শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

এশিয়ায় জাপানের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে চলেছে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চল

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ জুন, ২০২১

বেজা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য মোট এক হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠছে আড়াইহাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড)। প্রথম পর্যায়ে ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ। এখন সেই জমি উন্নয়নের কাজ চলছে। ১৫ কিলোমিটার দূরের মেঘনা নদী থেকে পাইপলাইনে বালু এনে ভূমি উন্নয়ন করছে জাপানি প্রতিষ্ঠান তোয়া করপোরেশন। সমতল থেকে ১৫ ফুট উঁচু করা হচ্ছে জায়গাটি।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এলাকায় শ্রমিকদের যাতায়াতের কারণে সেখানে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। সেটি মাথায় রেখেই আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চলে আট কিলোমিটার দীর্ঘ ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে, যাতে শ্রমিকেরা যেকোনো প্রান্ত থেকে ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে পারেন। আর আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হওয়ায় সেখানে যাতে যানজট তৈরি না হয়, সে জন্য একটি উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হবে। ফলে অর্থনৈতিক অঞ্চলে চলাচলকারী যানবাহনগুলো উড়ালসড়ক ব্যবহার করে নির্বিঘ্নে চলতে পারবে।

অনাগ্রহ থেকে প্রবল আগ্রহ

বেজার কর্মকর্তারা জানান, চার বছর আগে আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে জাপানি কোম্পানিগুলোর তেমন আগ্রহ ছিল না। অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য তখন জাপানি বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় ছিল গাজীপুরের শ্রীপুর, নরসিংদীর পলাশ, ঢাকার সাভার ও মানিকগঞ্জ। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর তুলনামূলক কাছে হওয়ায় এবং যোগাযোগব্যবস্থা ভালো দেখে শেষ পর্যন্ত তারা আড়াইহাজারকে বেছে নেন জাপানি বিনিয়োগকারীরা। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে শিল্পকারখানাগুলো উৎপাদন শুরু করবে, এমনটাই আশা করছে বেজা।

ব্যাপক সম্ভাবনা আর আশাবাদ থাকা সত্ত্বেও আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী কোম্পানিগুলো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছে। কারণ, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি)। কিন্তু আরইবির সেবার ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। তাই সেখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বেজা ও সুমিতিমো করপোরেশন মিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। প্রথমে ৩৫ মেগাওয়াট ও পরে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় তারা। অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ চায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব তারাই পালন করবে। বেজার কর্মকর্তারা বলছেন, ভারী শিল্পের জন্য যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ জরুরি, সেটি বিবেচনায় রাখতে হবে।

আড়াইহাজার অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছে জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সার্টিফ আইডি। তাতে দেখা গেছে, সেখানে যেসব ভারী শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে, সেগুলোর জন্য প্রচুর কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরনের কারিগরি দিক থেকে দক্ষ জনবলের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তৈরিতে যে ধরনের জনবল দরকার, তা জোগান দেওয়া কঠিন হবে। এ জন্য অন্য দেশ থেকে দক্ষ জনবল আনতে হবে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশে কাঙ্ক্ষিত হারে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। তবে আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) বড় ধরনের রূপান্তর ঘটবে। জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করছি। তাঁরা আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছি।’

পবন চৌধুরী আরও বলেন, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com