সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন

ইকবাল বাহার

  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
বাংলাদেশের ৪০ লাখ গ্র্যাজুয়েট বেকার তরুণদের উদ্দেশ্যে দুটো কথা
আসুন ২ মিনিট নিজের সাথে একটু কথা বলি…
গত ৪ বছরে পড়াশুনা ছাড়া আর কি কি করেছেন?
সময় পাননি? সময় কিন্তু ছিল নাকি ব্যবহার করতে পারেননি?
এক দিনের হিসাবটা বের করেন তো পড়াশুনার বাইরে বাকী সময়টা কি কি করেছেন? খুব সহজেই প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা সময় বের করা যায়, সেই ৩-৪ ঘণ্টা কি করেছেন গত ৪ বছরে, যা ৫৮৪০ ঘণ্টা (২৪৩ দিন) যারা পার্ট টাইম উদ্যোক্তা হতে চান তাঁরাও এই সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেন চাকরীর পাশাপাশি।ঃ
১। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়েছেন নাকি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড,এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্ট শিখেছেন?
২। অন্যকে নিয়ে সমালোচনা করে সময় নষ্ট করেছেন নাকি ইংরেজিটা কিভাবে আরেকটু ভালো লিখতে ও বলতে পারা যায় তার শিখেছেন?
৩। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেসবুকিং করে অন্যকে লাইক দিয়েছেন নাকি নিজে লাইক পাওয়া যায় এমন কোন ভলান্টিয়ারিং কাজ করেছেন?
৪। প্রেম করার নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলেছেন, ডেটিং করেছেন নাকি রেস্টুরেন্টে, ফাস্টফুডে, বই মেলায়, বাণিজ্য মেলায় বা কোন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম বা অন্য কোথাও পার্টটাইম কাজ করেছেন?
৫। বই মেলায়, বাণিজ্য মেলায় বা রেস্টুরেন্টে ইত্যাদিতে গিয়ে শুধু ঘুরে ঘুরে দেখেছেন বা খেয়েছেন নাকি খন্ডকালীন একটা বিজনেস কিভাবে করতে হয় তা শেখার চেষ্টা করেছেন?
৬। রাজনীতির নামে আপনাকে ব্যাবহার করার সুযোগ দিয়ে নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করেছেন, নাকি সামাজিক কোন কাজ করে একটু অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন।
৭। কোথাও কোন একটা সমস্যা দেখলে “এই দেশে আর কিছু হবে না বা দেশটার সবকিছু নষ্ট হয়ে গেল” এটা ভেবেছেন নাকি ঐ সমস্যাকে কিভাবে সমাধান করে একটা বিজনেস আইডিয়া বের করা যায় তা নিয়ে রিসার্চ করেছেন?
পড়াশুনার পাশাপাশি গত ৪ বছরে আপনি যদি প্রতিদিন ঐ ৩-৪ ঘণ্টা করে, প্রথম ২ বছর স্কিলস ডেভেলাপমেন্ট ও বাকী ২ বছর কোন পার্ট টাইম কাজ বা উদ্যোগের সাথে জড়িত থাকতেন – আপনার বেকার থাকা অসম্ভব এবং প্রশ্নই উঠে না।
৪ বছরের এই অভিজ্ঞতা যদি থাকে, আপনার পড়াশুনা শেষ হওয়া মাত্রই আপনি কোন চাকরী পেয়ে যাবেন অথবা ব্যবসায়ের কোন একটা উদ্যোগ শুরু করে দিতে পারবেন। কেউ আপনাকে বলতে পারবে না, আপনার কাজের কোন অভিজ্ঞতা নেই। আর কাজের মানুষটাকেই সবাই খোঁজে।
তারপরও প্রশ্ন উঠতে পারে, এতো চাকরী কোথায় পাবে। পড়াশুনা করা মানেই বিসিএস বা সরকারী চাকরী নয় বা বেসরকারি চাকরী করা নয়। বিদেশে একটি যুবক যেখানে ২৪ বছর বয়সে কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার বা ডিরেক্টর হয়ে যায়, সেখানে আমরা দাবী করছি চাকরীতে ঢোকার বয়স সীমা ৩৫ করতে। কেন আপনি শুধু চাকরী করবেন, আপনি তো চাকরী সৃষ্টিও করতে পারেন। হাঁ আপনি পারেন, এই বিশ্বাস আপনার মধ্যে তৈরি করতে হবে এবং শুরু করতে হবে।
আমরা শুরুই করছি অনেক দেরিতে। কেন ১৮-২০ বছর বয়স থেকেই কোন পার্টটাইম কাজ বা উদ্যোগের পিছনে ছুটে চলা নয়? সমস্যা হচ্ছে আমরা কাজকে ছোট বড় বা জাত ইত্যাদিতে বিভাজন করে ফেলি। ছোট বড় বলে কিছু নেই, সবই কাজ এবং শুরুটা যে কোন কাজ দিয়ে হতে পারে।
ধরুন শুধু চাকরীর চেষ্টা না করে ছাত্র জীবন থেকে এই ৪০ লাখ জন তরুণ থেকে মাত্র দেড় লাখ (৫%) জন যদি উদ্যোক্তা হতে পারে, গড়ে ১০ জনের (কেউ ৫ জন বা ১০ জন বা ৫০ জন) চাকরীর ব্যবস্থা করতে পারে তবে ৪০ লাখ চাকরী সৃষ্টি করা সম্ভব, অন্তত ২০ লাখ তো সম্ভব। সাথে সরকারকে একটু এগিয়ে আসতে হবে প্রশিক্ষণ এবং বিজনেস ফান্ড নিয়ে।
ধরেন কেউ আপনার জন্য কিছু করবেনা, তাই বলে কি আপনি বসে থাকবেন! আপনি নিজে কিছু করে দেখাতে পারলে, আপনার জন্য এগিয়ে আসার মানুষের অভাব হবে না।
যারা গত ৪ বছরকে এভাবে ব্যাবহার করে নিজেকে তৈরি করতে পারেননি বলে, সব শেষ হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়। আজই শুরু করুন। আর যারা গ্রাজুয়েশান প্রথম বর্ষে আছেন তারা আজই নেমে পড়ুন উপরের ৭টা কাজে।
শুধু পড়াশুনা বা ডিগ্রি দিয়ে এখন আর চাকরী বা উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব নয়, পাশাপাশি দরকার অন্তত ২-৩ টা স্কিলস। তাহলে আপনাকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। কাজ আপনাকে খুঁজবে !
– ইকবাল বাহার

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com