শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

কক্সবাজার – পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত

  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩

দেশের ভেতরে যদি কোথাও ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন তাহলে আপনার মনে অবশ্যই প্রথমে কক্সবাজারের নাম আসবে।আর আসবেই বা না কেন, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতটিই যে বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত। এছাড়া সমুদ্র দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন পৃথিবী কতটা বিশাল।

কক্সবাজার ভ্রমণের মূল আকর্ষণই হলো সমুদ্র সৈকত। দিনের একেক সময় সৈকতের একেক রূপ।তবে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের সময় সমুদ্রের সৌন্দর্য অন্যরকম। এছাড়া আপনি চাইলে সমুদ্র স্নানও করতে পারেন। লাবনী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট এবং কলাতলী পয়েন্ট হলো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের প্রধান ৩টি জায়গা। সৈকতের এই ৩ পয়েন্ট ছাড়া কোথাও সমুদ্র স্নান বা গোসলে নামার জন্য নিরাপদ নয়। সমুদ্র স্নান বা চেয়ারে বসে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি পড়ন্ত বিকেলে সৈকতের পাড়ে হেঁটে বেড়াতে পারেন কিছুক্ষণ। পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকের নির্জন সৈকতে হেঁটে বেড়াতে বেশ ভালো লাগবে।

কক্সবাজারের মূল সমুদ্র সৈকত ছাড়াও আরো অনেক জায়গা আছে ঘুরে বেড়ানোর। যেমন ধরুন- হিমছড়ি কিংবা ইনানী। হিমছড়িতে পাবেন পাহাড় আর সমুদ্রের মিতালি। আরো আছে ছোট ছোট পাহাড়ি ঝরনা। স্থানীয়রা এগুলোকে ছড়া নামে ডাকে। বর্ষার সময় এ ছড়াগুলো থাকে প্রাণবন্ত। এরপর চলে যেতে পারেন হিমছড়ি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ইনানী সমুদ্র সৈকতে। এই সমুদ্র সৈকতটি আপনার ভ্রমণে একটু ভিন্ন মাত্রা এনে দেবে। কারণ প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের মতো ইনানির সৈকতেও বড় বড় প্রবালের দেখা মিলবে।

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত এলাকাগুলোতে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট।সীমান্তপথে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বাহারি জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট। এসব মার্কেটে শামুক ঝিণুক সহ বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনির পাওয়া যায়।

এছাড়া কক্সবাজারে রয়েছে সামুদ্রিক মাছের বিশাল শুটকি বাজার। শুটকি কেনার পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে বড় শুটকি মহাল টি দেখে নেয়া যায় কক্সবাজার থেকেই। সমুদ্র সৈকত ধরে ১০ মিনিট পূর্বদিকে হাটলেই পাওয়া যাবে দেশের সবচেয়ে বড় শুটকি মহাল। দেখে নেয়া যাবে কিভাবে সামুদ্রিক মাছ থেকে তৈরি করা হয় শুটকি। শত শত শুটকির মাচা আর শুটকি শ্রমিকদের ব্যস্ততা আপনার সমুদ্র ভ্রমনে অন্য মাত্রা আনবে। সেই সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতার মুকুটে যুক্ত হবে একটি নতুন পালক।

প্রয়োজনীয় তথ্য:

কক্সবাজারে বিভিন্ন উপজাতি বা নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বাস করে, যা শহরটিকে আরো বৈচিত্র্যময় করেছে।কক্সবাজার শহর ও এর অদূরে অবস্থিত রামুতে রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান বৌদ্ধ মন্দির। কক্সবাজার শহরে যে মন্দিরটি রয়েছে তাতে বেশ কিছু দুর্লভ বৌদ্ধ মূর্তি আছে। এই মন্দির ও মূর্তিগুলো পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ।

সমুদ্রে নামার আগে অবশ্যই জোয়ার ভাটার তথ্য জেনে নেবেন। সৈকতে টাঙানো পতাকা থেকে আপনি এ তথ্য পেতে পারেন। সবুজ পতাকা জোয়ারের নির্দেশ করে। এসময়ে সমুদ্রে নামা নিরাপদ। আর ভাটার সময় লাল পতাকা থাকে। এ সময়ে সমুদ্রে নামা যাবে না। এছাড়া একই সঙ্গে একটু উপর নিচ করে দুটি লাল পতাকা উড়ানো জায়গা বরাবর চোরাবালি কিংবা চোরা খাল নির্দেশ করে।

সাঁতার জানা থাকলেও সমুদ্রে নামার সময় লাইফ জ্যাকেট কিংবা টিউব নিয়ে নিন। সমুদ্রে নামতে ট্রাউজার কিংবা হালকা পোশাক পরুন।লুঙ্গি ও শাড়িজাতীয় কাপড় পরে সৈকতে নামবেন না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, সচেতন নাগরিক হিসেবে সৈকতে কোনো রকম ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। এতে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com