বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
Uncategorized

কানাডায় লুটেরাদের জন্য দূতাবাসের সার্ভিস বন্ধ

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১

যেসব বাংলাদেশি দেশ থেকে হাজার-কোটি টাকা লুটপাট করে কানাডায় কথিত বেগম পাড়া গড়েছে, সেই সব চিহ্নিত লুটেদের জন্য আমাদের দূতাবাসের সেবা সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে অটোয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হাই কমিশনার ড. খলিলুর রহমান এই তথ্য জানান।

ইত্তেফাককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যারা জনগণের ক্ষতি করে দেশের অর্থ পাচার করে, তাদের নানা ভাবে প্রতিহত করা দরকার। যারা দেশের নিজের সম্পদ বিক্রি করে এখানে আনতে চান, তাদেরও উচিত নিয়ম মাফিক বৈধভাবে আনা।

ড. খলিল কানাডায় অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূতদের ভূমিকা, বঙ্গবন্ধু সেন্টার, দু’দেশের শিক্ষা বিনিময় কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও সমাধান, দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য-বিনিয়োগ, কৃষি ও স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশিদের সুযোগ, পুনরায় টরন্টোতে বাংলাদেশ বিমান সার্ভিস চালুসহ নানান বিষয় নিয়ে আলোচনায় করেন।

হাই কমিশনার বলেন, অনেক বেশি বেতনের চাকরি ছেড়ে এখানে এসেছি, কিছু দৃষ্টান্তমূলক সেরা করে যেতে যাই। সেজন্য প্রবাসীদের সহযোগিতা অনিবার্য। আমি মাত্র এই ক’মাসের বেশ কিছু পদক্ষেপ এবং কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, অনেকের আন্তরিক সহযোগিতায় সেইসব কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তার মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেন্টারের সূচনা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান, নূর চৌধুরীকে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে কানাডা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা ইত্যাদি অন্যতম।

ড. খলিল ১৫ আগস্ট এবং ২১ আগস্টের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে বলেন, যারা ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো তাদের দোসরেরাই কানাডায় বসে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। কানাডার আইনেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কথা বলেছি। কানাডার আইনেই নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানো যায়, সে বিষয়টি তুলে ধরছি। আমরা কানাডার আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ফেডারেল নির্বাচনের অপেক্ষা করছি। কারণ, বর্তমান কানাডার সংখ্যালঘু সরকার অনেক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

যেহেতু এখন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়েছে, এই সময় প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোটপ্রার্থীদের কাছে সন্ত্রাসী ও খুনি নূরের বিষয়টি তিনি উপস্থাপনের আহবান জানান।

আর নূরকে ফেরত নেওয়ার প্রসঙ্গে ড. খলিল গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সেন্টারের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আরও বলেছেন, ইতোপূর্বে কানাডা ইমিগ্রেশন দুই বার তাকে ফেরত পাঠাতে চেয়েছিলো। কিন্তু তারা বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সহযোগিতা পায়নি। আমি আগেও বলেছি এবং আবারো বলছি-তৎকালীন হাই কমিশনার, খন্দকার মোশতাকের পালিত পুত্রের অসহযোগিতার কারণে নূরকে ফের পাঠানো সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, দু’দেশে শিক্ষা বিনিময় কোর্সের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কানাডার সিস্টেম অনুযায়ী দেশে ইংলিশ কোর্সের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। আর ইতোমধ্যে আমরা মেনিটোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যে বঙ্গবন্ধু গবেষণা সেন্টার শুরু করেছি, তার মাধ্যমে এবছর থেকে ৫টি করে বৃত্তির কথাও ঘোষণা দেয়া হয়েছে, গত শাহাদাত দিবসে। এটি একটি মেইল ফলক বলা যায়।

অটোয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হাই কমিশনার ড. খলিলুর রহমান একজন ডাক্তার অর্থাৎ চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র। ফলে স্বাস্থ্যখাতেও তাঁর বিশেষ আগ্রহ লক্ষ করা যায়। তিনি ইতোমধ্যে তাঁর উদ্যোগে কানাডার করোনা প্রতিরোধে কয়েক লাখ ডলারের Personal Protective Equipment বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন এবং আরও দশ কোটি টাকা মূল্যের দুই মিলিয়ন মাস্ক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল মেডিকা। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য কানাডাকে অনুরোধ করেছেন।

তিনি কানাডা-বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার কথা তুলে ধরে বলেন, কানাডায় সিনিয়ার জিটিজেনদের জন্য অনেক সেবক-সেবিকা দরকার। এই চাহিদা মিটাতে দূতাবাস উদ্যোগ নিবে। যাতে বাংলাদেশের নার্সরা আরও উন্নত প্রশিক্ষণ নিয়ে কানাডায় চাকরি নিয়ে আসতে পারে। তাতে আমাদের রেমিডেন্স বৃদ্ধি পাবে এবং কর্ম নার্সদের কর্ম সংস্থান হবে। একই ভাবে বিশাল দেশ কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে কৃষিক্ষাতেও এই চাহিদা পূরণে আমরা উদ্যোগ নেবো।

ইত্তেফাক

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com