বলকান অঞ্চলে অবস্থিত ক্রোয়েশিয়া ইউরোপের পর্যটনসমৃদ্ধ দেশ। ১৯৯০ সালে দেশটি স্বাধীন হয়। ক্রোয়েশিয়ায় রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান। এসব ঐতিহাসিক স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আজ আপনাদের জানাবো। আসুন জানা যাক-
১. কর্কা ন্যাশনাল পার্ক
ক্রোয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় ডালমাটিয়া অঞ্চলে কর্কা ন্যাশনাল পার্ক অবস্থিত। মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে যান পর্যটকরা। এখানে অনেক বন্য প্রাণী রয়েছে। এসব বন্য প্রাণী দেখার জন্য মানুষ এখানে আসেন। এই পার্ক কর্কা নদীর তীরে অবস্থিত। কর্কা ন্যাশনাল পার্ক অনেক জনপ্রিয় একটি জায়গা।
ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর জাগরেব। এই শহরে অভিজাত ভবন, ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ক্রোয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই শহরটিতে বসতি গড়ে ওঠে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে। বর্তমানে এটি কসমোপলিটন শহর হিসেবে মানুষের কাছে। এই শহর উপরিভাগ ও নিম্নভাগ দুই ভাগে বিভক্ত। শহরের উপরিভাগে রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপনা, সুশোভিত গীর্জা, টাওয়ার এবং অভিজাত ভবন।
৩. কর্কুলা
উচ্চবিত্ত ও উচ্চাভিলাষী পর্যটকদের জন্য কর্কুলা শহর উপযুক্ত একটি জায়গা। এখানে অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন পাতাবাহার গাছ রয়েছে যা পথচারীদের মুগ্ধ করে থাকে। এছাড়া এই শহরে দোকান, রেস্তোরাঁ ও হোটেল রয়েছে। রয়েছে সমুদ্রসৈকতও। মূলত সমুদ্রসৈকতের জন্য এটি বিখ্যাত। গ্রিক ও রোমান যুগে নির্মিত বহু স্থাপনা রয়েছে এই শহরে।
৪. পুলা
ইস্ট্রিয়া উপদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে রয়েছে এই শহর। পুলা শহর পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত জায়গা। এই শহরে রোমান যুগের অসংখ্যা স্থাপনা রয়েছে। পুলা শহরের প্রধান আকর্ষণ প্রথম শতকে নির্মিত রোমান অ্যাম্ফিথিয়েটার। এছাড়া এই শহরে রোমান স্থাপত্যে নির্মিত অসংখ্য মন্দির রয়েছে।
৫. জাদার
তিন হাজার বছরের পুরনো জাদার শহর ইতিহাসসমৃদ্ধ। ইতিহাসপ্রেমী পর্যটকরা এই শহরের সৌন্দর্যে বিমোহিত হন। এই শহরের প্রাণকেন্দ্রে অসংখ্য রোমান স্থাপনা রয়েছে। রয়েছে অনেক পুরনো গীর্জা। এই শহরের সবচেয়ে পুরনো গীর্জার নাম সেন্ট ডোনাটস চার্চ যা দ্বাদশ শতকে নির্মিত হয়।
৬. রোভিনিজ
রোভিনিজ শহর ক্রোয়েশিয়ার প্রাচীন একটি শহর। প্রকৃতির সৌন্দর্যে ঘেরা এই শহরে দৃষ্টিনন্দন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এই শহরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ভ্রমণে আসেন। মানুষের কাছে এই শহর আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
৭. স্প্লিট
ক্রোয়েশিয়ার দ্বিতীয় বড় শহর স্প্লিট। রোমান স্থাপত্যে নির্মিত দর্শনীয় স্থানগুলোতে সবসময় পর্যটকের ভীড় দেখা যায়। এই শহরকে ভূমধ্যসাগরের ফুল হিসেবে বলা হয়। স্প্লিট শহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা এর ঐতিহাসিক স্থাপনা। এই শহরে অবস্থিত ডায়োকলেশিয়ান প্যালেস ২৯৮ থেকে ৩০৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত হয়েছে।
৮. প্লিটভাইস ন্যাশনাল পার্ক
নৈসর্গিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ প্লিটভাইস ন্যাশনাল পার্ক। এখানে রয়েছে হ্রদ, জলপ্রপাত এবং ঘন অরণ্য। এই পার্কে বিনোদনের সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের জন্য নৌকায় পার্কটি ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
৯. হাভার
আদ্রিয়াটিক সমুদ্রে অবস্থিত একটি দ্বীপ হাভার। হাভার শহরটি ত্রয়োদশ শতকে নির্মিত হয়েছিলো। হাভার শহরে সপ্তদশ শতকে নির্মিত সেন্ট স্টিফেন ক্যাথেড্রাল নামে একটি গীর্জা পর্যটকদের কাছে খুব পছন্দের। এই শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে পর্যটকরা বিমোহিত হয়ে পড়েন।
১০. দুব্রোভনিক
দুব্রোভনিক শহর সমুদ্রসৈকতের জন্য বিখ্যাত। এই শহরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ও সুশোভিত গীর্জা। পর্যটকরা এই শহরকে অনেক ভালোবাসেন। ভালোবাসার টানে পর্যটকরা এই শহরে বারবার ভ্রমণ করে থাকেন।