দু’মাস ধরে শতকের ঘরে ঘুরছে আর্জেন্টিনার মূল্যস্ফীতি। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে নিত্যপণ্য। প্রতিনিয়তই কমছে দেশটির মুদ্রার মান। এদিকে খরার কারণে দেশটির রপ্তানি আয় কমতে পারে ৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত। এতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেতে রিজার্ভে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা না থাকার শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না আর্জেন্টিনার মূল্যস্ফীতি। মার্চে লাতিন দেশটিতে সূচকটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪.৩ শতাংশে যা তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুধু গেল মাসেই আর্জেন্টিনার মাসিক মূল্যস্ফীতির হার ছিলো ৭.৭ শতাংশ; যা ২১ বছরের মধ্যে এক মাসের হিসেবে সবচেয়ে বেশি।
লাতিন পরাশক্তিদের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রধান প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য। শুধু গত মাসেই দেশটিতে খাদ্যের মূল্য বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে দেশটির সাধারণ জনগণের।
আর্জেন্টিনার একজন নাগরিক বলেন, প্রতি সপ্তাহে আমি বাজার করতে এসে দেখি, খাদ্যের দাম বাড়ছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।
আরেকজন বলেন, গত বছর যেখানে আমি সঞ্চয় করতে পারতাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ, সেখানে এ বছর এটি শূন্যে নেমে গেছে।
মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকায় কমছে আর্জেন্টাইন মুদ্রার মান। এক বছরের ব্যবধানে পেসোর মান কমেছে ১২ শতাংশ পর্যন্ত। বর্তমানে ১ ডলারের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ২১৩ আর্জেন্টাইন পেসো যা দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন।
৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার কবলে বুয়েন্স আইরেস। এতে করে দক্ষিণ আমেরিকার শস্যভাণ্ডার খ্যাত দেশটির কৃষিখাতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। আইএমএফের আশঙ্কা, এমন অবস্থায় বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ সয়াবিন ও ভুট্টা উৎপাদনকারী দেশটির রপ্তানি আয় কমতে পারে ৫০০ কোটি ডলার পর্যন্ত।
বর্তমানে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে মাত্র ৪৪০ কোটি ডলার। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পেতে বছরের শেষ নাগাদ রিজার্ভের পরিমাণ ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। তবে খরার মধ্যে এই শর্ত পূরণের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তাই লাতিন দেশটির অর্থনীতির দুর্দশা আরো দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার শঙ্কা বিশ্লেষকদের।