ছিয়াং মাইয়ের আঞ্চলিক ভাষা এবং চীনের ইয়ুননান প্রদেশের সিশুয়াংপাননা’র ভাষা একই। কারণ, একসময় এই দু’টি অঞ্চল এক শাসকের অধীনে ছিল।
বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা:
ছিয়াং মাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সি বা শাটল বাসে করে মূল শহরে যেতে ১৫ মিনিট লাগে।
ছিয়াং মাই শহরে হলুদ রঙের বাসের পাশাপাশি রিকশা, টুকটুক ও ট্যাক্সি রয়েছে। শহরে টুকটুকের ভাড়া সাধারণত ১০ থাই বাথ। বাসের চেয়ে এটি বেশ সুবিধাজনক। দিন হিসেবে ভাড়া করলে ৩০০ বাথের মতো লাগবে টুকটুকে। তখন আপনি টুকটুকে চড়ে শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
পর্যটনের শ্রেষ্ঠ সময়:
ছিয়াং মাইয়ের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। ছিয়াং মাই-এ ভ্রমণের স্বর্ণ সময় হচ্ছে প্রতি বছরের নভেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত। এপ্রিলে জাঁকজমকপূর্ণ পানি ছিটানো উত্সব অনুষ্ঠিত হয় ।
দই সুথেপ পাহাড় ও ওয়াট ফ্রা থাট
দই সুথেপ পাহাড়, পশ্চিম ছিয়াং মাইয়ের ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৬৬৭ মিটার উঁচু। ছিয়াং মাইয়ের সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতীক যেন এই পাহাড়।
ওয়াট ফ্রা থাট দই সুথেপ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। ১৩৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। চীনা ভাষায় শুয়াং লোং সি অর্থাত্ দুটো ড্রাগন মন্দির। কারণ, মন্দিরের প্রবেশদ্বারের দু’পাশে ৫শ’ মিটার লম্বা বিরাট ড্রাগন খোদাই করা আছে। মন্দিরে ১৬ শতাব্দীতে নির্মিত একটি স্বর্ণ টাওয়ার আছে। টাওয়ারে বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত কিছু জিনিস আছে। তাই একে পবিত্র স্থান হিসেবে গণ্য করা হয়। ছিয়াং মাই রাজবংশের বিভিন্ন সম্রাট মন্দিরটির প্রতি খুবই ভক্তিশ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন। তারা এখানে নিয়মিতভাবে ধর্মীয় আচার পালন করতেন। এ ছাড়া, প্রতি বছরের জুন ও জুলাই মাসে এখানে বুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মহাসম্মেলন আয়োজিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এখানে আসেন
হাতি সাফারি:
থাইল্যান্ডের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে হাতির অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। হাতি শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো তা নয়, সাদা হাতি ছিল রাজার প্রতীক। থাইল্যান্ডের প্রায় প্রতিটি স্থানেই হাতি দেখা যায়। বিশেষ করে ছিয়াং মাইয়ে আপনি হাতির সাথে ছবি তুলতে পারবেন, হাতির গায়ে হাতও বুলাতে পারবেন।
থাই মাসাজ ও স্পা:
থাইল্যান্ডে মাসাজ ও স্পা কোনো বিলাসিতা নয়। এগুলো প্রয়োজনীয় থেরাপি। ছিয়াং মাইয়ের সবই জায়গায় মাসাজ ও স্পা’র ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকি বাজার বা রাস্তার দু’পাশে সারি সারি আসন পাতা আছে দেখতে পাবেন। সেখানে তুলনামূলকভাবে কম দামে মাসাজ সেবা দেওয়া হয়।
জঙ্গল ফ্লাইট:
জঙ্গলের ওপর দিয়ে যাত্রা। এটাই জঙ্গল ফ্লাইট। এ যাত্রাপথের দৈর্ঘ্য ৪ কিলোমিটার। এ সময় পর্যটকরা ৩৪টি গাছের উপরে পাতা প্ল্যাটফর্মের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারেন এবং জঙ্গলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। যাত্রাপথের স্থান ৫০ মিটার থেকে ৩শ’ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।
ছিয়াং মাইয়ে তিনটি বিখ্যাত নৈশকালীন বাজার বা নাইট মার্কেট আছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় প্রাচীন নগরের পূর্ব দিকে ছাং খান রোডে এই বাজার বসে। শনিবার সন্ধ্যায় প্রাচীন নগরের দক্ষিণ দিকে ছিয়াং মাই গেটের দক্ষিণ ওয়ালাই রোডে স্যাটারডে মার্কেট বা শনিবারের বাজার বসে। আর রোববার সন্ধ্যায় Tha Pae Gate থা পা-ই গেটের নিকটবর্তী স্থানে বসে সানডে মার্কেট বা রোববারের বাজার। এসব বাজার বা মার্কেটে থাইল্যান্ড বা ছিয়াং মাই’র বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্যময় জিনিস পাওয়া যায়।
রুবি/তৌহিদ