নিউইয়র্কের বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটিতে ইফতার মাহফিল আয়োজন এখন জমে উঠেছে। এবছর ইফতার মাহফিলের পর জমজমাট হয়ে উঠছে সেহরী পার্টি। ইফতার পার্টি থেকে এখন তা রূপ নিয়েছে সেহরি পার্টিতে। গত কয়েকবছর ধরে জ্যাকসন হাইটসের কয়েকজন বাংলাদেশী এই সেহরী পার্টির আয়োজন করে আসলেও এভচর তা ভিন্ন রূপ নিয়েছে। আর এজন্য কৃতিত্বের দাবিদার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট আর বৃটিশ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শেফ এবং জনপ্রিয় খলিল বিরিয়ানী হাউজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ খলিলুর রহমান। তিনি গত বছর সেহরী পার্টির আয়োজন করলেও এবছর তার সেহরী পার্টি প্রবাসীদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।
চলতি রমজান মাসের ২৩ মার্চ শনিবার ব্রঙ্কসের খলিল বিরিয়ানী হাউজে প্রথম সেহরী পার্টির আয়োজন করেন শেফ খলিলুর রহমান। সেই পার্টিতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহন তাকে অনুপ্রাণিত কওে, উৎসাহ যোগায়। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দিনের মতে সেহরী পার্টিও আয়োজন করেন শনিবার (৩০ মার্চ)। ভোর রাত ২টা থেকে সেহরী খাওয়ার শেষ সময় পর্যন্ত চলে এই পার্টি। এতে প্রবাসীদের ঢল নামে। খলিল বিরিয়ানী হাউজের দুটি শাখা ছাড়াও বেসমেন্টর সকল আস ছিলো ভরপর। এজন্য সেহরী খেতে আর অনেককে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষাও করতে হয়। অনেকে টেবিল খালি হবার অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কয়েকজন পাকিস্তানীকেও দেখা যায় পার্টিতে। ট্রাই স্টেট থেকেও বেশ কয়েকজন গ্রাহক এসছিলেন এই সেহেরির আস্বাদন নিতে। গরম গরম ভাজা ইলিশ সহ ১৮ পদের রকমারী খাবার খেয়ে রোজাদাররা প্রশংসা করেন খলিলুর রহমানের। নিউইয়র্কে এর আগে এতও মানুষের সমাগম দেখা যায়নি কোন সেহরি পার্টিতে। পার্টির সর্বত্র লক্ষনীয় ছিলো যেন ঈদ উৎসবের আনন্দ।
নিউইয়র্কের বিভিন্ন বাংলা মিডিয়ার সম্পাদক, সাংবাদিক, কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শিল্পী আর প্রবাসীদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষনীয়। অনেকে এসেছিলেন সপরিবারে। সপরিবাওে এসেছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাংলাদেশী-আমেরিকান মীর বাশার।
শেফ খলির জানান, ট্রাই স্টেট নিউইয়র্কর ৫ বরো ছাড়াও নিউজার্সী, কনেকটিকাট ও পেনসিলভানিয়ায় বসবাসরত অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী শনিবারের সেহরী পার্টিতে অংশ নেন। এজন্য তিনি খুব হ্যাপি, খুশী। শুকরিয়া আদায় করেন মহান আল্লাহ তায়ালার। বলেন, সেহরি পার্টিকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোন থেকে বরং সেবার করার লক্ষ্য নিয়েই এই পার্টির আয়োজন।
তিনি জানান, সহকর্মীদের নিয়ে তিনি নিজেই রান্না করছিলেন শনিবারের খাবার। সেহরী খেতে ভোর রাতে কস্ট করে যারা এসেছেন তারা সবাই আমার সম্মানিত মেহমান। তাদের জন্য নিজের হাতে রান্না করে নিজেই সম্মানিত বোধ করছি। আর সবার সাড়া পাওয়ায় আমারও ভালো লাগছে।
খাবারের মধ্যে ছিলো, সাদা ভাত, পোলাও, আলু ভর্তা, লইট্টা সুটকি, চিকেন রোস্ট, চিলি চিকেন, চিকেন উইথ আলু, বিফ ভুনা, খাসির রেজালা, লাউ চিংড়ি, ডাল ইত্যাদি। এছাড়াও ছিলো রাইস পুডিং, দৈ, সন্দেশ ও নানা ধরনের ফলের সমারোহ। সাথে পানি ও ছিল চা। বুফে খাবারের মূল্য ছিল মাত্র ২০ ডলার।