রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান

  • আপডেট সময় রবিবার, ২ মে, ২০২১

এই গিরিখাতের দৈর্ঘ্য ২৭৭ মাইল এবং প্রস্থে ০.২৫ থেকে ১৮ মাইল। এটি প্রায় ১৮০০ মিটার গভীর। প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট এই গিরিখাত সংরক্ষণে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি প্রায়শই এখানে শিকার ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতেন।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন গঠনের ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া এবং সময় নিয়ে ভূতাত্ত্বিকদের বিতর্ক রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা যায় যে, কলোরাডো নদী এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে কমপক্ষে ১৭ মিলিয়ন বছর আগে। তখন থেকে কলোরাডো নদী তার প্রবাহ এবং ভূমি ক্ষয়ের মাধ্যমে এই ক্যানিয়নের বর্তমান রূপ দিয়েছে। প্রাকৃতিক যে সব বিস্ময় মানুষকে যুগে যুগে মুগ্ধ করেছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন তারই একটি। এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ভূগর্ভস্থ টেকটনিক প্লেটের নানা কর্মকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে আছে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান

এই গভীর গিরিখাতটি, দুই লাখ কোটি বছর আগে কলোরাডো নদী দ্বারা উত্কীর্ণ হয়েছিল; যা প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক আকর্ষণ করে। পর্যটকরা বিমান, রিভার র‍্যাফট, জিপ বা ট্রেনে করে দ্বারা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ঘুরে দেখতে পারেন।

বেশ কিছু জনপ্রিয় স্থান গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেমন, দক্ষিণ রিম সফর, পশ্চিম রিম সফর এবং উত্তর রিম সফর। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের পর্যটকদের অধিকাংশই দক্ষিণ রিম পরিদর্শনে যান; যা অসাধারণ দৃশ্য ও দীর্ঘ পথ ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়। সেখানে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে অনেক বেশি। উত্তর রিমে গাড়িতে করে যেতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। সুতরাং এটি খুব কম পর্যটকই ভ্রমণ করেন।

দক্ষিণ রিমটি গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, উইলিয়ামস ও লাস ভেগাস থেকে গড়ে উঠেছে। পশ্চিম রিম  লাস ভেগাস ও পিচ স্প্রিং থেকে গঠিত হয়। উত্তর রিম অঞ্চল পেজ্ থেকে গঠিত হয়।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে পর্যটকরা, ক্যানিয়নের চারপাশে ও নিচে পদব্রজে ভ্রমণ করেন এবং তার বিশালত্ব দেখে শিউরে ওঠেন। সবচেয়ে রোমাঞ্চকারী দুঃসাহসিক পর্বতারোহীরা পরের দিন পদব্রজে ফেরত্ আসার চেয়ে ক্যানিয়ন বা গিরিখাতের নীচে ফ্যান্টম র‍্যাঞ্চে রাত কাটিয়ে দেন। গিরিখাতের নিচে পৌঁছানো ও ফ্যান্টম র‍্যাঞ্চে রাত্রিযাপনের আরেকটি উপায় হলো খচ্চরের পিঠে চড়ে ভ্রমণ করা। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পরিদর্শনের আরেকটি মজার উপায় হলো হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরে দেখা।

ক্যানিয়ন রিভার অ্যাডভেঞ্চার হলো একটি দারুণ সফরসূচি; যা আপনাকে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন থেকে মনোমুগ্ধকর সূর্যোদয় দেখার সুযোগ করে দেবে। এ সফরের মধ্যে রয়েছে লেক পাওয়েল, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বাঁধ, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান ভ্রমণ। যারা একদিনের ওয়্যাটার র‍্যাফটিং-এর মসৃণ অভিজ্ঞতা নিতে চান, তাদের জন্য কলোরাডো রিভার ফ্লোট ভ্রমণ করা বেশ উপযুক্ত হতে পারে। গ্র্যান্ড ডিসকভারি এয়্যার ট্যুর হলো গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের উপর ৫০ মিনিটের একটি এয়্যার ট্যুর।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান

