উন্নত কাঠামো ও অর্থনীতির দেশ আয়ারল্যান্ড। উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বজুড়ে চাহিদা রয়েছে আয়ারল্যান্ডের। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের জন্য দেশটি খুবই জনপ্রিয়। বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৩ শতাংশই রয়েছে দেশটিতে। গবেষণায় আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের বেশির ভাগ আয়ারল্যান্ডে পড়তে যান।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয় আইরিশ সরকার। দেশটি ২০২০ সালে শিক্ষায় ১১ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করেছে। প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সব রকম কোর্সে পড়ার সুযোগ দেয়, তবে কিছু বিষয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা বেশি নির্বাচিত হন। শিক্ষার্থীদের চাহিদার শীর্ষে থাকা বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স: ডাবলিনে বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি ও বিনিয়োগ ব্যাংক রয়েছে। আর্থিক নিয়ন্ত্রক, আর্থিক বিশ্লেষক, আর্থিক ব্যবসায়ী, খুচরা ব্যাংকার ইত্যাদির মতো চাকরির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এখানে।
ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স: ইউরোপীয় দেশে এই কোর্সে পড়ার সুযোগ কেউ নিতে চাইলে সেই তালিকার শীর্ষে থাকে আয়ারল্যান্ড। বিশ্বের শীর্ষ ১০ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ৯টির অবস্থান আয়ারল্যান্ডে। তাই এর জনপ্রিয়তা ও চাহিদাও বেশি। ফার্মাকোলজি, টক্সিকোলজি, অ্যানালিটিক্যাল এবং মেডিকেল কেমিস্ট্রি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ইত্যাদি কোর্স করারও সুযোগ থাকবে।
সেরা কয়েকটি কলেজ/ইউনিভার্সিটি
ট্রিনিটি কলেজ (ডাবলিন) ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক, ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি, লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি অব ডাবলিন।
পড়াশোনার খরচ
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং নন-ইইউ শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি স্নাতক পর্যায়ে ৯ হাজার থেকে ৫৫ হাজার ইউরো হতে পারে বছরে। স্নাতকোত্তর মাস্টার্স এবং পিএইচডি লেভেলে এটি বছরে ৯ হাজার থেকে শুরু হয়ে ৩৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত হয়। এ ছাড়া সব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বছরে প্রায় ৩ হাজার ইউরো দিতে হয় স্টুডেন্ট অ্যাক্টিভিটি, পরীক্ষার এন্ট্রি ফি এবং ক্লাব ফি বাবদ। এই ফি একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক রকম।
বৃত্তি: আয়ারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অনেক বৃত্তি প্রোগ্রাম রয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু আইরিশ সরকার, অন্যগুলো বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু বেসরকারি সংস্থা দ্বারা অফার করা হয়।
থাকা-খাওয়ার খরচ
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্রদের আবাসিক হলগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করে, যা সাধারণত ২০০-৩০০ ইউরো খরচে পাওয়া যায়। জায়গার সংখ্যা সীমিত এবং চাহিদা বেশি হওয়ায় জায়গা খুঁজে পাওয়া প্রায়ই কঠিন। কেউ যদি একা বসবাস করে তাহলে মাসে থাকার জন্য ৪০০ থেকে ৯০০ ইউরো খরচ হতে পারে। তবে শেয়ারে থাকলে এই খরচ কম হয়। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে বসবাসকারী শিক্ষার্থীর মাসে ৩০০ থেকে ৬৫০ ইউরো খরচ হয়ে থাকে।
গ্রোসারি কেনাকাটার জন্য প্রায় ২৫০-৩৫০ ইউরো খরচ হয়। এ ছাড়া কেউ চাইলে একটি ছোট রেস্তোরাঁয় প্রায় ১৫ ইউরো দিয়ে খেতে পারে। পরিবহন খাতে প্রায় ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী আয়ারল্যান্ডে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে মাসে ৫০-৫৫ ইউরো খরচ হয়। পরিবহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো সাইকেল, যা ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ব্যবহার করে। ২০ ইউরো দিয়ে একদিনের জন্য শহরে ঘুরতে একটি সাইকেল ভাড়া নেওয়া যায়।
সূত্র: mastersportal.com
আয়তন সত্ত্বেও, আইরিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিশ্বের সেরাদের মধ্যে স্থান পেয়েছে এবং ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের জন্য আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করে। একটি ফ্রি রেট সিস্টেমও পরিচালনা করে, যা মানদণ্ড পূরণকারীদের যদি তারা সরকারীভাবে অর্থায়িত কোর্স অধ্যয়ন করে তবে টিউশন ফি এড়ানোর অনুমতি দেয়।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য, এই সুন্দর দেশে তাদের পড়াশোনার অর্থায়নে সহায়তা করার জন্য বৃত্তি, অনুদান এবং বার্সারির একটি বিশাল নির্বাচন রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভাল আন্তর্জাতিক অবস্থান রয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে দেশটি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য একটি জনপ্রিয় পছন্দ।