বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন

কেরালার ৫ গন্তব্য

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩

কেরালা ভারত ভ্রমণের সুন্দর প্যাকেজ। কারণ, শুধু বরফের পাহাড় আর বরফ পড়া ছাড়া সবই আছে বা পাওয়া যায় কেরালায়। পাহাড়, নদী, অরণ্য, সমুদ্র, চা-বাগান, আধুনিক শহর, নিখাদ গ্রাম, নারকেলের অরণ্য! একই সঙ্গে ভারতের একটি রাজ্যে প্রকৃতির এত এত আয়োজন আর কোথাও আছে বলে জানা নেই। তাই তো ভারতের সব প্রদেশের মধ্যে শুধু একটি প্রদেশের কথা জিজ্ঞাসা করলে কেরালা আমার প্রথম পছন্দের ভ্রমণ গন্তব্য। আর সেটা যদি হয় বর্ষা-শরতে, তবে কেরালা হয়ে ওঠে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত জায়গা। এ সময় দেখা কেরালার কয়েকটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্যের গল্প বলি।

মুন্নার 
যদি একই সঙ্গে বৃষ্টিমুখর দিনে পেতে চান পাহাড়, অরণ্য আর সবুজের সমুদ্রখ্যাত চা-বাগানের অপার্থিব সুখস্মৃতি, তবে কেরালার মুন্নার হতে পারে আপনার প্রিয় জায়গা। সেখানে একই সঙ্গে সবুজ পাহাড়ের উপত্যকায় থেকে উপভোগ করতে পারবেন বিস্তৃত চা-বাগানের সবুজ। আবার সেই আবাসের অদূরে পাবেন ঘন ও নিখাদ অরণ্যে হারিয়ে যাওয়ার রোমাঞ্চ। সেই সঙ্গে যদি থাকে বৃষ্টিমুখর দিনে একটু আলস্য করার অভ্যাস, তবে মুন্নার হয়ে উঠবে আপনার ভীষণ ভালো লাগার একটা জায়গা। থাকা, খাওয়া, আতিথেয়তা—সবকিছুই এখানে পাওয়া যায় হাতের নাগালে।

বৃষ্টি আর ঝরনাধারা যেন একই সঙ্গে দুই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা! যাঁরা ঝরনাপ্রেমী আর সেই সঙ্গে ভালোবাসেন বৃষ্টির সঙ্গে উত্তাল ঝরনা দেখতে, তাঁদের জন্য আদর্শ জায়গা হতে পারে আথারিপল্লি। ‘বাহুবলি’ সিনেমার সেই বিশাল ঝরনার কথা মনে আছে? সেটি স্থানীয়ভাবে আথারিপল্লি নামে পরিচিত। এ সময় সেই ঝরনা হয়ে ওঠে সবচেয়ে সুন্দর, ভয়ংকর ও রোমাঞ্চকর। কেরালার মূল শহর কোচিন থেকে ত্রিশূর হয়ে এক দিনে গিয়ে ঘুরে দেখে আবার ফিরেও আসা যায় আথারিপল্লি থেকে।

মুন্নারের চা-বাগান। tছবি: লেখকমুন্নারের চা-বাগান। tছবি: লেখক

আলেপ্পি 
নিখাদ গ্রামের সবুজের বুক চিরে, চিরাচরিত ঢঙে, অলস আয়েশি ভঙ্গিতে নদী, খাল, বিল আর তাজা মাছের আস্বাদ পেতে পেতে রিমঝিম বৃষ্টির দিনে ঘুরে বেড়াতে যাঁরা পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য স্মরণীয় এবং আদর্শ জায়গা হতে পারে কেরালার ব্যাক ওয়াটারখ্যাত আলেপ্পি। এর স্নিগ্ধ, সবুজ, নির্জন প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি মনে থেকে যাবে বহুদিন। হাউস বোটে করে আলেপ্পির গ্রামীণ ও অপূর্ব নির্জনতা উপভোগ হতে পারে আপনার জীবনের অন্যতম সুখস্মৃতি।

ওয়ানাডা
পাহাড় নয়, গ্রাম নয়, সমুদ্র নয়, অনেকেই আছেন যাঁদের ভীষণ ভীষণ পছন্দ বৃষ্টিমুখর নির্জন অরণ্য। বৃষ্টির গান, রিমঝিম শব্দ, মেঘমেদুর নিশ্চুপ প্রকৃতি, বুনো চারপাশ, অচেনা পাখির সুর, নিশুতি রাতে বন্য পশুর রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার সঙ্গে দিনভর খোলা জানালা দিয়ে ঘন অরণ্যে ঝরে পড়া বৃষ্টি দেখা, বৃষ্টি ছোঁয়া, বৃষ্টিতে নিজেকে ভেজানো—এসবই পাওয়া যাবে ওয়ানাডায়। বৃষ্টির কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়াও যেতে পারে সেখানে। এসব ভীষণ একাকী সুখ উপভোগ করা বিরল মানুষদের জন্য কেরালার ওয়ানাডা আদর্শ জায়গা। এই জায়গাটা মূলত ঘন অরণ্য আর কফির জন্য দারুণ জনপ্রিয়।

ভারকালা এবং কোভালাম
অনেক তো হলো কেরালার পাহাড়, অরণ্য, ব্যাক ওয়াটার আর সবুজের গল্প। তাহলে আর সমুদ্রপ্রেমীরাই বা কেন বাদ যাবেন কেরালার সমুদ্রের স্বাদ থেকে? সমুদ্রপ্রেমীদের জন্য কেরালায় নিখাদ আর মন পাগল করা আয়োজন করে রেখেছে ভারকালা ও কোভালাম। এই দুটি সমুদ্রসৈকত বেশ কাছাকাছি, কিন্তু দুই রকম অনুভূতি দেবে আপনাকে। যাঁরা বিলাসিতা বাদ রেখে নিখাদ প্রকৃতির মাঝে বসে সমুদ্র উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্য ভারকালা সমুদ্রসৈকত সঠিক জায়গা। কিন্তু যাঁরা সারাক্ষণ শুধু সমুদ্রের পাড়ে বা হেঁটে না বেরিয়ে একটু আয়েশি, একটু বিলাসী সময় কাটাতে ভালোবাসেন, যাঁরা হোটেলরুমের বিশাল খোলা জানালা দিয়ে পাশের সমুদ্রের উত্তাল আয়োজন উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্য কোভালাম স্বর্গসম! এবার সময়, রুটিন, বাজেট আর নিজের ভালো লাগার ওপরে বেছে নিন কেরালার যেকোনো ভ্রমণ গন্তব্য।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com