বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন

কলকাতার বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

কলকাতা পৌরসভার বিখ্যাত এক মার্কেটের নাম ‘নিউ মার্কেট’। এ মার্কেটের কাছেই মারকুইস স্ট্রিট। শহরটির আশপাশে তাকালে মনে হবে কলকাতার বুকে যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। প্রতিটি সড়কের বিলবোর্ডে বড় বড় অক্ষরে বাংলা লেখা। বিশ্বাসই হবে না আপনি বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে রয়েছেন।

কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। এটি হুগলি নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত। ভারতের তৃতীয় জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চল হিসেবেও পরিচিত। এর উত্তরে লেলিন সরণি, দক্ষিণে মারকুইস স্ট্রিট, পূর্বে রফি আহমেদ কিদওয়াই এবং পশ্চিমে রানি রাসমণি স্ট্রিট ও মির্জা গালিব স্ট্রিট।

jagonews24

আপনি রাস্তায় বের হবেন দেখবেন বাংলাদেশের নামকরা বাস কাউন্টার সোহাগ, শ্যামলী এবং রয়েল সার্ভিস। পাশেই বিআরটিসি কাউন্টার। তাতে বড় বড় বাংলা অক্ষরে লেখা রয়েছে ‘কলকাতা-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ’। কোথাও আবার লেখা রয়েছে ‘কলকাতা-ঢাকা-চট্টগ্রাম’। এছাড়াও পুরো রাস্তাজুড়ে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে বাংলা লেখা।

চোখ মেলে তাকালেই দেখা যাবে বাংলাদেশিদের জন্য গড়ে উঠেছে অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার জন্য রয়েছে বেশকিছু বাংলা খাবারের হোটেল। যেখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডিম, আলু ভর্তা, ডালসহ সবধরনের খাবার সুলভ মূল্যেই পাবেন। তবে খাওয়ার আগে দাম মিটিয়ে নেওয়ায় ভালো।

jagonews24

সারাদিনের কাজ শেষে তাদের পাওয়া যাবে এ এলাকার বিখ্যাত খালেকের হোটেলে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যারাই এ হোটেলে খাচ্ছেন, নিশ্চিত থাকতে পারেন এদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। এ হোটেলে ‘কালা ভুনা’ বেশ বিখ্যাত। মাত্র ৫০ টাকায় মিলবে এক প্লেট গরুর মাংসের কালা ভুনা।

দুপুরে খেতে গিয়ে কথা হয় খালেক হোটেলের স্বত্বাধিকারী আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল হাশেমের সঙ্গে। হাসিমুখে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, তাদের এ পেশা বহু আগের। প্রায় ৫৩ বছর ধরে তারা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বাবা ২০০২ সালে মারা যান। এরপর থেকে তিনি এখনো তার বাবার এ ব্যবসাকে ধরে রেখেছেন।

তিনি জানান, মাঝে করোনাকালীন তাদের এ ব্যবসা খুবই মন্দা ছিল। এ সময় বাংলাদেশ থেকে কোনো লোকজনই আসতে পারেনি। তবে করোনার পর থেকে তাদের এ প্রতিষ্ঠান আবারও জমে উঠেছে। এখানে সবধরনের বাংলা খাবার বিক্রি হয়। বিশেষ করে গরুর মাংসের কালা ভুনার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। শুধু কালো ভুনা খেতেই তাদের হোটেলে আসে অনেক বাংলাদেশি।

jagonews24

নিজ দেশে কথা বলার জন্য বাংলাদেশিদের দেওয়া হয় একমাস মেয়াদি সিমকার্ড। তাই এ জায়গায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য সিমকার্ডের দোকান। একেকটি সিম কিনতে খরচ করতে হয় ২৫০-৩০০ টাকা। এ সিমকার্ড দিয়ে কলকাতায় কথা বলতে পারবেন একদম ফ্রি। তবে বাংলাদেশে কথা বলতে হলে আপনাকে রিচার্জ করতে হবে। তবে মাসজুড়ে ফ্রিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

কথা হয় সিমকার্ড কিনতে আসা মামুন নামের এক বাংলাদেশির সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বেনাপোল হয়ে তিনি বাসযোগে কলকাতায় এসেছেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায়। তিনি এর আগেও কয়েকবার কলকাতায় এসেছেন। প্রতিবারই এ জায়গায় থেকেছেন। তাই তার কাছে এটা বাংলাদেশের মতোই লাগে। সবাই বাংলা বোঝেন, সবাই বাংলাতেই কথা বলেন। তার কাছেও ‘মারকুইস স্ট্রিট’ এক টুকরো বাংলাদেশের মতো।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com