কুয়াকাটার বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট

শহুরের কোলাহল এবং যান্ত্রিকতা থেকে কিছুদিন দূরে থাকতে চাইলে তাদের জন্য আদর্শ জায়গা হতে পারে ছোট এবং নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। রাজধানী শহর ঢাকা থেকে সড়ক পথে প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার দূরের এই ছোট জায়গাটিতে যাবার সময়ে বেশ কিছু নদী এবং ফেরী পার হতে হয়। যাতায়াত বেশ সময়সাপেক্ষ এবং কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের তুলনায় আকারে ছোট হওয়ায় পর্যটকদের জন্যও বিশেষ সুযোগ সুবিধা কম। তবুও সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত এই কুয়াকাটায় প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের জন্য ভিড় জমে হাজারো পর্যটকের। তাদের রসনা বিলাসের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে নানারকম হোটেল এবং রেস্তোরাঁ। থাকার জন্য তৈরি এসব হোটেল সংলগ্ন রেস্তোরা পর্যটকদের খাবারের জন্য ব্যবহৃত হলেও এর বাইরে কিছু স্থানীয় রেস্টুরেন্টও রয়েছে যা আগত অতিথিদের খাবারের চাহিদা মেটায়।

বাণিজ্যিক শহরগুলো থেকে দূরে অবস্থিত বলে কুয়াকাটায় তেমন কোন ফাস্টফুড কিংবা বিখ্যাত চেইন শপ না থাকলেও স্থানীয় রেস্তোরাঁতে পাওয়া যায় সমুদ্রের তাজা মাছ ও কাঁকড়া। এসব রেস্টুরেন্টে একেবারেই কম খরচে ভোজন বিলাস সেরে ফেলা যায় নিশ্চিন্তে।

কুয়াকাটায় খাবারের ব্যবস্থা

কুয়াকাটার এই ছোট সৈকতটিতে দেখা যায় স্থানীয়রা প্রতিদিনই সকালে এবং বিকেলে জাল এবং ছোট নৌকা নিয়ে মাছ ধরছে। কম দামে যেকোনো মাছ খাওয়ার জন্য আদর্শ জায়গা হতে পারে কুয়াকাটা। বিচে ঘুরতে গেলে চোখে পড়বে অস্থায়ী কিছু দোকান যারা বিভিন্ন দামে সমুদ্র থেকে ধরা মাছ চাহিদা অনুযায়ী গ্রিল বা ভেজে বিক্রি করে।

এসব জায়গায় খাবার আগে দরদাম না করে নিলে ঠকার সম্ভাবনা থাকে। কুয়াকাটা ঘুরতে এলে মানুষের চাহিদার শীর্ষে থাকে এখানকার কাঁকড়া, সাদা রূপচাঁদা, সরষে ইলিশ। স্থানীয় জেলেদের কাছ থেকে মাছ কিনে নিয়ে যেতে পারেন সৈকতের ক্ষেপুপাড়া রেস্টুরেন্ট, তরঙ্গ রেস্টুরেন্ট কিংবা কুয়াকাটা বিচ রেস্টুরেন্টে। দরদাম করে নিজেদের পছন্দমত রান্না করিয়ে নেয়ার সুবিধা পাওয়া যায় এখানে।

ইলিশ পার্ক রেস্টুরেন্ট

কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র এক কিমি দূরে অবস্থিত এই ইলিশ পার্ক এবং রিসোর্টের প্রবেশ মূল্য মাত্র ২০টাকা। পার্কের মধ্যেই চকচকে রূপালী ইলিশের আদলে তৈরি ইলিশ রেস্টুরেন্ট। প্রায় ৭২ ফুট লম্বা পেটমোটা এই মাছের ভেতরেই রয়েছে আগতদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা। এই রেস্টুরেন্টটিতে মূলত বিভিন্ন ধরনের সী ফুড পাওয়া যায়।

লেবুর চরে ভোজন

কুয়াকাটা ঘুরতে এলে যাওয়া যেতে পারে লেবুর চরে। মোটরসাইকেলে দুইজনের জন্য সাধারণত ২০০ টাকা ভাড়া পড়ে লেবুর চর যেতে। বীচে মাছ কিনে রান্না করিয়ে খোলা আকাশের নিচে একবেলা ভোজন হয়ে থাকতে পারে স্মরণীয় ঘটনা। এছাড়া রয়েছে হোটেল স্যান্ড বিচ, সেফার্ড, খাবার ঘর-১, খাবার ঘর-২ এর কথা।

এসব রেস্তোরাঁ থেকে মূলত পর্যটকদের চাহিদা অনু্যায়ী খাবার আবাসিক হোটেলগুলোতে পৌঁছনো হয়। এখানকার রেস্টুরেন্টগুলোর চেহারা ঝাঁ চকচকে না হলেও খাবারদাবারের টেস্ট প্রায় সব দোকানেরই ভাল। মাত্র ১৫০-২০০ টাকায় বেশ ভালোরকম উদরপূর্তির ব্যবস্থা হয়ে যাবে এখানে। কুয়াকাটার ডাবের পানি বেশ উপাদেয়। মাত্র ২৫-৩০ টাকায় সুমিষ্ট এই পানি অনেকদিন মনে থাকবে। তবে এখানকার টিউবওয়েলের পানিতে আয়রনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। তাই খাবার পানির স্বাদ কিছুটা আলাদা। এছাড়া ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে স্থানীয় শুঁটকি পল্লী থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি নিয়ে যেতে পারবেন কম খরচে।

বি:দ্র: যে কোন জায়গায় গেলে সেখানকার পরিবেশ দূষিত হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা এবং স্থানীয়দের প্রতি সদয় হওয়া আমাদের দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: