শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ অপরাহ্ন

উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানিতে কেন পড়াশোনা করবেন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার আশা সব শিক্ষার্থীর। বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নতজীবনের সঙ্গে খরচের হিসাব মিলে গেলেই উচ্চশিক্ষার জন্য অন্য দেশে পাড়ি জমানো যায়। বর্তমানে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ দেশের সিংহভাগ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। স্বপ্ন হবে না কেন? বিদেশে উচ্চশিক্ষা কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের সহজ পথ। তেমনই একটি দেশ জার্মানি।

কেন জার্মানি আসবেন? একেক জনের কাছে একেক কারণে উত্তম। তবে প্রথম কারণ হলো জার্মানির শিক্ষার মান। সারা পৃথিবীতেই জার্মান ডিগ্রির কদর রয়েছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণার জন্য জার্মানিকে স্বর্গ বলা চলে। বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অন্যতম জার্মানি। তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রসরমান এ দেশ শিক্ষাসহ নানা দিক দিয়ে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয়।

বিশেষ করে দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিক ও যুগোপযোগী। জার্মানির বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ শতাংশের বেশি বিদেশি পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি রয়েছে কয়েক হাজার কোর্স থেকে পছন্দের কোর্সে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ। এসবকিছু মিলিয়ে সাম্প্রতিককালে শিক্ষার্থীদের পছন্দের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশটি।

কেন আপনি জার্মানিতে পড়বেন?
জার্মানিকে উচ্চশিক্ষার গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ার কিছু আছে। সেগুলো হলো:
*পড়ালেখা শেষে গবেষণা ও পূর্ণকালীন কাজ করার সুযোগ
*পড়াশোনা শেষে স্থায়ীভাবে থাকার সুবিধা
*ডেন্টাল, মেডিসিন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার, আর্কিটেকচার, ব্যবসা ও আইনে পড়ার সুযোগ
*জার্মানির ১৬টি প্রদেশের মধ্যে ১৪টিতে শিক্ষার্থীদের কোনো টিউশন ফি দিতে হয় না। প্রতি ছয় মাসে ২০০ থেকে ৪০০ ইউরো সেমিস্টার ফি দিতে হয়, যার মধ্যে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যে রাজ্যে অবস্থিত, সেখানকার সব ধরনের গণপরিবহনের ভাড়াও অন্তর্ভুক্ত থাকে।
*আন্তর্জাতিক মানের একাডেমিক পাঠ্যক্রম
*শেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণের সুবিধা
* জার্মানিতে এসে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। কারণ, এতে DAAD বৃত্তিও পেতে সুবিধা পেতে পারেন
* জার্মান ভাষা বিনা মূল্যে শেখার সুযোগ। আর এতে জার্মানিতে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে

জার্মানিতে পড়তে যাওয়ার আগে যা যা জানা প্রয়োজন
বেশি কাজের মানসিকতায় লাগাম টানুন: একজন বিদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখার ফাঁকে আপনি কতটা কাজ করতে পারবেন, সেটা নির্ধারণ করে দেয়া থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ-র কোনো দেশের পাসপোর্টধারী নয়, এমন শিক্ষার্থীরা বছরে ১২০ দিন পূর্ণদিবস কিংবা ২৪০ দিন অর্ধদিবস কাজ করতে পারেন। এছাড়া সেমিস্টার চলাকালে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা যাবে না। ভালো কথা, গোপনে বাড়তি কাজের চেষ্টা করবেন না। ধরা পড়লে বড় সমস্যা হতে পারে।

যথাযথভাবে অনুদানের আবেদন করুন: আশার কথা হচ্ছে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন অনুদান এবং ফেলোশিপের ব্যবস্থা রয়েছে জার্মানিতে। আপনার বিষয় যাই হোক না কেন, আপনি যদি তাতে মেধাবী হন এবং উচ্চশিক্ষার জন্য পরিশ্রমে আগ্রহী হন, তাহলে অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারেন। ‘জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস’ বা ডিএএডি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে থাকে। তবে অনুদানের আবেদন প্রফেশনালদের মতো হওয়া চাই।

study

ভিসা জটিলতা: উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে জার্মানিতে পড়তে আসার ভিসা পাওয়া একটু জটিল। তাঁদের বেশকিছুদিন সময় হাতে রেখে ভিসার আবেদন করতে হয়। আর জার্মানিতে আসার পর মাঝেমাঝেই যেতে হয় ‘আউসলান্ডারবেহ্যোর্ডে’ বা বিদেশিদের জন্য নির্ধারিত সরকারি কার্যালয়ে।

সব কিছুর কপি রাখুন: জার্মানিতে আসার পর আপনি নিয়মিতই বিভিন্ন চিঠি পাবেন। এমনকি কবে কবে বাড়ির সামনে কোন কোন ধরনের ময়লা রাখা যাবে, সেটাও জানবেন চিঠির মাধ্যমে। বুদ্ধিমানের কাজ হবে সব চিঠি জমা করে রাখা। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী উত্তর দিতে ভুল করবেন না যেন। জার্মানিতে বসবাসের এক বিরক্তিকর দিক হচ্ছে দেশটির জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ার অংশ এ সব চিঠি।

জার্মান বলতে পারলে অনেক সুবিধা: এটাও সত্য, জার্মানির বড় শহরগুলোতে জার্মান না জেনেও বসবাস করা য়ায়। এছাড়া বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ইংরেজিতে পড়ালেখার সুযোগ রয়েছে। তবে কিছুটা জার্মান ভাষা শিখতে পারলে দেশটিতে জীবনযাপন অনেক সহজ হয়ে যাবে। আর আপনি যদি পড়ালেখা শেষে জার্মানিতে চাকুরি করতে চান, তাহলে ভাষা জানাটা অনেক জরুরী। এক্ষেত্রে ডয়চে ভেলের জার্মান ভাষা শিক্ষা কোর্স আপনাকে সহায়তা করতে পারে।

নিজেকে নিজেরই সহায়তা করতে হবে: যুক্তরাষ্ট্রের প্রাইভেট কলেজগুলো ব্যয়বহুল হলেও শিক্ষার্থীদের অনেক খেয়াল রাখেন। শিক্ষার্থী কোনো ক্লাস ক্রমাগত মিস করে গেলে তাকে তা জানানো হয়। ক্যাম্পাসে কখন, কোন প্রোগ্রাম হচ্ছে তাও সুনির্দিষ্টবাবে শিক্ষার্থীদের জানাতে উদ্যোগ আছে। জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কখন, কোথায় কেন ক্লাস হচ্ছে কিংবা কোন প্রোগ্রাম চলছে তার খোঁজ রাখার দায়িত্ব আপনার।

জার্মানদের সঙ্গে থাকুন: জার্মানির বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করে থাকে। তবে তাদের সেবা নেয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেছে দেয়া অ্যাপার্টমেন্ট শিক্ষার্থীর পছন্দ হয় না। আশার কথা হচ্ছে, অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকে থাকার জায়গা বেছে নেয়া যায়। কাজটা কঠিন। তবে চেষ্টা করবেন এমন জায়গায় থাকার যেখানে জার্মান শিক্ষার্থীরা থাকেন। তখন ভাষা শেখাটা আপনার জন্য সহজ হবে।

আপনি একা নন: শিক্ষার্থী হিসেবে জার্মানিতে বসবাস শুরুর দিকে অনেক কঠিন মনে হতে পারে। মনে হতে পারে আপনি একাই বুঝি এত পরিশ্রম করছেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আপনার আগেও অনেক আপনার মতোই পরিশ্রম করে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। তাই নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করতে শিখুন। এ জন্য বিভিন্ন অনলাইন ফোরামের সহায়তা নিতে পারেন।

থাকবেন, নাকি চলে যাবেন? শুরুর দিকে জার্মানিতে বসবাস কঠিন মনে হলেও দেশটি ক্রমশ আপনার ভালো লাগতে শুরু করতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। ডিগ্রি, চাকুরি আর নিরাপদ জীবন – এসব বিবেচনা করে আপনি হয়ত একসময় জার্মানিতে থেকে যেতে চাইবেন। কিংবা থাকবেন নাকি চলে যাবেন সেই দ্বিধায় পড়ে যাবেন। সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আপনার, আমরা শুধু আপনাকে আগেভাবে জানিয়ে রাখলাম।

বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অন্যতম জার্মানি

উচ্চশিক্ষায় জার্মানি যেতে চাইলে
যে সব বিষয়ে পড়ানো হয়: জার্মানিতে বর্তমানে ৩৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭,০০০ বেশি কোর্স করানো হয়। জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনারেল ম্যানেজমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল ল, ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং, মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট, লিডারশিপ এন্ড ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ইনফরমেশন টেকনোলজি, এইচআরএম, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স এন্ড অ্যাকাউন্টিং, ডাটা এনালাইসিস এন্ড ম্যানেজমেন্ট, টেলিকমিউনিকেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট, পলিটিক্যাল সায়েন্স, অ্যাডভান্সড ম্যাটারিয়ালস, অ্যাডভান্সড অনকোলজি, ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন টেকনোলজি, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ফিন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্ট, মলিকিউলার সায়েন্স, বিভিন্ন ভাষা বিষয়ে পড়াশোনা, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্সসহ প্রকৌশল ও জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

উন্নতমানের শিক্ষাব্যবস্থা
জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থা খুবই মানসম্পন্ন। বিশেষ করে প্রকৌশল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় দেশটি সারা পৃথিবীতে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।দ্য টাইমস হায়ার এডুকেশনের তালিকা অনুসারে, বিশ্বের শীর্ষ ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১২টিই জার্মানিতে অবস্থিত। জার্মানির অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম জার্মান, তবে অনেক কোর্স ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ানো হয়। ইংরেজিতে পড়তে চাইলে আইএলটিএস বা টোফেল কোর্স থাকতে হবে।

জার্মানিতে আপনি অনার্স, মাস্টার্স, ডক্টরাল বা  পিএইচডি ডিগ্রি নিতে পারবেন। এছাড়াও ডিপ্লোমা করার সুযোগও রয়েছে। অনার্সের কোর্সের মেয়াদ তিন থেকে চার বছর, মাস্টার্স কোর্স এক থেকে দুই বছর এবং পিএইচডি তিন থেকে চার বছর মেয়াদি হয়ে থাকে।

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত বছরে ২ বার আবেদন করা যায়। সামার ও উইন্টার এ দুই সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাইলে জার্মান ভাষা শিখে নিলে আপনার জন্য ভালো হবে। কারণ জার্মান মানুষের সাথে ভালোভাবে মেলামেশা করা এবং চাকরির জন্য জার্মান ভাষার প্রয়োজন পড়ে।

স্কলারশিপের সুযোগ
জার্মানিতে শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি বেশ কয়েকটি স্কলারশিপের সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে ডাড স্কলারশিপ অন্যতম। এছাড়াও অন্যান্য স্কলারশিপগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরাসমুস প্লাস, আইনস্টাইন ইন্টারন্যাশনাল ফেলোশিপ, হামবোল্ট রিসার্চ ফেলোশিপ, হেনরিখ বোল স্কলারশিপ, কোনার্ড অ্যাডেনাওয়া স্টিফটুং স্কলারশিপ, কুর্ত হ্যানসেন সাইন্স স্কলারশিপ ইত্যাদি। ভর্তি ও স্কলারশিপ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন।

জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার গ্রহণে ৩টি স্কলারশিপ উল্লেখযোগ্য। সেগুলো হলো- Bundesausbildungsförderungsgesetz, BAföG (Economically poor student), Deutschlandstipendium (Germany Scholarship)(good achievments and volunteer work) ও  DAAD scholarship।

কাজের সুযোগ: পার্টটাইম জবের প্রচুর আছে। তবে আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমী হতে হবে। জব বেশির ভাগ সময় সিটি টু সিটি নির্ভর করে। যেমন হালেতে লিভিং কস্ট সবচেয়ে কম। আপনি চাইলে একদিনের চাকরিও করতে পারেন। এরকম অর্গানাইজেশনও আছে। ফলে একজন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়তি আয়ও করতে পারবেন জার্মানিতে। জার্মানিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের অনুমতি দেয়া হয়ে থাকে। তবে গ্রীষ্মকালে তিনমাস বন্ধ থাকে, তখন চাইলে ফুল টাইম কাজ করতে পারবেন।

জীবনযাত্রার খরচ কম: ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে জীবনযাত্রার খরচ কম। এছাড়াও একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় পাবেন। বিভিন্ন বিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠান, যেমন: থিয়েটার, জাদুঘর, অপেরা হাউজ, ও সিনেপ্লেক্সে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেখিয়ে বিশেষ ছাড় উপভোগ করতে পারবেন।

জার্মানিতে পড়তে যেতে চাইলে

বিনা বেতনে বা স্বল্প বেতনে পড়াশোনা করার সুযোগ: জার্মান সরকার তাদের বাজেটের একটি বড় অংশ শিক্ষার পিছনে ব্যয় করে থাকে। তাই এখানে বিনামূল্যে বা  তুলনামূলকভাবে স্বল্প খরচে ভালো মানের শিক্ষা লাভ করা যায়। প্রায় সকল জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান পেয়ে থাকে।

