শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন

ইনানী ঘুরতে যাবেন যে কারণে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪
বাংলাদেশের কক্সবাজারের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত ইনানী সমুদ্রসৈকত যেন প্রকৃতির সৌন্দর্যের এক নিখুঁত ক্যানভাস। কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই সৈকতটিকে বলা হয় ‘পাথুরে সৈকত’, কারণ এর তীরে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য প্রবাল পাথর। ভাটার সময় এই পাথরগুলো দৃশ্যমান হয়, যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। যারা শহরের কোলাহল থেকে দূরে, নির্জন এবং নৈসর্গিক পরিবেশে প্রশান্তি খুঁজছেন, তাদের জন্য ইনানী হতে পারে এক অসাধারণ গন্তব্য।

প্রবাল পাথরের সৌন্দর্য : ইনানী সমুদ্রসৈকত ভাটার সময় প্রবাল পাথরে পূর্ণ হয়ে ওঠে। এই পাথরের গায়ে থাকে ঝিনুক আর শামুক, যা সৈকতের সৌন্দর্যকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। সূর্যের আলো যখন প্রবাল পাথরে পড়ে, তখন এক অপার্থিব রঙের খেলা তৈরি হয়।

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য : ইনানী সৈকতে ভোরে সূর্যোদয়ের কিংবা গোধূলিতে সূর্যাস্তের দৃশ্য এক কথায় অসাধারণ।

মেরিন ড্রাইভের মনোমুগ্ধকর যাত্রাপথ : কক্সবাজার থেকে ইনানী যাওয়ার পথে ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক যেন এক চলন্ত ছবি। রাস্তার দুই পাশে নারকেল ও ঝাউগাছের সারি এবং সমুদ্রের ঢেউয়ের ছন্দময় দৃশ্য যেকোনো ভ্রমণপ্রেমীকে মুগ্ধ করে।

অবসর কাটানোর নানা আয়োজন

ঘোড়ায় চড়া : ইনানী সৈকতে বালুকাময় তীরে ঘোড়ায় চড়ার সুযোগ রয়েছে।

দক্ষ গাইডের তত্ত্বাবধানে নতুন কিংবা অভিজ্ঞ যে কেউ এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।জেট স্কিইং : যারা রোমাঞ্চপ্রেমী, তারা জেট স্কিইং করতে পারবেন। দক্ষ প্রশিক্ষকের সঙ্গে বা একা একাই বঙ্গোপসাগরের বুকে ছুটে চলার অভিজ্ঞতা পর্যটকদের মন কাড়ে।

ছাদখোলা ডাবল ডেকার বাসে ভ্রমণ : অ্যাকোয়াহলিক ট্যুরিস্ট ক্যারাভান নামে পরিচিত এই বাসগুলোর মাধ্যমে মেরিন ড্রাইভ ধরে ইনানী পর্যন্ত যাওয়া যায়। আরামদায়ক এই ভ্রমণে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করা যায় পুরোপুরি।

কেন শীতকালেই ইনানী ভ্রমণ উপযুক্ত?

নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং বাতাস থাকে শীতল ও মনোরম। জেট স্কিইং বা সমুদ্র স্নানের জন্য এই সময়টাই সবচেয়ে উপযুক্ত। এ ছাড়া ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকের ঢল থাকলেও মার্চের শুরুতে তুলনামূলক কম ভিড় থাকে, ফলে খরচও কিছুটা কমানো সম্ভব হয়।

থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা

ইনানীর আশপাশে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। বাজেট ভ্রমণকারীদের জন্য শহরের ভেতরে কম দামে রুম ভাড়া নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সাধারণ রুমের ভাড়া মাথাপিছু ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যারা বিলাসবহুল থাকতে চান, তারা রান্নাঘরসহ ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে পারেন, যা ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

খাবারের ক্ষেত্রে ইনানী বিখ্যাত সামুদ্রিক খাবারের জন্য। নারকেল চিংড়ি এবং গ্রিল্ড পমফ্রেট এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে অন্যতম।

ইনানী ভ্রমণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা

চেকপোস্ট পার হতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা জরুরি। সাগরে সাঁতার কাটার সময় জোয়ার ভাটার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে যত্রতত্র ময়লা না ফেলার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

শেষকথা

ইনানী সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য নিঃসন্দেহে অনন্য। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে এবং জীবনের চাপ থেকে মুক্তি পেতে এই সৈকত হতে পারে এক অসাধারণ ঠিকানা। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত একদিন কাটালেও মনে হবে স্বর্গীয় এক অভিজ্ঞতা। ইনানীর শীতের ভোর বা গোধূলি আপনার জীবনের স্মৃতির অ্যালবামে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com