শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৪ অপরাহ্ন
Uncategorized

কীভাবে আইইএলটিএসের প্রস্তুতি নিবেন?

  • আপডেট সময় শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

আইইএলটিএস (IELTS)( International English Language Testing System) হলো ইংরেজি ভাষা দক্ষতা যাচাইয়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পরীক্ষা। যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নন তাদের, অনেক দেশে উচ্চশিক্ষা এবং ভিসার আবেদন করতে ভালো আইইএলটিএস স্কোর প্রয়োজন পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের দেশসমুহ সহ অনেক দেশেই পড়তে যেতে চাইলে এই স্কোর আবশ্যক।

সাধারণত বাংলাদেশের তরুণরা এই বিষয়ে স্কুল-কলেজে তেমন সচেতন থাকেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেও অধিকাংশ অসচেতন থাকেন। অনেকের ভিড়ে অবশ্য কিছু শিক্ষার্থী ব্যতিক্রম, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় আইইএলটিএস প্রস্তুতি গ্রহণ করেন এবং পরীক্ষার মাধ্যমে ভালো স্কোর অর্জন করেন।
ধরুন, আপনি বর্তমানে বাংলাদেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করছেন। স্নাতক শেষে উচ্চশিক্ষার জন্যে স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ড যেতে চান। এই অবস্থায় আইইএলটিএস স্কোর অনেক জরুরী।

স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষ থেকে কীভাবে আইইএলটিএস এর জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করবেন তা জানার আগে আইইএলটিএস সম্পর্কে কিছু বেসিক ধারণা জেনে রাখা জরুরি।

আইইএলটিএস পরীক্ষা পদ্ধতি কয় ধরনের?

সাধারণত আইইএলটিএস পরীক্ষা পদ্ধতি দু’ধরনের হয়ে থাকে, যথা-

১. আইইএলটিএস একাডেমিক:-স্নাতক,স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি পর্যায়ের পড়াশোনার জন্যে একাডেমিক মডিউলের স্কোর প্রয়োজন হয়।
২)আইইএলটিএস জেনারেল ট্রেনিং: কারিগরি বিষয়, সেকেন্ডারি স্কুলে ভর্তি, প্রশিক্ষণ বা ইমিগ্রেশন এর জন্যে জেনারেল মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়।

দুটি মডিউলে সামান্য ভিন্নতা থাকলেও পরীক্ষা পদ্ধতি প্রায় একই রকম হয়।

আইইএলটিএসে কোন কোন বিষয়গুলোর ওপর পরীক্ষা হয়?

আইইএলটিএসে চার ধরণের ভাষা দক্ষতার যাচাই করা হয়-
১. লিসেনিং (Listening)২. রিডিং (Reading)৩. রাইটিং ( Writing)
৪. স্পিকিং (Speaking)

*লিসেনিং (Listening): এই অংশে কথোপকথন শুনে বোঝার সক্ষমতা যাচাই করা হয়ে থাকে। ৩০ মিনিট সময়ের ভেতর ৪টি পৃথক অডিও ক্লিপ শোনে উত্তর করতে হয়। প্রশ্ন থাকে সাধারণত ৪০টির মতো।

*রাইটিং (Writing): এই অংশে একজন শিক্ষার্থীর কল্পনাশক্তি এবং সৃজনশীলতা যাচাই করা হয়। দুটি টাস্ক থাকে। প্রথমটিতে কোনো চার্ট, ডায়াগ্রাম, টেবিল থাকবে। যার তথ্য গুলো পরীক্ষার্থীকে সংক্ষেপে ব্যখ্যা করতে হবে। দ্বিতীয় টাস্ক এ বর্ণনামূলক বা পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিতে বলা হয়।

*রিডিং (Reading): এই অংশে শিক্ষার্থীর পড়ে বোঝার সক্ষমতা যাচাই করা হয়।বিভিন্ন জার্নাল-পত্রিকা, বই, ম্যাগাজিন থেকে কিছু অংশ থাকে। তিনটি বিভাগে ৪০টি প্রশ্ন দেয়া হয়।সময় দেয়া হয় এক ঘণ্টার। এই সময়ের ভেতর প্যাসেজ পড়ে সেখান থেকে উত্তর করতে হয়।

*স্পিকিং (Speaking): এই অংশে শিক্ষার্থীর ইংরেজিতে কথা বলার সক্ষমতা যাচাই করা হয়। ১১-১৪ মিনিটের পরীক্ষা। প্রথম অংশে পরিবার, পড়াশোনা,কাজ বা নিজের সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হয় (৪-৫ মিনিট)। এরপর একটি নির্দিষ্ট টপিক দেয়া হয়, যা নিয়ে ২ মিনিট বলতে হয় এবং সবশেষে বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষকের র সাথে ৪-৫ মিনিট আলোচনা হয়।

স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কীভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেন?

*প্রথমেই একটি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সিদ্ধান্ত স্থির করতে হবে যে, আপনি আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে চান। সিদ্ধান্তটাই আপনাকে এগিয়ে নিবে একধাপ।

*সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর শুরু হবে প্রস্তুতি। তবে প্রস্তুতি শুরুর আগেই আইইএলটিএস এর কোশ্চেন প্যাটার্ন থেকে শুরু করে সকল বিষয়ে একটি ধারনা গ্রহণ করতে হবে, যেটা খুবই জরুরি। তাতে জানা যায়, আইইএলটিএস তাদের জন্যে খুব কঠিন কিছু নয়, যারা ইংরেজিতে কিছুটা পারদর্শী এবং ইংরেজির বেসিক জ্ঞান আছে। তাই প্রথমেই ইংরেজির বেসিকটা ঠিক থাকতে হবে।

*স্পিকিং-সাধারণত এভারেজ মানের স্টুডেন্টরা ইংরেজি মোটামুটি বুঝলেও বলতে পারেন কম। তাই কাছের বন্ধুদের সাথে ইংরেজিতে চ্যাটিং ও নিয়মিত ভয়েস চ্যাট করা, বাড়ি বা মেসের সহপাঠী বা ক্লাসমেটদের সঙ্গে নিয়মিত ইংরেজি কথা বলতে পারেন। এতে করে স্পিকিং স্কিল অনেকটাই ভালো হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সবকিছু নিজে নিজে ইংরেজিতে কল্পনা করতে হবে। রুমে একা থাকলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজে নিজে কথা বলতে পারেন।

*লিসেনিং-পার্টটি ইম্প্রুভ করার জন্যে নিজের বিনোদনের সময়গুলোতে ইংলিশ মুভি, ওয়েব সিরিজ, কার্টুন ইত্যাদি (অবশ্যই সাবটাইটেল বাদ দিয়ে) দেখা যেতে পারে, যেসব বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয় তা দ্বিতীয়বার করে দেখা যায় এবং শেষে নিজেই একটি সামারি লিখে ফেললেন, যা ইংরেজির ওপর দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে অনেক সাহায্য করবে।

*রাইটিং- এর জন্যে আপনি আপনার একাডেমিক পড়াশোনার কিছু টপিক সিলেক্ট করে নিতে পারেন। সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং নিজের মত লিখে যান। এখানে আপনার রাইটিং চর্চা তো হচ্ছেই, পাশাপাশি আপনার একাডেমিক পড়াশোনাও এগিয়ে যাচ্ছে!

*রিডিং- আইইএলটিএসে রিডিং প্যাসেজ অনেক বড় থাকে। তাই অনেক দ্রুত পড়া এবং বুঝে পড়াটা অনেক জরুরি। রিডিংয়ের জন্যে নিয়মিত ইংরেজি নিউজ পেপার, ম্যাগাজিন পড়ার চেষ্টা করা উচিত। তা উচ্চস্বরে পড়া গেলে আরো ভালো।

এভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষ থেকে আপনি আইইএলটিএসের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। এছাড়া আইইএলটিএস পরীক্ষার ২/৩ মাস আগে থেকে কেমব্রিজের প্র্যাকটিস বুক এবং সিডি সংগ্রহ করে ফাইনাল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেন।

আইইএলটিএস পরীক্ষা কীভাবে দিবেন?

আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হলে আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।নিকটস্থ আইইএলটিএস টেস্ট সেন্টার খুঁজে নিন। বিশ্বে ১২০০ এরও বেশী আইইএলটিএস টেস্ট লোকেশন আছে মোট ১৪০টি দেশে।অনলাইনে রেজিস্টার করতে পারেন কিংবা আবেদন পত্র ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে পূরণ করে জমা দিতে পারেন টেস্ট সেন্টারে। আবেদন পত্রের সাথে পরিচয় পত্রের কপি দিতে হবে।।একই পরিচয় পত্রের কপি পরীক্ষার দিনও নিয়ে যেতে হবে। আবেদনপত্র গৃহীত হলে টেস্ট সেন্টার থেকে লিখিতভাবে পরীক্ষার সময় ও তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।

আইইএলটিএস পরীক্ষা ফি কত?

আইইএলটিএস পরীক্ষার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করতে হয়। প্রশ্ন হলো, কত ফি দিতে হবে? সাধারণত ১৫০ থেকে ৩০০ ডলার পর্যন্ত ফি প্রদান করতে হয়। মূল দেশ ও স্থান ভেদে পরীক্ষার ফি আলাদা আলাদা হয়।

আইইএলটিএস পরীক্ষা কারা নেয়?

আইইএলটিএস পরীক্ষা অফিসিয়ালি স্পন্সর করে থাকে মূলত তিনটি প্রতিষ্ঠান- ক্যামব্রিজ, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি এডুকেশন।এই তিনটি অফিসিয়াল স্পন্সরদের মধ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং আইডিপি এডুকেশন টেস্ট সেন্টারে আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ে থাকে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com