শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ইতালির স্পন্সর ভিসা ২০২২-এর সব তথ্য

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২

চলতি বছরে ইতালিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন ৬৯ হাজার ৭০০ বিদেশি শ্রমিক, সেই তালিকায় আছেন বাংলাদেশিরাও।

ইউরোপের বাইরের—এমনকি বাংলাদেশ থেকেও— কেউ কাজের জন্য ইতালিতে যেতে চাইলে তাকে ভাবতে হবে দেশটির ‘ডিক্রেটো ফ্লুসি’ বা বিদেশি কর্মী কোটার অধীনে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য তিনি যোগ্য কি না।

এছাড়া যে দেশ থেকে ইতালিতে যেতে চাচ্ছেন, সেখান থেকে কতজন ইউরোপীয় দেশটিতে প্রবেশাধিকার পাবেন; তাও এখানে বিবেচ্য। যারা উদ্যোগ নিচ্ছেন ও পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য সুসংবাদ: ইতালীয় সরকার এ বছর দেশটিতে বিদেশি কর্মীদের সংখ্যা বাড়িয়েছে।

সরকার এই সপ্তাহে সর্বশেষ বার্ষিক ডিক্রেটো ফ্লুসি অনুমোদন করেছে, ইইউ দেশগুলোর বাইরে থেকে কাজ করতে আসা ব্যক্তিদের জন্য জারি করা কাজের অনুমোদনে ২০২২ সালের সংখ্যা ও সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকার ইইউ জোনের বাইরে থেকে ৬৯ হাজার ৭০০ কর্মী এ বছর কাজের উদ্দেশে ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবেন। সংখ্যাটি ২০২১ সালে ছিল কেবল ৩০ হাজার ৮৫০ জন।

যারা আবেদন করতে পারবেন

এ বছর বেশিরভাগ পারমিট (৪২ হাজার) অস্থায়ী মৌসুমী কর্মীদের জন্য। ইতালির শ্রম ও সামাজিক নীতি মন্ত্রণালয় এমন নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে ১৪ হাজার শুধু কৃষি শ্রমিকদের জন্য থাকছে।

‘অ-মৌসুমী চুক্তি (কর্মচারী)’ ও স্ব-নিযুক্ত কর্মীদের জন্য আরও ২৭ হাজার পারমিট দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২০ হাজার সড়ক পরিবহন, নির্মাণ এবং পর্যটন (হোটেল) খাতে নিযুক্ত লোকদের জন্য।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের মতে, ১০০টি কোটা বিশেষত ইতালীয় বংশোদ্ভূত ভেনিজুয়েলা থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য, যাদের অন্তত তাদের পিতামাতার একজনের সরাসরি ইতালীয় বংশের তৃতীয় সম্পর্ক পর্যায় পর্যন্ত রয়েছেন।

ইতালি আরও ১০০ কোটা বিদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য অনুমতি দেবে, যারা তাদের মূল দেশে প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা সম্পন্ন করেছে—অত্যন্ত দক্ষ।

২০২২ সালে আবারও স্ব-নিযুক্ত কর্মীদের জন্য মোট ৫০০টি কোটা সংরক্ষিত রেখেছে সরকার। যেমনটি আগের বছরগুলোতেও রাখা হয়েছিল।

যারা এখানে আবেদন করবেন, তাদের জন্য কঠোর মানদণ্ড রয়েছে। যোগ্য কোটার মধ্যে রয়েছে ইতালীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী উদ্যোক্তারা, যারা পাঁচ লাখ ইউরোর কম নয়, এমন নিজস্ব অর্থ ইতালিতে বিনিয়োগ করবেন এবং যার ফলে অন্তত তিনটি নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে।

অন্যান্য বিভাগগুলোর মধ্যে স্পষ্ট খ্যাতিমান বা উচ্চ এবং সুপরিচিত পেশাদার যোগ্যতার শিল্পীরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

ডিক্রির অধীনে প্রদত্ত অবশিষ্ট সাত হাজার কোটা তাদের জন্য সংরক্ষিত, যারা দেশটিতে একটি আবাসিক পারমিট ইতিমধ্যে বহন করছেন। অন্যান্য কারণে যেমন লেখাপড়া থেকে পারমিটটি কাজের জন্য আবাসিক পারমিটে রূপান্তর করতে সুযোগ দেওয়া হবে।

কীভাবে আবেদন করবেন?

২৭ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে স্ব-নিযুক্ত শ্রমিক, অ-মৌসুমী কর্মীদের নিয়োগকর্তা এবং যারা বিদ্যমান রেসিডেন্সি পারমিট রূপান্তর করবেন, তাদের জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ করা শুরু হবে। মৌসুমী কর্মীরা(কৃষি) ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে আবেদন করতে পারবেন।

মৌসুমী এবং অ-মৌসুমী কর্মসংস্থানের জন্য নিয়োগকর্তাদেরই আবেদন করতে হবে, তবে স্ব-নিযুক্ত এবং পারমিট রূপান্তরের জন্য আবেদনকারীকে নিজে নিজে অবশ্যই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শুধু অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এটি করার জন্য আপনার একটি ইতালীয় এসপিআইডি ইলেকট্রনিক আইডি প্রয়োজন হবে। তাই ইতালিতে বসবাসরতদের বাইরে থেকে কেউ তা করতে পারবেন না।

আবেদনপত্রে আপনি ইতালিতে কোথায় থাকবেন, তার ঠিকানা, বিবরণের পাশাপাশি কাজের চুক্তি জন্য প্রয়োজনীয় নথি, যেমন কর্মসংস্থান চুক্তির একটি অনুলিপি বা যেকোনো প্রাসঙ্গিক লাইসেন্স অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আবেদনপত্র গ্রহণ ১৭ মার্চ  বন্ধ হবে এবং সেগুলো যে ক্রমানুসারে গৃহীত হবে, সেভাবে স্পোর্টেলো ইউনিকো পার আই’ইমিগ্রাজিন(Sportello Unico per l’Immigrazione) অভিবাসন অফিস দ্বারা যাচাইবাছাই ও নির্বাচন প্রক্রিয়া করা সম্পূর্ণ করা হবে।

এর অর্থ হল, কোটা তালিকা প্রকাশের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ বাংলাদেশি কোটা কয়েক মিনিটের মধ্যে পূরণ হয়ে যায়।

কোটা পূরণ হওয়ার পরে আসা যেকোনো আবেদন বা ভুলভাবে সম্পন্ন করা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। আপনি একই বছরে দুবার বা দুই খাতে আবেদন করতে পারবেন না।

পারমিট পেলে আপনার কাজ শুরু করতে হবে। ইউরোপের একজন বাইরের নাগরিক হিসাবে, ইতালিতে বসবাস এবং কাজ করার জন্য আপনার তিনটি প্রধান নথির প্রয়োজন হবে। একটি ওয়ার্ক পারমিট (নুলা ওস্তা), একটি ওয়ার্ক ভিসা এবং একটি আবাসনের অনুমতি (পারমেসো ডি সোজিওরনো)।

যদি আপনার পারমিটের আবেদন সফল হয়, তাহলে আপনার ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এটি অবশ্যই আপনার ইতালিতে যাওয়ার আগে, আপনার জন্মভূমির ইতালীয় দূতাবাস বা কনস্যুলেটে ভিসা আবেদন জমা দেবেন। সেখান থেকে ভিসা নিয়ে আপনি ইতালিতে প্রবেশ করবেন।

তবে ভিসা নিয়ে ইতালিতে পৌঁছানোর আট দিনের মধ্যে পুলিশ অফিসে একটি ইতালীয় বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে হবে। তখন পুলিশ আপনাকে একটি পারমেসো দি সোজর্ন প্রদান করবে। (পারমেসো দি সোজর্ন হল, সেই ডকুমেন্টেশন যা আপনাকে বৈধভাবে ইতালিতে থাকতে সুযোগ করে দেবে)।

খেয়াল রাখতে হবে—পারমিট পত্রটি বা নুলা ওস্তা ছয় মাসের জন্য বৈধ। এর মানে হল যে, আপনাকে অবশ্যই এর মধ্যে ইতালিতে প্রবেশ করতে হবে এবং সেই ছয় মাসের মধ্যে বসবাসের অনুমতির জন্য কস্তুরা বা পুলিশ স্টেশনে আবেদন করতে হবে।

ভিসা এবং রেসিডেন্সি পারমিটের আবেদন সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য, ইতালীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিসা ওয়েবসাইট থেকে সাহায্য নিতে পারেন। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিসা ওয়েবসাইট, অথবা ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাস বা স্থানীয় Questura (পুলিশ অফিস) সাথে যোগাযোগ করে সাহায্য নেওয়া যায়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com