ই-পাসপোর্ট করবেন যেভাবে

মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) জন্য অনলাইনে এবং সরাসরি আবেদন করা গেলেও ই-পাসপোর্টের আবেদন করা যাবে শুধুমাত্র অনলাইনেই।

১ম ধাপ: 
শুরুতেই পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইট www.epassport.gov.bd এ গিয়ে অ্যাপ্লাই অনলাইন (Apply Online) এ ক্লিক করুন।
> যা যা তথ্য চায় তার সঙ্গে ই-মেইল দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন। একটি ইমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে একই পরিবারের ছয়জনের আবেদন করা যায়। ইমেইলে কনফার্মেশন মেইল আসবে, অ্যাকাউন্ট একটিভ করে নিন, ইনবক্সে মেইল খুঁজে না পেলে জাঙ্ক মেইল/ স্পাম ফোল্ডারে পেয়ে যাবেন।
> অ্যাকাউন্ট খোলার পর অ্যাপ্লাই ফর এ নিউ ই-পাসপোর্ট (Apply for a new-e-passport ) ক্লিক করুন।
> প্রয়োজনীয় তথ্য পর্যায়ক্রমে দিতে হবে।

সন্দেহ থাকতে পারে, Md-এর পর dot দেবো কিনা? উত্তর হলো: দেবো না। Dot না দিলে সমস্যা হবে না তো?

উত্তর: ই-পাসপোর্টে ল্যাটার (latter) ছাড়া কোনো ক্যারাক্টার (character) প্রিন্ট হয় না। সুতনাং না দেওয়াই উত্তম। এই না দেওয়ার জন্য ভবিষ্যতেও কোনো সমস্যা হবে না।

সতর্কতা: কখনো ভাড়া বাসাকে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেবেন না। যদি নিজের কেনা ফ্ল্যাটে থাকেন আর সেটাই স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দিতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার দলিলের কাগজের ফটোকপি দিতে হবে। দলিলের কাগজ করা না হলে, সেটা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেবেন না।
> আপনি কোন ধরনের পাসপোর্ট করবেন উল্লেখ করে দেবেন।

৪৮ পেইজ ৫ বছরের মেয়াদ
* রেগুলার: ৪,০২৫ টাকা, ২১ কার্য দিবসে
* এক্সপেস: ৬,৩২৫ টাকা, ১০ কার্য দিবসে
* সুপার এক্সপ্রেস: ৮,৬২৫ টাকা, ২ কার্য দিবসে

৪৮ পেইজ ১০ বছরের মেয়াদ
* রেগুলার: ৫,৭৫০ টাকা, ২১ কার্য দিবসে
* এক্সপেস: ৮,০৫০ টাকা, ১০ কার্য দিবসে
* সুপার এক্সপ্রেস: ১০,৩৫০ টাকা, ২ কার্য দিবসে

৬৪ পেইজ ৫ বছরের মেয়াদ
* রেগুলার: ৬,৩২৫ টাকা, ২১ কার্য দিবসে
* এক্সপেস: ৮,৬২৫ টাকা, ১০ কার্য দিবসে
* সুপার এক্সপ্রেস: ১২,০৭৫ টাকা, ২ কার্য দিবসে

৬৪ পেইজ ১০ বছরের মেয়াদ
* রেগুলার: ৮,০৫০ টাকা, ২১ কার্য দিবসে
* এক্সপেস: ১০,৩৫০ টাকা, ১০ কার্য দিবসে
* সুপার এক্সপ্রেস: ১৩,৮০০ টাকা, ২ কার্য দিবসে

> কীভাবে পেমেন্ট করতে চান সেটা উল্লেখ করে দিতে হবে। যদি অনলাইন ভিসা কার্ড/ বিকাশ বন্ধ থাকে, তাহলে অফলাইনেই করতে হবে।
> সব তথ্য ঠিকমত দেওয়ার পর সাবমিট করে দেবেন। সাবমিটের পর ই-মেইলে একটা কনফারমেশন মেইল আসবে। চেক করে নিতে পারেন।
> অ্যাপ্লিকেশনটা ডাউনলোড করে রাখুন।

২য় ধাপ: শিডিউল সিলেকশন
> অ্যাপ্লিকেশন সাবমিটের পর শিডিউল সিলেকশন করতে হবে
> নিজের মতো করে কোনো খালি স্লট-এ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারবেন।

৩য় ধাপ: (পেমেন্ট)
> নির্ধারিত যে কোনো ব্যাংকে গিয়ে টাকা পরিশোধ করে দিলেই হবে।
ব্যাংক সমূহ: ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক।
> ব্যাংকে আপনার নাম চাইবে শুধু। পাসপোর্ট বা এনআইডিতে দেওয়া হুবহু নামটা দেবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এনআইডি এবং আবেদনের কপি দেখতে চায়। তাই সঙ্গে করে এক কপি নিয়ে যেতে হবে।
> টাকা জমা দেওয়ার পর রিসিট যত্ন করে রাখতে হবে।

৪র্থ ধাপ: পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন জমা এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট

> নিচের ডকুমেন্টগুলো সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে
• পাসপোর্ট ফর্মের প্রিন্ট করা কপি (উভয় পাশের প্রিন্ট)
•  অ্যাপয়েন্টমন্ট/অর্ডার স্লিপ
• এনআইডি’র মূল এবং ফটোকপি
• বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির বিলের ফটোকপি
• শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি
• ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স
•  চাকরিজীবীদের জন্য অফিসের আউডি কার্ডের কপি এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র
• বিবাহিতদের জন্য কাবিননামার দলিল
• ছবি তোলার ক্ষেত্রে সাদা/হালকা রঙের জামা না পরাই ভালো

> আগারগাঁও পিআরও-এর জন্য:
• আপনার টাইম সিডিউল যখনই থাকুক, আগে গেলে আগে ভিত্তিতে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। ভেতরে ঢুকতে বা পাশের কাউন্টারে প্রথম পেপার চেক করে সিল দেবে। এরপর ১০৩ নম্বর কক্ষে যাবেন উপরোক্ত কাগজগুলো নিয়ে। আবেদনপত্র দেখে সেখান থেকে একটা সিল এবং সিরিয়াল লিখে দেবে। সিরিয়াল পেছনে থাকলে এখানে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ৩০৮ নম্বর কক্ষে যেতে হবে।
• ৩০৮ এ দেওয়া সিরিয়াল অনুযায়ী আপনাকে প্রবেশ করানো হবে। এ কক্ষে আপনার ডকুমেন্ট সব ঠিক আছে কিনা চেক করা হবে। অনলাইন আবেদন সাবমিটে কোনো ভুল হয়ে থাকলে এখানে বলে নেবেন। তারা আপনার ফর্মে মার্ক করে দেবে। চেক শেষে তারা একটা সিল সাইন করে দেবে।

• ৪০৩ নম্বর কক্ষ পুরুষ, ৪০৪/৪০৫ নম্বর কক্ষ নারী ও শিশুদের বায়োমেট্রিক করানোর কক্ষ। ৪০১ নম্বর কক্ষ থেকে সিল নেওয়ার পর এই কক্ষে আপনার ডকুমেন্ট রি-চেক করা হবে, ডকুমেন্ট স্ক্যান করা হবে এবং কোনো সংশোধন থাকলে সংশোধ করতে হবে।
• দুই হাতের ১০ আঙ্গুলের ছাপ, চোখ স্ক্যান, ডিজিটাল স্বাক্ষর নেওয়া হবে।
• কাজ শেষ হলে ডেলিভারি স্লিপ দিয়ে দেবে।

৫ম ধাপ: (পুলিশ ভ্যারিফিকেশন)
i. পুলিশ বাসায়ও আসতে পারে থানায়ও ডাকতে পারে
ii. থানায় ডাকলে, শিক্ষার্থী হলে অভিভাবককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উত্তম। কারণ তার একটা স্বাক্ষরের দরকার হবে
iii. ডকুমেন্ট যা যা সঙ্গে রাখতে হবে:

*এনআইডি কপি
* শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট আইডির কপি
* শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
* বাবা-মায়ের এনআইডি কপি
* ইউটিলিটি বিলের কপি
* জমি/ফ্লাটের দলিলের কপি, স্থায়ী ঠিকানা ঢাকা হলে।

৬ষ্ঠ ধাপ: (পাসপোর্ট ডেলিভারি)
i. পুলিশ ভেরিফিকেশনের কিছুদিন পর (৪-৬ দিন) অ্যাপ্লিকেশন স্ট্যাটাস, এনরোলমেন্ট পেন্ডিং অ্যাপ্রুভাল থেকে অ্যানরোলমেন্ট অ্যাপ্রুভাল হবে। তারপর পাসপোর্টের তৈরির কাজ শুরু হবে।
ii. অ্যানরোলমেন্ট অ্যাপ্রুভাল স্ট্যাটাসের কিছুদিন পর (২-৩দিন) স্ট্যাটাস হবে পাসপোর্ট শিপ্ড।
iii. পাসপোর্ট শিপ্ড-এর ১/২ দিন পর এসএমএস, ই-মেইল এবং স্ট্যাটাস হবে ই- পাসপোর্ট প্রস্তুত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: