ঘরে বসে সুন্দরবনের পাক-পাখালির ডাক। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ।
নিরাপত্তার সঙ্গে নিশিযাপন। মানসম্মত খাবার খাওয়া। এই শ্রাবণে বৃষ্টি বিলাস। স্বল্প খরচে লোকালয় থেকে খুব কাছে ভ্রমণ করেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন উপভোগের সুযোগ করে দিয়েছে সুন্দরী ইকো রিসোর্ট।
খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নের ঢাংমারী গ্রামের এ রিসোর্টের অবস্থান। সুন্দরবনের বিখ্যাত গাছ সুন্দরীর নাম অনুসারে নামকরণ করা এ রিসোর্টটি সম্প্রতি পর্যটকদের জন্য উদ্বোধন করা হয়েছে।
নান্দনিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ রিসোর্টে এলে বনের আশপাশের সহজ-সরল মানুষের জীবন-যাত্রা সম্পর্কে জানতে পারবেন, তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, বিশ্বাস, ধর্ম, প্রথা জানতে পারবেন। গোলপাতা, কাঠ দিয়ে তৈরি ঘর। প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা।
সুন্দরী ইকো রিসোর্টের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১৩ জন যুবক উদ্যোক্তা মিলে সুন্দরী ইকো রিসোর্ট তৈরি করা হয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হল স্থানীয়দের জীবন মান উন্নয়নের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশ। আমরা চাই এখান থেকে যাতে স্থানীয়রা উপকৃত হতে পারে সঙ্গে সঙ্গে আমরাও উপকৃত হতে পারি।
একইসঙ্গে সুন্দরবনের যেন প্রমোট হয়। এখানে এসে আমরা সুন্দরবনের স্থানীয়দের কর্মসংস্থান করেছি। যারা সাধারণত জঙ্গলে গিয়ে গাছ কাটে, বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে। এসব কাজ কমাতে আমাদের এ উদ্যোগ। এসব লোকজন মূলত অর্থের জন্য এ কাজগুলো করতো। তারা যদি রিসোর্ট কেন্দ্রিক কাজের সুযোগ পায় তাহলে এসব কাজ থেকে সরে আসবে। আমরা যাদের নিয়োগ দিয়েছি তারা জঙ্গলে যেত কিন্তু চার মাস জঙ্গলে যায় না। এখানে আরও রিসোর্টে হচ্ছে। এটাকে একটি ইকো ভিলেজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
নতুন এ রিসোর্টে কী কী আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুন্দরী ইকো রিসোর্টে মোট সাতটি রুম রয়েছে। ৬টি এসি রুমে ২ জন করে ১২ জন। আর একটি নন এসি রুমে ৮-১০ জন থাকতে পারবে। রুমে যদি শেয়ার করে থাকা হয় তাহলে একসঙ্গে রিসোর্টে ২৫-২৬ জন থাকতে পারবেন। এখানের রুম ভাড়া পাঁচ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। রুম অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়। এসি রুম ১০-১২ হাজার টাকা এখন ডিসকাউন্টে সাত হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আর নন এসি আট হাজার টাকা। এখানকার স্থানীয় ফ্রেশ খাবার খাওয়ানো হবো পর্যটকদের।
সুন্দরী ইকো রিসোর্টের আরেক পরিচালক শরিফুল ইসলাম হিরণ বাংলানিউজকে বলেন, সুন্দরবনের সুন্দরী ইকো রিসোর্টে গিয়ে খুঁজে পাবেন স্থানীয়দের সরলতার ও আতিথেয়তার অকৃত্রিমতা। আপনিও মিশে যেতে পারবেন সুন্দরবনের স্থানীয়দের জীবন ধারায়। এ অভিজ্ঞতা পেতে পৌঁছাতে হবে মোংলায় এরপর আমাদের প্রতিনিধি পর্যটকদের রিসিভ করে রিসোর্টে নিয়ে আসবে।
মোংলা থেকে ১ থেকে দুই ঘণ্টা নৌকা ভ্রমণ করে পৌঁছে যাওয়া যাবে রিসোর্টে পাশাপাশি এই সময়টুকু পর্যটকরা উপভোগ করবেন সুন্দরবনের মনোরম সৌন্দর্য। রিসোর্টের রুমে অথবা বেলকনিতে বসেই প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে উপভোগ করতে পারবেন। উদ্বোধন উপলক্ষে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে সব রুমের ওপর।
সুন্দরবনে একমাত্র আমাদেরই রয়েছে একটি সুবিশাল জঙ্গল ভিউ ডুপ্লেক্স রেস্টুরেন্ট যেখানে বসে প্রকৃতির মাঝে পর্যটকরা হারিয়ে যেতে পারেন। সুন্দরী ইকো রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন এই নাম্বারে ০১৩১১-২০০৫০৫ ও ০১৯১৭-১৭৩৪১৮।
সুন্দরী ইকো রিসোর্ট ছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন বাদাবন ইকো-কটেজে। খুলনা থেকে বাসে মোংলায় যেতে হবে। সেখান থেকে ট্রলারে মোংলা নদী পার হতে হবে।
মোংলা নদী পার হলেই ছোট মোংলা শহর বা বাজার, সেখান থেকে মোটরসাইকেল/ইজিবাইক বা ভ্যানে আধ ঘণ্টার পথ শেষে দক্ষিণ চিলে বাদাবন ইকো-কটেজের অবস্থান। কটেজে গোলপাতা, কাঠ দিয়ে তৈরি মাটির ঘর। সামনের পুকুরের ওপর বসার জন্য গোলঘর। কিন্তু বাথরুম আধুনিক হাই-কমোড, লো-কমোড, দু-রকমই আছে।
বারান্দায় রয়েছে সংরক্ষিত মাটিতে বাঘের পায়ের চিহ্ন। রয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশে খাবার খাওয়ানোর ব্যবস্থা। যোগাযোগ: ০১৭৩৬ ৩৩১৫১৫। এছাড়া সুন্দরবনে আরও আছে ইরাবতী ইকো রিসোর্ট। যেখানে গিয়ে উপভোগ করতে পারেন সুন্দরবনের সৌন্দর্য। যেতে চাইলে ০১৭২৪৫৩৪৩০০ নাম্বারে কল দিয়ে বুকিং করা যাবে।
বাংলা নিউজ টোয়েন্টি ফোর