এ যেন ছবির মতো সুন্দর গ্রাম

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রেজোয়ান রকি, চীনের বেইজিং নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড স্কুলে মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) বিষয়ে অধ্যায়ন করছেন। মূলত চীনের মহাপরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত দেশ সমূহের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কোর্স।

চীন সরকারের শিক্ষাবৃত্তিতে রকি অধ্যয়ন করছেন। রকি চীনের বিভিন্ন শহরে ঘুরেছেন, চীন সরকারের অনেক উন্নয়ন দেখেছেন। গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রকিসহ ১২টি দেশের শিক্ষার্থীদের গুয়াংজু প্রভিন্সের ঝুহাই শহরের লিয়ানজিয়ান গ্রামে সফরে নিয়ে যায়।

বিস্মিত রকি, এ কোথায় এসেছেন! এটা কি গ্রাম নাকি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কোনো শহর! গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তার ঘোর কাটে। মাঝে মধ্যই আকাশে ড্রোনের উপস্থিতি। কোথাও একটুও অপরিষ্কার নেই। বাস্তবেই ছবির মতো সুন্দর গ্রাম। গ্রামে রয়েছে ডিজিটাল লাইব্রেরি, গ্রামের উন্নয়নে গবেষণা স্কুল। গ্রামীণ সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য রয়েছে স্থায়ী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের।

গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসবই হয়েছে গ্রামের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও একতাবদ্ধ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নে। গ্রামের সম্মিলিত উদ্যোগে এই উন্নয়ন এখন চীনের একটি আধুনিক মডেল গ্রামের স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, এমনকি চীনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই গ্রাম পরিদর্শনে আসছেন অনেকে। যাতে এই গ্রামের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজ এলাকা উন্নয়ন করতে পারেন। একভাবে গ্রামটি এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সফর নিয়ে জানায়, আমরা চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোডভুক্ত দেশ সমূহের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গুয়াংজুর ঝুহাই সিটিতে বেল্ট অ্যান্ড রোড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই কলেজের অধীনে শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) এবং মাস্টার্স অব পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন (এমপিএ) কোর্স পড়ানো হয়।

আমরা শিক্ষার্থীদের বাস্তবমুখী জ্ঞান অর্জনের প্রচেষ্টা করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের এই লিয়ানজিয়ান গ্রাম সফর করানো হয়েছে। যাতে এই লব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজ দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

এ সফর বিষয়ে রকি জাগো নিউজ কে বলেন, সত্যিই এমন গ্রামে গিয়ে আমি অবিভূত। প্রযুক্তিনির্ভর এই গ্রামের উন্নয়ন অনুকরণ করার মতো। এই গ্রাম থেকে মূল শিক্ষণীয় বিষয় হলো, একতাবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি গ্রামকে আধুনিক গ্রাম হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে কিভাবে অন্যদের মডেল হতে হয়, তা এই গ্রামবাসীরা প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশের নিজ গ্রামের উন্নয়নের পরিকল্পনায় এই গ্রামে সফরের অভিজ্ঞতা কাজে দিবে বলেও জানান তিনি।

গ্রামে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সফর উপলক্ষে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। চীনের বিখ্যাত ড্রাগন নাচ উপভোগের পাশাপাশি রকিসহ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সবাইকে পরিচিত করে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: