আপনারা হয়তো ইতোমধ্যে জেনেছেন, কানাডা ২০১৭ সালে অন্যান্য দেশ থেকে তিন লক্ষ ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে এই সংখ্যা ন্যূনতম দুই লাখ ৮০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ ২০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে।
কোন ক্যাটাগরিতে কতজন অভিবাসীকে এ বছর কানাডায় ঠাঁই দেওয়া হবে সে সংখ্যা উল্লেখ করেছে কানাডা সরকার। একই সাথে ইমিগ্রেশন নিয়ে ২০১৬ সালের সঙ্গে ২০১৭ সালের পার্থক্যটাও তুলে ধরা হয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক কানাডা সরকারের ২০১৭ সালের অভিবাসন পরিকল্পনার খুঁটিনাটি।
ইকোনোমিক প্রোগ্রাম ক্যাটাগরি
এই ক্যাটাগরিতে চলতি বছর এক লাখ ৭২ হাজার পাঁচশ জন অভিবাসী নেওয়া হবে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে সাত ভাগ বেশি। ছয়টি প্রোগ্রামের আওতায় এই ক্যাটাগরিতে আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন।
ফেডারেল স্কিলড ওয়ার্কার (FSW), ফেডারেল স্কিলড ট্রেডস (FST), এবং কানাডা এক্সপেরিয়েন্স ক্লাস (CEC) প্রোগ্রামের আওতায় ২০১৭ সালে কানাডা সরকারের ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ৭১ হাজার ৭০০। তবে এর সীমা ন্যূনতম ৬৭ হাজার ৬০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার ৩০০ পর্যন্ত হতে পারে। ২০১৬ সালে FSW, FST, CEC এর আওতায় এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮ হাজার ৪০০ যা চলতি বছরের চাইতে ২২ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম।
এ বছর থেকে চালু হওয়া আটলান্টিক পাইলট প্রোগ্রামের আওতায় দুই হাজার ইমিগ্রেন্ট নেওয়া হবে।
কেয়ারগিভার প্রোগ্রামের আওতায় চলতি বছর ১৭ হাজার অভিবাসী নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর এর পরিমান ছিল ২২ হাজার যা চলতি বছরের চাইতে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি ছিল।
বিজনেস প্রোগ্রামে চলতি বছরের রেঞ্জ ৫০০ থেকে এক হাজার, এবং ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ জন। ২০১৬ সালে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০০ যা চলতি বছরের চেয়ে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
প্রোভেন্সিয়াল নমিনি প্রোগ্রামে চলতি বছরের রেঞ্জ ৪৯ হাজার থেকে ৫৪ হাজার। এ ক্ষেত্রে ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার টার্গেট ঠিক করা হয়েছে ৫১ হাজার। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ৮০০ যা চলতি বছরের চেয়ে শতকরা ছয় দশমিক ৬৯ ভাগ কম।
কিউবেক স্কিলড ওয়ার্কার এবং কিউবেক বিজনেস প্রোগ্রামে চলতি বছরে ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার রেঞ্জ ২৮ হাজার থেকে ৩১ হাজার ২০০, তবে লক্ষ্যমাত্রা ২৯ হাজার ৩০০। গত বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ হাজার ৬০০ যা এ বছরের তুলনায় সাত দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি ছিল।
ফ্যামিলিক্লাসপ্রোগ্রাম ক্যাটাগরি
এই ক্যাটাগরিতে এ বছর অভিবাসী হয়ে কানাডায় আসতে পারবেন ৮৪ হাজার জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিলো ৮০ হাজার। এ ক্ষেত্রে দুটি প্রোগ্রাম রয়েছে।
স্পাউস, পার্টনারস, এবং ডিপেন্ডেন্ট চিলড্রেন প্রোগ্রামের আওতায় এ বছর ন্যূনতম ৬২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬৬ হাজার ইমিগ্রেন্ট। তবে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬৪ হাজার। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬০ হাজার যা ২০১৭ সালের চেয়ে ছয় দশমিক ৬৭ শতাংশ কম ছিল।
প্যারেন্টস এন্ড গ্র্যান্ড প্যারেন্টস প্রোগ্রামের আওতায় গত বছরের মত চলতি বছরেও ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার।
রিফিউজি এন্ড প্রটেক্টেড পারসন্স ক্যাটাগরি
এ বছর এই ক্যাটাগরিতে ৪০ হাজার ইমিগ্রেন্ট নেওয়া হবে, গত বছরে যে সংখ্যা ছিলো ৫৫ হাজার ৮০০। এবার দেখ যাক এ ক্যাটাগরির কোন প্রোগ্রামের আওতায় কতজন কানাডা আসতে পারবেন-
গভঃমেন্ট-অ্যাসিস্টেড রিফিউজি প্রোগ্রামের মাধ্যমে এ বছর ইমিগ্রেন্ট নেওয়া হবে সাড়ে সাত হাজার। একই ক্ষেত্রে ২০১৬ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ৬০০। গত বছরের তুলনায় যা কমেছে ৬৯ দশামক ৫১ শতাংশ।
প্রাইভেট স্পন্সর রিফিউজিস প্রোগ্রামে ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার সীমা ১৪ থেকে ১৯ হাজার। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ১৬ হাজার যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ১১ শতাংশ কম।
ব্লেন্ডেড ভিসা অফিস রেফারড প্রোগ্রামের আওতায় ইমিগ্রেন্ট নেওয়া হবে এক হাজার ৫০০, যা গত বছর ছিল দুই হাজার ৪০০।
প্রটেক্টেড পারসন্স ইন কানাডা এন্ড ডিপেন্ডেন্টস অ্যাব্রোড প্রোগ্রামে কানাডা সরকারের ২০১৭ সালের রেঞ্জ ১৩ থেকে ১৬ হাজার হলেও লক্ষ্যমাত্রার পরিমান ১৫ হাজার। গত বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার যা চলতি বছরের চাইতে ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ কম ছিল।
হিউম্যানিটারিয়ান এন্ড আদার ক্যাটাগরি
এই ক্যাটাগরিতে এ বছর কানাডা সরকারের ইমিগ্রেন্ট নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা তিন হাজার ৫০০, যা গত বছরের তুলনায় ১০০ জন কম।