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার টিউশন ফি দিতে হয় না, ক্ষেত্র বিশেষ লাগলেও সেটা খুবই নগণ্য। তবে ভর্তির সময় রেজিস্ট্রেশন ও আপ্লিকেশন ফি বাবদ কিছু টাকা দিতে হবে। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু কোর্সের ক্ষেত্রে টিউশন ফি দিতে হয়, তবে তা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

স্নাতক করতে চাইলে: কোন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জার্মান সরকার স্বীকৃত, জানা যাবে এই ওয়েবসাইটে। স্নাতকে ভর্তি হতে হলে উচ্চমাধ্যমিকের সনদ, জার্মান ভাষা দক্ষতার সনদ, মোটিভেশন লেটার ও প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হয়। স্নাতকে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্মান ভাষায় পড়ানো হয় বলে জার্মান ভাষা দক্ষতা সনদের প্রয়োজন পড়বে। অন্তত বি২ লেভেল পর্যন্ত জার্মান ভাষা জানা থাকা

নতুনদের জন্য পরামর্শ
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পরামর্শ হলো,সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড হলে জার্মানিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আবেদন করতে পারেন। কেননা সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে টপ র‍্যাংকে আছে তারা। আর যারা নতুন এখনো চিন্তা করছেন কীভাবে অ্যাপ্লাই করবেন, কীভাবে আগাবেন, কিছুই জানেন না। তারা আগে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে, কোন কোর্সে অ্যাপ্লাই করতে চান সেটা ডিসাইড করবেন। তারপর আবার সেই ভার্সিটি এবং কোর্সের ইনফরমেশন ভালোভাবে ওয়েবসাইট ঘেটে জেনে নিবেন। কারণ ২০২৪ থেকে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি এড করছে। তাই অ্যাপ্লাই করার আগে চিন্তা ভাবনা করে সব ক্যালকুলেট করে তারপর অ্যাপ্লাই করতে হবে।

আইইএলটিএস বা অন্য কোনো ভাষা–দক্ষতা পরীক্ষা না দিয়েই শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেয় এমন কয়েকটি জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় হলো: 

* ইউনিভার্সিটি অব কাইসারস্লটার্ন
* ইউনিভার্সিটি অব সিয়েজেন
* ফ্রি ইউনিভার্সিটি অব বার্লিন
* ইউনিভার্সিটি অব গিজেন
* ইউনিভার্সিটি অব কোবলেঞ্জ অ্যান্ড ল্যান্ডউ
* ব্রাউনচেইইউগ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি
* এসলিনজেন ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স

আইইএলটিএসের বিকল্প পরীক্ষা: 
জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আইইএলটিএস ছাড়া ভর্তির সুযোগ আছে। তবে আইইএলটিএসের বিকল্প একটি পরীক্ষা নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ভাষা–দক্ষতার প্রমাণ হিসেবেই তারা এ পরীক্ষা নেবে।

* ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা প্রমাণের জন্য পূর্বের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোর্সে সম্পূর্ণরূপে ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয়েছিল এমন একটি সনদ জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ সর্বশেষ পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব কোর্স যদি সম্পূর্ণরূপে ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয়, সেটির সনদ জমা দিতে হবে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা প্রমাণের জন্য।

Образование в Германии: высшее, среднее, дошкольное. Стоимость обучения,  условия поступления в учебные заведения.

* শিক্ষার্থী স্নাতকে সব কোর্স সম্পূর্ণভাবে ইংরেজি মাধ্যমে পড়লে আইইএলটিএস লাগবে না। শিক্ষার্থী যদি পিটিই (PTE), টোয়েফল (TOEFL), ডুয়োলিঙ্গো (Duolinguo) বা সিএই (CAE) পরীক্ষার সনদ থাকে, তবে আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হবে না।

* কিছু জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যারা আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা যাচাই করে।

বর্তমান বাজারে বিদেশে উচ্চশিক্ষার চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। আপনি যদি একটি ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনাকে চাকরি খুঁজতে হৰে না বরং চাকরি আপনাকে খুঁজে নিবে। তাই একটি ভালো মানের চাকরি, উন্নত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে চাইলে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আপনাকে স্বাগতম।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com