। থাইল্যান্ডের ওয়াট ফু মন্দিরে হাতির মূর্তি ও বৌদ্ধমূর্তি একই টেবিলে রাখা হয়েছে। মানুষ তাদের কাছে প্রার্থনা কর! থাইল্যান্ডে হাতি নিয়ে অনেক লোকগাথা, কিংবদন্তি, উপন্যাস, ছবি ও ভাস্কর্য- এমন কি প্রবাদ রচনা করা হয়েছে। হাতির মূর্তি থাইল্যান্ডে যেখানে সেখানে দেখা যায়। গৃহপালিত হাতি মানুষের কাজে লাগে। রাস্তা তৈরি, ভারি জিনিস টানাটানিসহ নানা কাজে হাতির প্রয়োজন হয়। অতীতে যুদ্ধে হাতি ব্যবহৃত হতো। তাই থাইল্যান্ডকে ‘সাদা হাতির দেশ’ বলা হয়।
টিপস: থাইল্যান্ড একটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষের দেশ। সেখানে যে কোনো আকারে বৌদ্ধ মূর্তিকে সম্মান করতে হয় এবং তার ক্ষতি করা যায়না। ধর্মীয় স্থানে যাওয়ার সময় জুতা ও টুপি পরা যাবে না।
থাই মানুষ রাজ-পরিবারকে খুব সম্মান করে। সেজন্য যারা থাইল্যান্ড ভ্রমণ করতে যান। তাদের রাজা, রানী ও অন্যান্য রাজকীয় সদস্যদের সম্মান করতে হয় এবং রাজকীয় পরিবারের সদস্য নিয়ে অপবাদ ও নাম বিকৃত করা যাবে না।