বাংলাদেশের ট্রাভেল সেক্টরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ভ্রমণপ্রিয় মানুষের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি নতুন নতুন প্ল্যাটফর্ম ট্রাভেলারদের ভ্রমণকে করে তুলছে আরও সহজ ও সুবিধাজনক। এমনই একটি প্ল্যাটফর্ম গো যায়ান।www.gozayaan.com বর্তমানে বিমানের টিকিট, ভিসা ও দেশীয় প্যাকেজ ট্যুরের জন্য দেশের অন্যতম সেরা প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি।
রিদওয়ানের পরিবারের প্রায় সবাই আমেরিকায় থাকলেও নিজে কখনও দেশের বাইরে প্রতিষ্ঠিত হবার কথা চিন্তা করেননি। দেশে পড়াশোনা করে, দেশেই কিছু একটা করতে চেয়েছেন সবসময়। বন্ধুরা, পরিবারের অনেকেই বলতো দেশে তো কিছুই নেই, দেশে থেকে লাভ কি? কিন্তু রিদওয়ানের বক্তব্য ছিল, দেশে যেহেতু কিছুই নেই তাই অনেক কিছু করার সুযোগ আছে।
রিদওয়ান বলেন, বুয়েটে সরকারি সুবিধা নিয়ে-মানুষের টাকায় পড়েছি তাই দেশের মানুষের জন্য কিছু করবো এই প্রত্যাশা ছিল শুরু থেকেই। ২০০৮ সালে বুয়েটের তৃতীয় বর্ষে থাকা অবস্থায় বন্ধু সুমিত সাহাকে নিয়ে শুরু করি ডিজিটাল এজেন্সী ‘অ্যানালাইজেন’।
প্রথম দিকে সফলতা না পেলেও ২০১০ সালে ফেসবুক জনপ্রিয় হতে শুরু করলে আমরা ফেসবুকে অ্যাপ বানানো শুরু করি। গত ১০ বছরের যাত্রায় ‘অ্যানালাইজেন’ এখন দেশের অন্যতম সেরা ডিজিটাল এজেন্সী। এই কোম্পানিতে এখন ১৫০জনের টিম নিয়ে নানা ডিজিটাল সেবা প্রদান করছি। দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর ও মায়ানমারেও রয়েছে অ্যানালাইজেন এর অফিস এবং তা ক্রমে আরও ছড়িয়ে পড়ছে।
“নানা সেক্টর নিয়ে পড়াশোনা করে, ডাটা কালেকশন করে, ডাটা নিয়ে স্ট্যাডি করে মনে হয়েছে ট্রাভেল সেক্টর আমার জন্য একটি দারুণ সেক্টর হতে পারে। বাংলাদেশে ক্রমে ক্রমে ভ্রমণপ্রিয় মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে, ফলে এই বিশাল সংখ্যাকে ভাল সার্ভিস দিতে পারলে তাদেরকে যেমন সাহায্য করা যাবে, তেমনি ট্রাভেল সেক্টরে একটি দেশীয় ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা পাবে। ”
২০১৭ সালে আগষ্ট মাসে যাত্রা শুরু করে গো যায়ান । যাত্রা শুরুর পরেই দারুণ সাড়া পেতে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা এই প্ল্যাটফর্মটিকে আপন করে নিয়েছেন। তবে শুরু থেকেই চ্যালেঞ্জ ছিলো মানুষ অনলাইনে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিমানের টিকিট কিনতে আগ্রহী হবে কি না। প্রথম দিকে এই সমস্যায় পড়লেও ক্রমে ক্রমে ক্রেতাদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরী হয়েছে। বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোর সাথে কাজ করা শুরু করেছে প্ল্যাটফর্মটি।
রিদওয়ানের মতে, গো যায়ান শুরু থেকেই ক্রেতাদের সুবিধা কথা চিন্তা করেই এগিয়ে গিয়েছে। ট্রাভেল এজেন্সীর উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ক্রেতাদের হাতেই টিকিট বুকিংয়ের সুবিধা দিচ্ছে প্ল্যাটফর্মটি। এর ফলে নিজের সুবিধামতো নানা অফারসহ সঠিক দামে বিমানের টিকিট কাটতে পারছে বাংলাদেশীরা। এছাড়া ডলার খরচের ক্ষেত্রে একটা লিমিটেশন আছে, যারা নিয়মিত ট্রাভেল করেন তাদের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে ডলার দিয়ে কিনতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়। আর সকলের কাছে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডও থাকে না।
এই সমস্যার একটি দারুণ সমাধান গো যায়ান। বাংলাদেশী টাকা বা কার্ড দিয়ে যেকোন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট টিকিট করার সুবিধা দেওয়া শুরু করে প্ল্যাটফর্মটি, ফলে অল্প সময়েই দারুণ সাড়া পেতে শুরু করে। আগে যেখানে একটি বিমানের টিকিট করতে অনেক সময় লাগতো সেখানে গো যায়ানে ৫ মিনিটের মধ্যে একটি টিকিট কনফার্ম করা যায়। ফলে মূল্যবান সময় বেঁচে যাচ্ছে আর প্রক্রিয়াও হয়েছে একদম সহজ।
দেশের বাইরের যেকোন বিমানের টিকিট, যেকোন দেশের ভিসা সার্ভিস দিচ্ছে গো যায়ান। প্রথম দিকে শুধু এই সুবিধা দিলেও সম্প্রতি দেশের মধ্যেও বিভিন্ন ট্যুর প্যাকেজ দেওয়া শুরু করে প্ল্যাটফর্মটি। ২০১৯ সালে ডোমেস্টিক এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এর অনেক নতুন প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করবে গো যায়ান।
১৯ জনের একটি টিম নিয়ে বনানীর একটি অফিসে এই কর্মযজ্ঞ চলছে। সিইও রিদওয়ান জানালেন, বাংলাদেশে ট্রাভেল সেক্টরটি ক্রমে বড় হলেও এই সেক্টরে কোন ব্র্যান্ড নেই বললেই চলে। গো যায়ানকে তিনি বাংলাদেশের ১ নম্বর ট্রাভেল ব্র্যান্ড হিসেবে দেখতে চান। সকল ভ্রমণ সেবা পাওয়া যাবে গো যায়ানে এবং দেশের সেরা সেরা সার্ভিস প্রোভাইডারদের সাথে নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে দেশের পর্যটন সেক্টরের উন্নতি চান তিনি।
সকল ধরনের সার্ভিস, আপডেট ও যোগাযোগের জন্য ওয়েবসাইট: www.gozayaan.com এবং ফেসবুক পেইজ: www.facebook.com/GoZayaan/ -এ যোগাযোগ করতে পারেন। ০৯৬১২৩৩৩৫৫৫ নম্বরে ফোন করে সকল তথ্য ও বুকিং সুবিধা পেতে পারেন।
লেখা: আহসান রনি