বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
Uncategorized

ইয়ে দিল্লি হ্যায় মেরে ইয়ার

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২১

দিল্লি, ভারতের রাজধানী শহর। এই শহরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কতই না ইতিহাস। সেই মহাভারতের সময় থেকে দিল্লির উল্লেখ পাওয়া যায়। তখন শহরটি পরিচিক ছিল ইন্দ্রপস্থ নামে। এখানে একে একে শাসন করেছেন খিলজি, তুঘলক এবং মোগল সম্রাটরা। কয়েক দশক ধরে দিল্লি সাক্ষী থেকেছে ক্রমাগত যুদ্ধবিগ্রহ এবং রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের। তাই দিল্লি ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা অন্যান্য শহরের থেকে একেবারেই আলাদা। ভারতের প্রাচীন ইতিহাস, স্থাপত্য, সংস্কৃতিকে খুঁজে নেওয়ার পাশাপাশি নিজের মতো করে চিনে নিন শহরটাকে। দিল্লির দর্শনীয় প্রচুর। এর সঙ্গে তালিকায় অবশ্যই জুড়ে নিতে হবে খাওয়াদাওয়া আর কেনাকাটা। দিল্লিতে গিয়ে কী কী করবেন তার একটা ছোট্ট তালিকা করে দিলাম আমরা।

১। দিল্লি দর্শন শুরু করুন ঐতিহাসিক লালকেল্লা দিয়ে।লাল বেলেপাথর দিয়ে তৈরি এই দুর্গের ভিতর ছিল গোটা একটা শহর। মুঘল সম্রাট শাহজাহানে আমলে এই বিশাল কেল্লাটি তৈরি হয়।কেল্লাটির মধ্যে রয়েছে দেওয়ান-ই-আম, রংমহল, দেওয়ান-ই-খাস, শিশমহল, খাসমহল, মীনাবাজার এবংঔরঙ্গজেবের তৈরি মোতি মসজিদ প্রভৃতি।গোটা দুর্গের দেখতে পাবেন পাথরের জালির অসাধারণ কাজ। সন্ধেবেলা লালকেল্লায় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোতে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস থেকে শুরু করে ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস দেখতে ভুলবেন না।

২। দেখে নিন ভারতের উচ্চতম মিনারটি। কুতুব মিনার।১১৯৯  সালে সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবক৭৩ মিটার উঁচু এই কুতুব মিনারটি তৈরি করেন। লাল বেলেপাথরে তৈরি গোটা মিনারের গায়ে সুন্দর কারুকাজ দেখলে অবাক হতে হয়। বর্তমানে কুতুব মিনার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটেরও তকমা পেয়েছে।

৩। দিল্লির অন্যতম দ্রষ্টব্য ইন্ডিয়া গেট। ১৯৩১ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে এবং তৃতীয় ইঙ্গো-আফগান যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সৈন্যদের স্মৃতিতে তৈরি হয়৪২ মিটার উঁচু ইণ্ডিয়া গেট। থ্রি ইডিয়টস সহ আরও নানা সিনেমার শুটিং হয়েছে এখানে।

৪। দিল্লি আসবেন আর এখানকার খাবার চাখবেন না তা কি হয়? চলে আসুন পুরনো দিল্লির অন্দরে চাঁদনি চকে। জায়গাটা বেশ ঘিঞ্জি। গাড়ি, রিকশ, অটোর ভিড়ের মধ্যেই রয়েছে হরেকরকম দোকান। শুরু করুন পরাঠেওয়ালি গলি দিয়ে। এখানে পরোটা তাখা পাসাপাশি খেয়ে দেখুল করিমসের মোগলাই খানা। এছাড়া এখানকার অলিতে গলিতে পাবেন দারুণ সুস্বাদু চাট, কচুরি, লাড্ডু, কুলফি এবং জিলিপি।

। চলে আসুন দিল্লির লোটাস টেম্পলে। শ্বেতশুভ্র পদ্মের আকারে গড়ে উঠেছে মন্দিরটি। মার্বেল পাথরে তৈরি ২৭ টি পদ্মের পাপড়ি গড়ে উঠেছে নিখুঁত আর্কিটেকচারে। ভিতরে খুব সুন্দর একটি বাগানও রয়েছে। শহর ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়লে শান্ত পরিবেশে কিছুক্ষণ কাটানোর জন্য লোটাস টেম্পল আদর্শ।

৬। ঘুরে দেখুন জামা মসজিদ। এটি দিল্লির সবচেয়ে বড় মসজিদ। মসজিদের সামনে বিশাল চত্বর এবং অসাধারণ মুঘল আর্কিটেকচার ঘুরে দেখতে ভাল লাগে। জামা মসজিদের ভিতর ছবি তুলতে আগে থেকে টাকা জমা দিয়ে নিন। জামা মসজিদের আশেপাশে প্রচুর খাবারের দোকান রয়েছে। এখানকার কাবাব খুব বিখ্যাত।

৭। যাঁরা শপিং করতে ভালবাসেন তাঁরা অবশ্যই একবার ঢুঁ মারুন পাহাড়গ়ঞ্জে। নিউ দিল্লি স্টেশন থেকে মাত্র ১৩ কিমি দূরেই পাহাড়গঞ্জ। এটি একথায় শপিংয়ের স্বর্গরাজ্য। জাঙ্ক জুয়েলারি, রংবেরঙের চুড়ি, ব্যাগ, টি-শার্ট পাবেন দারুণ সস্তায়।এছাড়া শপিংয়ের জন্য কনট প্লেসও বিখ্যাত। এছাড়া আসুনহস খাস ভিলেজ। এখানে রয়েছে দারুণ সব ফ্যাশন বুটিক, বুক স্টোর, ছবি ও পোস্টারের দোকান এবং সাজানোগোছানো ক্যাফে।

৮। দিল্লির যন্তর মন্তরের না আসলে দিল্লি ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে জয়পুরের রাজা দ্বিতীয় জয় সিং মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য যন্তর মন্তর তৈরি করেন। এর অন্যতম আকর্ষণ বিশাল সান ডায়াল। এছাড়া এখানে রয়েছে মহাকাশ গবেষণার জন্য সেই আমলের প্রচুর যন্ত্রপাতি।

৯। পুরনো স্থাপত্য, ভাস্কর্য তো অনেক হল। আধুনিক দিল্লিকে চিনে নিতে চলে আসুন দিল্লি মেট্রো। বর্তমানে এটি বিশ্বের ১২তম বৃহত্তম মেট্রো স্টেশন। প্রতিদিন এখানে প্রায় ২০০ টি ট্রেন চলাচল করে এবং প্রায় ২৭ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। অত্যাধুনিক দিল্লি মেট্রো স্টেশনে বেশ কয়েকটি ইউনিক ফিচার রয়েছে। এর মধ্যে এসকালেটরে শাড়ি গার্ড ফিচার, রেন ওয়াটার হারভেস্টিং অন্যতম। এছাড়া বেশিরভাগ স্টেশন থেকে ১০ টাকায় ৪ ঘণ্টার জন্য বসাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়।

১০। ঘুরে দেখুন রাজ ঘাট। ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে গাঁধীর বিরাট ভূমিকা রয়েছে। রাজ ঘাটে এটি মহাত্মা গাঁধীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত। এই জায়গাতেই গাঁধীকে সমাধিস্ত করা হয়।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com