সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন

ঘুরে আসুন সিলেট ও শ্রীমঙ্গল

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪

পীর-আউলিয়াদের মাজারের জন্য পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে সিলেটের জনপ্রিয়তা বহু আগে থেকে। এর সঙ্গে এই জেলায় অবস্থিত ছোট-বড় অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন স্থানের সৌন্দর্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে সারা বছর।

সাদা পাথর
সাদা পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা পানির স্রোতে এখানে শিহরণ জাগে শরীরে। শহুরে যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পেতে এখানে ছুটে আসেন পর্যটকেরা। পথে যেতে যেতে দূর থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য মন কাড়বে আপনার। প্রচণ্ড গরমে সাদা পাথরের ঠান্ডা পানিতে পা ভেজালেই অনুভব করবেন অন্য রকম মুগ্ধতা।

উৎমা ও তুরুং ছড়া
উৎমা ও তুরুং ছড়া একই এলাকায় অবস্থিত। উৎমা ছড়ায় গেলে ১ কিলোমিটার দূরে দেখা মিলবে তুরুং ছড়ার। জায়গা দুটিই ভারতের সীমান্তঘেঁষা। ভারত থেকে আসা ছড়ার ঠান্ডা পানি পর্যটকদের সতেজ করে মুহূর্তেই।

রাতারগুল
সিলেটের গোয়াইনঘাটে অবস্থিত দেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন। প্রকৃতি এখানে কতটা সুন্দর ও সবুজ, নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এখানকার গাছপালা বছরে চার থেকে সাত মাস পানির নিচে থাকে।

জাফলং সিলেটের পুরোনো ও জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। দৃষ্টির ওপারে ভারতের উঁচু পাহাড়-ঝরনা আর এপারের স্বচ্ছ জলধারা নিমেষে মন কেড়ে নেয় পর্যটকদের। জাফলংয়ে এলে বেশ কয়েকটি জায়গা একসঙ্গে ঘোরা যায়। পথিমধ্যে পড়ে শ্রীপুর চা-বাগান, ইকোপার্ক। চা-বাগানের মনোরম দৃশ্য যে কারও মন কাড়বে সহজে। ইকোপার্কে মিলবে নানা প্রজাতির পশুপাখির দেখা। সিলেটের অন্যান্য ভ্রমণ গন্তব্য হলো পাথরের বিছানাখ্যাত বিছনাকান্দি, অনিন্দ্যসুন্দর গ্রাম পান্তুমাই, লালাখাল, রাংপানি, মনোহর লোভাছড়া, উপমহাদেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম চা-বাগান মালনীছড়া।

যেহেতু সিলেটে পর্যটনকেন্দ্রের সংখ্যা বেশি, তাই একসঙ্গে সব জায়গা দেখতে চাইলে হাতে সময় নিয়ে যেতে হবে। ঢাকাসহ দেশের সব প্রান্ত থেকে সড়ক, রেল ও আকাশপথে সিলেটে যাওয়া যায়। হাওর, বিল, টিলা আর সজীব প্রকৃতির জন্য বিখ্যাত শ্রীমঙ্গল। চা-বাগানের জন্য বিখ্যাত হলেও এখানে আছে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য, বিল ও হাওর।

শ্রীমঙ্গলে রয়েছে হাইল হাওর ও বাইক্কা বিল। শীতে অতিথি পাখি দেখার দারুণ জায়গা এগুলো। শ্রীমঙ্গলের পরিচিতি মূলত চা-বাগানের জন্য। ছোট-বড় মিলিয়ে ৪২টি চা-বাগান আছে এখানে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম দৃষ্টিনন্দন দার্জিলিং টিলা। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতি রক্ষায় নির্মিত বধ্যভূমি দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের পদচারণে সব সময় মুখর থাকে।

পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে নীলকণ্ঠ টি কেবিন। এখানে জনপ্রিয় সাত রঙের চা পাওয়া যায়। ব্যক্তিমালিকানায় নির্মিত সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা রয়েছে। এখানকার বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ জোগায়। এ ছাড়া হাইল হাওর, গরম টিলা, রাবারবাগান, মণিপুরিপাড়া, উঁচু-নিচু সবুজ চা-বাগান এবং ইট-পাথরের পাশাপাশি বাঁশ, বেত, ছন ও মাটির দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য রিসোর্ট আছে শ্রীমঙ্গলে। সারা বছর পর্যটকেরা শ্রীমঙ্গলে এলেও শীত ও বর্ষা মৌসুমে এর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।

কীভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সড়কপথে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে যাওয়া যায়। ট্রেনে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে শ্রীমঙ্গলে যাওয়া যায়।

থাকার ব্যবস্থা
পর্যটকদের আরাম-আয়েশ ও থাকা-খাওয়ার জন্য শ্রীমঙ্গলে গড়ে উঠেছে শতাধিক হোটেল ও রিসোর্ট। সময় ও সুযোগ বুঝে অনেক রিসোর্টের মালিক বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেন। শ্রীমঙ্গলে পাঁচ তারকা রিসোর্ট থেকে শুরু করে মাটির ঘরের কটেজ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে উপজেলার রাধানগর গ্রামে। এখানকার রিসোর্টগুলোতে এক রাতের জন্য থাকতে হলে এক হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত গুনতে হবে। তবে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে ভালো কটেজ পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com