ইম্পেরিয়াল হেলিকপ্টারে ভ্রমণকালীন, পর্যটকরা চিত্তাকর্ষক কলোরাডো নদী এবং লিটল কলোরাডো নদীর সংযোগস্থল দেখতে পান। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন রেলওয়ে অরণ্য ও পার্বত্য ভূখণ্ডের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ করে। পর্যটকরা পাঁচটি বর্গের আসনের মধ্যে যে কোনওটি সংরক্ষণ বা বুকিং দিতে পারেন; যেমন কোচ, ক্ল্যাব, প্রথম শ্রেণী, অবসার্ভেশন ডোম এবং পার্লার কার। উত্তর ক্যানিয়ন হেলিকপ্টার ভ্রমণ আপনাকে ড্রাগন করিডোর ও মধ্য ক্যানিয়ন অন্বেষণ ভ্রমণে নিয়ে যাবে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সানসেট জিপ্ সফর আপনাকে কৈবাব জাতীয় অরণ্য সফরে নিয়ে যাবে। যেখানে আপনি ঈক, হরিণ ও বন্য জীবজন্তুসহ অন্যান্য প্রজাতির ঝলক দেখতে পাবেন। এ ছাড়াও গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন মিউল ভ্রমণও রয়েছে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান – আ্যরিজোনা সম্পর্কে তথ্যাবলী

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন হল ২৭৭ “রিভার মাইল” লম্বা, ১৮ মাইল  চওড়া এবং এক মাইল গভীর।

বিশ্বের এক অন্যতম প্রাকৃতিক বিস্ময়, গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে গত ১২০০০ হাজার বছর অতীতের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ১৯১৯ সালে একটি জাতীয় উদ্যান হিসাবে মনোনীত হয়েছিল।

পাইউট ভারতীয় উপজাতি ক্যানিয়ন কৈবাবের নামকরণ করেন। শব্দটির অর্থ হল “পর্বত শায়িত” বা “উল্টানো পর্বত”।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান – অ্যারিজোনা কোথায় অবস্থিত?

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অ্যারিজোনা মরুভূমিতে অবস্থিত যা লাস ভেগাস থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার দূরত্ব। আপনি বাস, ট্রেন বা গাড়ির মাধ্যমে ক্যানিয়নে পৌঁছাতে পারেন। দক্ষিণ রিম তিনটি বিমানবন্দরের সাথে সংযুক্ত।যেমন ফোনিক্স স্ক্যাই হারবার, ফ্ল্যাগস্টাফ পাল্লিয়াম বিমানবন্দর বা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বিমানবন্দর। লাস ভেগাস ম্যাকক্যারন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হল উত্তর রিমের নিকটবর্তী বিমানবন্দর। বিমানবন্দর থেকে আপনি একটি ক্যাবও ভাড়া নিতে পারেন। দক্ষিণ রিম, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন রেলওয়ে দ্বারা সংযুক্ত রয়েছে, যা উইলিয়ামস, এ.জেড এবং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, এ.জেড-এর মধ্যে রেল পরিষেবা দিয়ে থাকে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান – অ্যারিজোনা পরিদর্শনের সেরা সময়:

বছরের ৩৬৫ দিনই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান পরিদর্শনে যাওয়া যেতে পারে। তবে তুষার ক্যানিয়নে পৌঁছানোর পর দর্শকরা আর যেতে পারেন না। এ সময় রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। যেহেতু গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন মরুভূমিতে অবস্থিত, তাই তাপমাত্রা চরম পর্যায় যেতে পারে। বিশেষ করে রিমের নিচে। বসন্ত ও শরত্কাল সেখানে যাওয়া কঠিন।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান – অ্যারিজোনা দর্শনের সময়:

দক্ষিণ রিম সারা বছরজুড়ে খোলা থাকে; অন্যদিকে উত্তর রিম ১৫-ই মে থেকে ১৫-ই অক্টোবর পর্যন্ত খোলা থাকে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান – অ্যারিজোনা টিকিট:

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান প্রবেশের জন্য মাথাপিছু ১২ মার্কিন ডলার মূল্যের টিকিট কাটতে হয়। যানবাহনের পার্কিং-এর জন্য ২৫ মার্কিন ডলার খরচ হয়। জাতীয় উদ্যানে প্রবেশাধিকার সাত দিন। কয়েকটি নির্দিষ্ট দিনে উদ্যানে সম্পূর্ণ বিনামূল্য প্রবেশ করা যায়।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান – অ্যারিজোনার আরও তথ্য:

নিকটবর্তী আকর্ষণ: পেট্রিফাইড ফরেস্ট জাতীয় উদ্যান, লাস ভেগাস, হুভার বাঁধ, ব্র্যাইস ক্যানিয়ন জাতীয় উদ্যান এবং জিওন জাতীয় উদ্যান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

Like Us On Facebook

Facebook Pagelike Widget
© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com
%d bloggers like this: