1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
কাশ্মীর টিউলিপের বাগানে
বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
স্বপ্নভঙ্গের হতাশা আর আতঙ্কে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশী শিক্ষার্থীরা ইমিগ্রেশনের সময় এই ৭ কথা ভুলেও বলবেন না, ভেস্তে যেতে পারে ভ্রমণ চীনে বাড়ছে নারীদের আবাসিক ক্লাব, পুরুষ প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাইল্যান্ড ভ্রমণে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করতে পারবেন পর্যটকেরা ছুটি হোক কর্মক্ষমতা বাড়ানোর চাবিকাঠি কেবিন ক্রুদের ধর্মঘটে এয়ার কানাডার সব ফ্লাইট স্থগিত ৬ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র আগামী বছর ভালুকায় চালু হচ্ছে পাঁচ তারকা হোটেল ‘ম্যারিয়ট’ ঘুরতে গেলে বাজেট শেষ? কয়েকটি টিপসেই মিলবে সমাধান ইউরোপে ‘অবাধ্য’ পর্যটকদের গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা

কাশ্মীর টিউলিপের বাগানে

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪

একটা বাগানে প্রায় দুই মিলিয়ন টিউলিপ ফুটেছে। টকটকে লাল টিউলিপ যেন রক্ত ঝরা। নির্মল সাদা, গাড়ো বাদামি-খয়েরি, ঘন কালো, হালকা গোলাপি, উজ্জ্বল হলুদ, মিশ্র বর্ণের হরেক রকমের টিউলিপ ফুটেছে। সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ছয় হাজার ফুট উঁচুতে ফুটন্ত টিউলিপের দল দোল খাচ্ছে মৃদু বাতাসের সঙ্গে। ১২ হেক্টর জমিতে প্রায় ৬০ প্রজাতির টিউলিপের বাগানটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম। জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরের ওই টিউলিপ গার্ডেনে কাটিয়ে এলাম গেল শুক্রবার। দীর্ঘ শীতের ধূসরতা কাটিয়ে কেবলই বসন্ত এল কাশ্মীরে। ন্যাড়া গাছগুলোতে গজাতে শুরু করেছে সবুজ পাতা, লাল-নীল-সাদা বাহারি ফুল। হাড় কাঁপানো, তুষার পড়া শীতের তীব্রতা কমে দিনের বেলায় তাপমাত্রা এখন গড়ে ১৬-১৭ ডিগ্রি। যেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গোটা প্রকৃতি।

পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ হিসেবে ২০০৭ সালে গড়ে তোলা হয় এটি। এপ্রিলের শুরু থেকে মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ ফুটতে থাকে টিউলিপরা। দর্শনার্থীদের জন্য তখনই উন্মুক্ত করা হয় বাগান। প্রাপ্তবয়ষ্ক প্রতিজন দর্শকের জন্য ৫০ রূপি আর শিশু-কিশোরদের জন্য ২০ রূপি করে টিকিট সংগ্রহ করতে হয় প্রবেশ দ্বার থেকে। দ্বিপ্রহর গড়ানোর আগেই আমরা তিনজন ঢুকলাম বাগানে। ফটক পেরিয়ে সামনে এগোতেই থমকে দাঁড়াতে হলো। রঙিন-বর্ণিল টিউলিপের মাদুরে দৃষ্টি দিয়ে আমরা যেন বিমুগ্ধ! এক-দেড় ফুট দীর্ঘ টিউলিপের একেকটি গাছ। কয়েকটি সবুজ পাতা। আর তার মাথায় জ্বলজ্বল করছে একটা ফুটন্ত টিউলিপ। এমন একেক রঙের হাজার-হাজার টিউলিপ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রূপ ছড়াচ্ছে। কাছে টানছে দর্শনার্থীদের। কিন্তু সেখানে শক্ত নির্দেশনা রয়েছে- টিউলিপ ছেঁড়া নিষিদ্ধ।

বাগানের শেষ মাথায় দৃষ্টি দিয়েই দেখা গেল, যেখানে টিউলিপের সারি শেষ, সেখান থেকে আকাশের দিকে উঠে গেছে বিশাল পর্বতের কালো দেয়াল। তার গায়ে ঘন ঝাউগাছের জঙ্গল। আরো উপরে তাকিয়ে দেখলাম, পর্বতের গায়ে ঝাউগাছ নেই। রোদে ঝকমক করছে ধূসর পাথুরে দেয়াল। গোটা বাগানটি অনেক মাঝারি প্লটে ভাগ করা। প্রতিটি প্লটের চারপাশে নাইলনের দড়ি টানিয়ে দেওয়া আছে সীমানা। মাঝখানে হাটার জন্য কংক্রিটের রাস্তা। প্রবেশ পথ থেকে পর্বতের কোলের দিকে কিছুদূর এগোতেই সিঁড়ির মতো ভাঁজ। সেটা টপকে উপরে উঠতেই দেখলাম আরেক সারি টিউলিপ। মনে হলো যেন আরো ঘন, আরো উজ্জ্বল, জমকালো। মাঝে মাঝে বসানো রয়েছে বেঞ্চ। দ-একটা পাহাড়ি মাঝারি ঝাউগাছের রোদ-ছায়া। এর মধ্যে পাহাড়ি ঝরনার পানি বেরিয়ে আসছে একটি ফোয়ারা থেকে।

একটা খাবারের দোকান আছে চা-কফি, ফাস্ট ফুড পাওয়া যায়। সেখানে কাশ্মীরি নুন চায় (লবণ চা) অথবা কেহওয়া পান করে চাঙ্গা হয়ে নিতে পারেন অনেকে। অনেকে টিউলিপের সামনে ছবি তোলেন নিজেদের ক্যামেরায়। কাশ্মীরি নকশাদার ফেরেন (ঢোলা-লম্বা কোর্তা) আর পাগড়ি মেলে ভাড়ায়। প্রায় সব পর্যটন কেন্দ্রেই কাশ্মীরি সংস্কৃতির এই উপকরণগুলো পাওয়া যায়। বেড়াতে আসা লোকেরা সেসব গায়ে পরেন। ফটোগ্রাফি করে রাখেন স্মৃতি হিসেবে। বাগানের শেষ ধাপে উঠে দেখলাম, মৌসুমের শুরুর দিকে ফোটা ফুলগুলো কিছুটা নিস্তেজ হয়ে আসছে। সেখানে ফুলের ঘনত্ব কিছুটা কমও মনে হলো। চারপাশের নাইলনের দড়িও ছিল না। দর্শনার্থীদের ফুল ধরা এবং বাগানের মধ্যে ঢোকার সুযোগ মিলবে ওখানে। তবে, কোনো ফুল ছেঁড়ার সুযোগ নেই। ফুল ছিঁড়তে হলে আপনাকে গুনতে হবে ৫০০ রূপি জরিমানা। অপূর্ব সৌন্দর্যের পাশাপাশি তাদের পরিচ্ছন্নতা, শৃঙ্খলা আর লাভজনক ব্যবস্থাপনা মুগ্ধ হওয়ার মতো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com