বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
Uncategorized

গ্রিসে পোশাক কারখানা গড়ে তুলছেন বাংলাদেশিরা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পোশাক রপ্তানির জন্য সারা বিশ্বেই বিখ্যাত বাংলাদেশ৷ পশ্চিমা দেশগুলোর পোশাকের দোকানগুলোতে সারি বেঁধে ঝুলানো থাকে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লোগো লাগানো নানান পোশাক। তবে ইরোপের দেশ গ্রিসে দেখা গেল কারখানা গড়ে তুলে পোশাক রপ্তানি করছেন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা।

২৭ বছর আগে ইউরোপের দেশ গ্রিসে এসেছেন বাংলাদেশি অভিবাসী নুরুল আমিন দেওয়ান। আসার পর কয়েক বছর এখানে কাজ করেছেন তিনি। এরপর তার মাথায় আসে পোশাক কারখানা গড়ে তোলার ভাবনা। সেই ভাবনা থেকেই তিনি নেমে পড়লেন কাজে।গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে গড়ে তুললেন ফিমা ফ্যাশনস নামে একটি পোশাক কারখানা।

নুরুল আমিন দেওয়ান বলেন, ‘২৭ বছর আগে আমি গ্রিসে এসেছি। এরপর নিজের পরিশ্রমে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি এই কারখানাটি।’

নুরুল আমিনের এই কারখানাটিতে বর্তমানে প্রায় দেড়শ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। কারখানা পরিদর্শন করে দেখা গেল সারি সারি মেশিন। সেসব মেশিনে দল বেঁধে পোশাক সেলাইয়ের কাজ করছেন শ্রমিকরা।

জানা গেছে, শুধু নুরুল আমিন নন, গ্রিসে এমন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি অভিবাসীই ছোট ও মাঝারি আকারের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন। আর সেই ফ্যাক্টরিগুলোতে কর্মরতদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। বর্তমানে ওই পোশাক কারখানাগুলোয় বেশ কয়েক হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত আছেন।

নুরুল আমিন জানান, ইউরোপের ক্রেতাদের অনেকেই আগে চীন কিংবা ভিয়েতনামে কার্যাদেশ দিতেন, এখন তারা গ্রিসের এসব কারখানা থেকে পোশাক কিনতে চাইছে। এ কারণে এই কারখানাগুলোতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে কাজের চাপ৷ ফলে বাড়ছে শ্রমিকের চাহিদাও। তার মতে, গ্রিসের বাংলাদেশি পোশাক কারখানাগুলোতে এই মুহূর্তে ১০ থেকে ১২ হাজার কর্মীর ঘাটতি রয়েছে।

এদিকে এমন কারখানা গড়ে উঠায় বাংলাদেশ থেকে আসা যেসব শ্রমিক গ্রিসের কৃষিখাতে কাজ করছেন তাদের জন্যও একটি বাড়তি সুযোগ তৈরি হয়েছে। কৃষিজমিতে সারা বছর কাজ থাকে না আর তাই কৃষিখাতে কর্মরতদের অনেকেই বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় এসব কারখানায় কাজ করতে আসেন।

তাছাড়া কারখানার কাজে অন্যান্য খাতের তুলনায় আয়ও বেশ ভালো বলে জানা গেছে। সাত বছর ধরে গ্রিসে আছেন বাংলাদেশি অভিবাসী মোহাম্মদ আসিফ৷ বর্তমানে তিনি নুরুল আমিনের পোশাক কারখানায় কর্মরত।

তিনি জানান, দৈনিক ১২ ঘণ্টা পরিশ্রম করে তার মাসিক আয় এক থেকে দেড় লাখ টাকা। চলাফেরা বাবদ তার মাসিক খরচ হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আর বাকি টাকা তার সঞ্চয় হয়।  বছরের পর বছর ধরে গ্রিসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অনেকেই ভুগছেন বৈধ কাজগপত্রের সংকটে৷ দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তাদের।

এথেন্সের ফিমা ফ্যাশনস নামের পোশাক কারখানার বেশ কয়েকজন শ্রমিকের সাথে কথা বলেও এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই বছর ধরে পোশাক কারখানাটিতে কাজ করেন বাংলাদেশের অভিবাসী আলমগির হোসেন৷ তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

আলমগিরের অভিযোগ, নতুন পাসপোর্টের জন্য বাংলাদেশে দূতাবাসে আবেদন করে তিনি মাসের পর মাস ধরে ঘুরছেন৷  তার কথায় ‘দুই বছর ধরে পাসপোর্টের জন্য ঘুরতেছি আমি। না আমার আবেদন জমা হইতাছে, না আমার কিছু হইতাছে। আমি জমা দিয়া আসছি দরখাস্ত, সেই দরখাস্ত হারায়ে ফেলছে। এখন আমি আবার দরখাস্ত জমা দিয়ে আসছি। এখন বলছে, আপনি অপেক্ষা করেন।’

আলমগিরের অভিযোগ, পাসপোর্ট না থাকায় তিনি দেশেও টাকা পাঠাতে পারছেন না। সেইসাথে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার ভয় তো আছেই৷ আর পাসপোর্ট না থাকায় দেশেও যেতে পারছেন না তিনি।

পাসপোর্ট পেতে গিয়ে বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিড়ম্বনার অভিযোগের বিষয়টি নাকচ করে দেননি গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ। তবে তিনি জানান, এ বিষয়ে দূতাবাসের কিছু করার নেই কেননা পাসপোর্ট বাংলাদেশ থেকে প্রদান করা হয়।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com