ছোটবেলা থেকেই সাধারণ জ্ঞানের বইতে পড়তে পড়তে আমাদের মুখস্ত হয়ে গেছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের নাম কেওক্রাডং। আসলে ছাপা অক্ষরে যা দেখি প্রতিনিয়ত তার অনেক কিছুর মতোই এটিও সত্যি নয়, কেউক্রাডং (৩২৩৫ ফুট) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পিক তো নয়ই, বরং হিসেব করতে বসলে ৫ নাম্বারে থাকবে এর অবস্থান। তবে এর ৩৬০ ডিগ্রী প্যানারোমিক ভিউয়ের কল্যাণে নিঃসন্দেহে কেওক্রাডং বাংলাদেশের সুন্দরতম পিক। উল্লেখ্য কেউক্রাডং থেকে দেশের প্রায় সবগুলো উল্লেখযোগ্য রেঞ্জ ও পিক খালি চোখেই দেখা যায়। নিশ্চিতভাবেই ছেলেবেলায় পাঠ্যবইতে কেউক্রাডংয়ের নাম শুনে সবার মনেই কেওক্রাডংয়ে চড়ার সুপ্ত ইচ্ছে জেগেছিলো তাই এবার সুযোগ ইচ্ছাপূরণের।
খরচঃ
ঢাকা থেকে ঢাকা ইনক্লুডিং এভ্রিথিং ৫৭৫০ টাকা
বান্দরবানের রুমা হয়ে যাবো বগালেক। এখন বগালেক পর্যন্ত ঝা চকচকে রাস্তা তাই যে কেউই যেতে পারবেন। আর তারপর বগালেক থেকে তিন ঘন্টা+ ট্রেক করে পৌঁছুবো কেওক্রাডং চূড়ায়। চূড়াতে অবস্থিত লালার কটেজে কাটাবো একটা রাত। দেখবো সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত, মেঘে ঢাকা চারপাশ, আদিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের সারী আর যেহেতু বেছে নিয়েছি কৃষ্ণপক্ষ সেহেতু সারারাত দেখবো তারার মেলা।
যাওয়া ও আসার পথে আমরা কিছু সময় কাটাবো বগালেকে। সমুদ্র সমতল হতে প্রায় ১৭০০ ফিট উপরে পাহাড় চূড়ায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই অত্যাশ্চর্য হ্রদটি। এই হ্রদটি তিনদিক থেকে পাহাড় দ্বারা সম্পূর্ণ আবদ্ধ। বগালেক অদ্ভুত সুন্দর এক পৌরাণিক স্থান। পাকিস্তান আমলে এখানে ছিলো মিজো বিদ্রোহী লালডেঙ্গার আস্তানা। এখন এখানে আছে একটি বম পাড়া৷
আর এই দুই জায়গার মাঝামাঝি দেখনো অপূর্ব সুন্দর চিংড়ি ঝর্ণা। সেখানে এক দফা গা ভেজানো তো হবেই।
এই টাকার মধ্যে পাবেনঃ
৬ বেলা খাবার। ঢাকা-বান্দরবান-ঢাকা নন-এসি রিটার্ণ টিকেট
বাস ও চাদের গাড়ির খরচ
ঢাকা টু ঢাকা গাইড
স্থানীয় গাইড
পাহাড়ী রিসোর্টে থাকার ব্যাবস্থা (পরিষ্কার বিছানা-বালিশ-মশারী থাকে)
কম খরচে আদিবাসী পণ্য কিনতে পারার সুযোগ ও তা বহনে সহযোগিতা
শিক্ষিত ও বন্ধুত্বপূর্ণ ভ্রমণসঙ্গী পাবার নিশ্চয়তা
যা পাবেন নাঃ যে কোন ব্যক্তিগত খরচ।
কি নিতে হবেঃ ইভেন্টের প্যাকিং লিষ্ট রিলেটেড পোষ্ট দেখুন
আমাদের মটোই হচ্ছে প্রমোটিং ইকোট্যুরিজম। সুতরাং কোন ভাবেই পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা যাবেনা। বিস্কুট-চিপস বা অন্যকিছুর প্যাকেট, কোমল পানীয়ের বোতল ডাস্টবিনে ফেলবেন। ডাস্টবিন না থাকলে পরবর্তী বিন পাবার আগ পর্যন্ত ক্যারি করবেন, তবু যত্রতত্র ফেলবেন না। মাদকের তো প্রশ্নই আসেনা এমনকি ধূমপানেও সতর্ক হতে হবে যাতে আপনার ধূমপান অন্যের সমস্যার কারণ না হয়। নারীরা সকল ক্ষেত্রে সমধিকার নয়, বরং অগ্রাধিকার পাবেন।