বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতন দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে থাকা গুগলে চাকরি পাওয়াটা সবার কাছে স্বপ্নের মতো। শুধুমাত্র শিক্ষানবীশদেরই বেতন বছরে প্রায় ৮০ হাজার ডলারের মত। ছয় অঙ্কের বেতন দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদেরকে, যে সংখ্যা প্রায় এক লাখ ২০ হাজার ডলারের সমান।
গত কয়েক বছর যাবৎ বাংলাদেশিরাও এই বিশাল প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠানটিতে নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে। মেধার ভিত্তিতে যথেষ্ট যাচাই-বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে তারা উতড়ে যাচ্ছে গুগলের পরীক্ষায়। শামিল হতে পারছে চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় চার হাজার জনশক্তির মধ্যে, যাদেরকে প্রতিবছর খুঁজে বের করা হয় প্রায় ২৫ লাখ আবেদনকারীর মধ্য থেকে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটের সিইও সুন্দর পিচাই এসব বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘এন্ট্রি লেভেল’–এর চাকরি বা গুগলে শুরুর সময়ের চাকরির জন্য কেমন কর্মী খোঁজে সংস্থাটি বা আবেদনকারীদের মধ্যে কী কী খোঁজে গুগল।
সুন্দর পিচাই বলেছেন, গুগল খোঁজে ‘সুপারস্টার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’, তার সঙ্গে প্রয়োজন নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা এবং নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মানসিকতা। গুগলে সৃজনশীলতা ও উদ্বাবনী শক্তিকেও মূল্যবান কিছু মনে করা হয় বলেও জানিয়েছেন পিচাই। এর সঙ্গে বিনা মূল্যে খাবার দেওয়ার বিষয়টিকেও সামনে এনেছেন তিনি।
তার মতে, এটা দলগত ভাবনা তৈরি ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনা জাগিয়ে তুলতে সহায়তা করে। সুন্দর পিচাই নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও তুলেছেন সাক্ষাৎকারে। গুগলে তার শুরুর দিনগুলোতে ক্যাফেটেরিয়ায় অনেকটা সময় কাটাতেন বলে জানান সুন্দর পিচাই। সেখানে কাজসংক্রান্ত নানা আলোচনাও হতো বলে স্মৃতিচারণা করেন সুন্দর পিচাই।
ক্যাফে স্বতঃস্ফূর্ত মিথস্ক্রিয়া এবং নতুন ধারণা বিকাশের ক্ষেত্রে কাজ করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গুগলের এ ধরনের উদ্যোগের সুবিধা খরচের চেয়ে অনেক বেশি। এটি গুগলের সহযোগিতামূলক পরিবেশকে উত্সাহিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এ বছরের জুনের হিসাবে ১ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি কর্মচারী কাজ করছেন গুগলে। সেরা প্রতিভাকে আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে এখনো শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে মার্কিন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানটি। সুন্দর পিচাই বলেন, প্রায় ৯০ শতাংশ চাকরীপ্রার্থী, যারা গুগলে চাকরির অফার পান, তারা তা গ্রহণও করেন। এটি প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে কোম্পানির দৃঢ় আবেদন ও অবস্থানের প্রতিফলন।
শুরুর পর্যায়ের চাকরির (এন্ট্রি-লেভেল) ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থীদের অবশ্যই নিজেদের মধ্যে আলাদা কিছু থাকতে হয়, আলাদা কিছু করতে হয়।
গুগলের সাবেক নিয়োগকারী কর্মকর্তা নোলান চার্চ গণমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডারকে বলেন, চাকরিপ্রত্যাশীদের ভালোভাবে প্রস্তুত হতে হবে। এর মানে হলো শুধু গুগলের মূল্যবোধগুলো বোঝা নয়, বরং কোম্পানির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের নির্দিষ্ট উপাদানগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। চাকরীপ্রার্থীদের নিজেদের আবেগ, সংকল্প এবং নিজেদের পেশাগত সাফল্য অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করার পরামর্শ দেন চার্চ।